Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

মিয়ানমারের সঙ্গে সংঘাতে যাব না : প্রধানমন্ত্রী

ফুটবলে মেয়েরা বেশি সম্মান এনেছে

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্কের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মিয়ানমার আমাদের প্রতিবেশী। রোহিঙ্গা ইস্যুতে আমরা কখনও তাদের সঙ্গে সংঘাতে যাব না। আমরা কারো সঙ্গে যুদ্ধ করবো না, যুদ্ধ করতে চাই না। সবার সঙ্গে একটা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ চাই। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা শান্তি চাই, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ চাই কিন্তু কেউ যদি আমাদের বিরুদ্ধে আক্রমণ করে তার যথাযথ জবাব যেন আমরা দিতে পারি এবং দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব যেন রক্ষা করতে পারি সে প্রস্তুতিটা সবসময় আমাদের থাকতে হবে।
তিনি বলেন, যুদ্ধের জন্য নয়, শান্তির জন্যও আমাদের প্রস্তুতি দরকার। আর সেখানেও অবশ্যই আমরা একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে প্রতিটি ক্ষেত্রে বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে যাতে চলতে পারি সে ব্যবস্থাটাও আমাদের থাকা উচিত।
গতকাল সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে এসে উপস্থিত কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে এসব কথা বলেন। একই সঙ্গে তিনি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়েরও দায়িত্বে রয়েছেন। গত ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে বিপুল সংখ্যা গরিষ্ঠ্যতা অর্জনের পর চতুর্থবারের মত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বভার গ্রহণ করে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় পরিদর্শনের অংশ হিসেবে এদিন প্রথম বারের মত প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে আসেন তিনি।
রোহিঙ্গাদের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়।’ এই নীতিতেই সরকার বিশ্বাসী এবং সেই নীতিতেই সরকার পরিচালিত হচ্ছে। আমি এটাই বলবো মিয়ানমার যেহেতু মিয়ানমার আমাদের প্রতিবেশী। আমরা কখনও তাদের সঙ্গে সংঘাতে যাব না। বরং আলোচনার মাধ্যমে তাদের নাগরিকদের (রোহিঙ্গা) যেন তারা ফিরিয়ে নিয়ে যায় সেই প্রচেষ্টাই আমাদের অব্যাহত থাকতে হবে এবং সেভাবে সকলে দায়িত্ব পালন করবেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আলোচনা করেছি, চুক্তি সম্পাদন করেছি এবং মিয়ানমারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফরত পাঠানোটাই আমাদের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য নিয়ে আমরা এখনও কাজ করে যাচ্ছি। মিয়ানমারের সাথে আমরা ঝগড়া বাঁধাতে যাইনি। বরং তাদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে তাদের নাগরিকদের তারা যেন ফিরিয়ে নিয়ে যায় সেই প্রচেষ্টাই আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে। সে বিষয়ে সবাই যেন সেভাবেই দায়িত্ব পালন করেন, সেজন্যও আমি অনুরোধ করবো।
প্রাকৃতিক বা মনুষ্য সৃষ্ট দুর্যোগ, যাই হোক না কেন তাকে মোকাবেলা করার ক্ষমতা বাংলাদেশ রাখে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়াটাও আজকে বিশ্বের অনেকের কাছেই বিস্ময়। শেখ হাসিনা বলেন, আমরা কারো সাথে যুদ্ধ করবো না, আমরা যুদ্ধ করতে চাইনা, সবার সঙ্গে একটা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ চাই।
