Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পাংগাসের আচার ও পাউডার উদ্ভাবন করলেন বাকৃবি গবেষক

বাকৃবি সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৯ এপ্রিল, ২০১৯, ২:০০ পিএম

ইলিসের স্যুপ এবং নুডুলসের পর এবার সকল পুষ্টিগুন ঠিক রেখে পাংগাসের মচমচে আচার ও পাউডার উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) মৎস্য প্রযুক্তিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এ কে এম নওশাদ আলম ও তাঁর গবেষক দল । কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহায়তায় ‘মিঠা পানির মাছের আহরণোত্তর ক্ষতি প্রশমন ও মূল্য সংযোজন’ প্রকল্পের আওতায় গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছে।

অধ্যাপক ড. এ কে এম নওশাদ আলম বলেন, দেশে পাংগাস মাছ সস্তা ও সহজলভ্য হওয়ায় একে গরিবের আমিষ বলা হয়। কিন্তু বাজারে অন্যান্য মাছের উৎপাদন ও যোগান বেড়ে যাওয়ায় পাংগাসের বাজার মূল্য পড়ে গেছে। এমনকি ২০১৪-১৫ অর্থবছরে পাংগাসের উৎপাদন ছিলো ৭.৫ লক্ষ মেট্রিক টন বর্তমানে উৎপাদন কমে অর্ধেকে নেমে এসেছে। খাদ্যসহ অন্যান্য উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় চাষীরা পাংগাস চাষে লোকসান গুনছেন। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য পাংগাস মাছ থেকে পণ্য উৎপাদনের মাধ্যমে মূল্য সংযোজন করা প্রয়োজন। তাই দীর্ঘ দুই বছর গবেষণা করে আমি এবং আমার গবেষক দল পাংগাসের এই মজাদার দুটি পণ্য উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছি।

পাংগাস হতে উদ্ভাবিত মচমচে আচার সম্পর্কে অধ্যাপক নওশাদ বলেন, সাধারণ রান্নার যন্ত্রপাতি ও তৈজসপত্র দিয়ে স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ বজায় রেখে যে কেউ মচমচে পাংগাস আচার তৈরি করা যাবে। আচারটিতে পুষ্টিমান পাওয়া গেছে শতকরা ৩৭ভাগ আমিষ, ২৮ ভাগ ¯েœহ, ১৬ ভাগ মিনারেল ও ১১ ভাগ ফাইবার। আচারটি শুকনো ও মচমচে হওয়ায় দীর্ঘদীন প্রায় এক বছরের অধিক কক্ষ তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা যাবে। এক কেজি পাংগাস থেকে ৩৫০ গ্রাম পাংগাস আচার পাওয়া যায় যা উৎপাদন করতে সর্বমোট ১২০-১৫০ টাকা খরচ পড়ে। ৩৫০ গ্রাম আচার ৪০০-৪৫০ টাকায় বিক্রয় করা সম্ভব।

অপরদিকে পাংগাস হতে উদ্ভাবিত পাউডার সম্পর্কে অধ্যাপক নওশাদ বলেন, পাংগাস একটি চর্বিযুক্ত মাছ। তবে এ চর্বি কক্ষ তাপমাত্রায় নষ্ট হয়ে যায়। এর চর্বি ও আমিষকে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় সংরক্ষন উপযোগী করে পাংগাস পাউডার তৈরি করা হয়েছে। এক কেজি পাংগাস থেকে ২০০-২৫০গ্রাম পাউডার তৈরি করা সম্ভব। পাংগাসের পাউডার দীর্ঘদীন প্রায় এক বছরের অধিক কক্ষ তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা যাবে। পাংগাসের পাউডার দিয়ে আচার, ভর্তা, স্যুপ, নুডল্স, তরকারি খিচুরি ইত্যাদি বানানো যাবে অথবা একে পাউডার দুধ বা নবজাতকের খাবার, বেকারী পণ্য, বিস্কুট চিপস্ বা অন্যান্য যে কোন খাদ্য দ্রব্যে মিশিয়ে পুষ্টিগুন বাড়ানো যায়। মাত্র ১.৫০ টাকা মূল্যের ৩ গ্রাম পাউডার দিয়ে এক জনের খাওয়ার উপযোগি ২৫০ মিলি স্যুপ বা ৮০ গ্রাম ওজনের ১বাটি নুডল্স তৈরি করা সম্ভব। পাংগাসের পাউডারে ৪৫ ভাগ আমিষ, ৩২ভাগ চর্বি, ১ভাগ মিনারেল ও ৯ভাগ ফাইবার পাওয়া গেছে।

দ্রুতই পাংগাসের পণ্য দুটি বাজারে পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন প্রধান গবেষক অধ্যাপক ড. এ কে এম নওশাদ আলম।

 

 

 

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গবেষণা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