সেনাবাহিনীর ভারপ্রাপ্ত প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. শামসুল হক, নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল আওরঙ্গজেব চৌধুরী, বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ এসময় উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে এসে স্মৃতিচারণ করে বলেন, এই জায়গাটা আমাদের অনেক স্মৃতি বিজড়িত জায়গা। জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতি হিসেবে এখানেই অফিস করেছেন। তখন এটাই ছিল তার অফিস। আর আমরা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হিসেবে যেটা ব্যবহার করছি সেটা ছিল পার্লামেন্ট হাউজ। পরে প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতার স্মৃতি রক্ষার্থে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে স্থাপিত বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি কিছুটা আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি সেখনে রক্ষিত পরিদর্শন বইয়েও স্বাক্ষর করেন।
এদিকে গতকাল বিকালে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ও বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ ফুটবল প্রতিযোগিতার ফাইনাল গ্যালারিতে বসে দেখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকেই পুরস্কার নিয়েছে চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দল। তার আগে বাংলাদেশের ফুটবলের উন্নয়ন ও এগিয়ে চলার অনেক দিক তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তিনি বলেন, ফুটবলে ছেলেদের চাইতে মেয়েরা দেশের জন্য বেশি আন্তর্জাতিক সম্মান বয়ে এনছে।
খেলাধুলার প্রতি, বিশেষ করে ফুটবলের প্রতি নিজের ভালোবাসা শেখ হাসিনা প্রকাশ করে বলেন, ফুটবল আমাদের দেশে অত্যন্ত জনপ্রিয় খেলা। মাঠে-ঘাটে, একেবারে গ্রাম পর্যায়ে খেলা চলে। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়েও ফুটবল দল গঠিত হয়। আর বিশেষ করে আমি এমন একটি পরিবার থেকে এসেছি, আমার দাদা ফুটবল প্লেয়ার ছিলেন, আবার বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব, তিনিও ফুটবল খেলতেন। আমার ভাই শেখ কামাল, শেখ জামাল সবাই ফুটবল খেলতো।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, এখন আমার নাতি-নাতনিরাও ফুটবল খেলে। জয়ের মেয়ে ফুটবল খেলে, পুতুলের ছেলেমেয়েরা ফুটবল খেলে, এমনকি রেহানার ছেলে ববি, তার ছেলেমেয়েও ফুটবল খেলে। মোটামুটি আমাদের পরিবারের সবাই ফুটবল খেলার সঙ্গে জড়িত। কাজেই এই খেলাটির প্রতি আমাদের আলাদা আন্তরিকতা আছে।
বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের ফাইনালে নীলফামারী সদরের দক্ষিণ কানিয়ালখাতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে সিলেটের জৈন্তাপুরের হরিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। আর বঙ্গমাতা গোল্ডকাপের ফাইনালে লালমনিরহাটের পাটগ্রামের টেপুরগাড়ী বি কে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে হারিয়ে শিরোপা জিতেছে ময়মনসিংহের নান্দাইলের পাঁচরুখী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এ সময় রানার্সআপ হওয়া দলগুলোর খেলোয়াররা কান্না করলে তাদের চোখের পানি মুছে দেন প্রধানমন্ত্রী।
দেশের এগিয়ে যাওয়ার পথে খেলাধুলার ভূমিকা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী পরের কথায়, আমরা চাই আমাদের ছেলেমেয়েরা ফুটবল, সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা এবং সকল ক্ষেত্রে অংশ নেবে, যাতে শরীর-স্বাস্থ্য ভালো থাকবে, মন ভালো থাকবে, তারা ডিসিপ্লিন শিখবে এবং আগামীতে বাংলাদেশকে তারা নেতৃত্ব দেবে, সেটাই আমি চাই। সেজন্যই আমরা এ ধরনের প্রতিযোগিতা আয়োজন করি। কাজেই আজকে যারা খেলাধুলায় অত্যন্ত পারদর্শিতা দেখাচ্ছে, আগামী দিনে আন্তর্জাতিকভাবে আরও সম্মান তারা আমাদের দেশের জন্য বয়ে আনবে, সেটাই আমরা আশা করি।####

 



 

Show all comments
  • ash ৫ এপ্রিল, ২০১৯, ১:২৪ এএম says : 0
    TAR MANE KI? KEW AMADER LATTI MARLEO, AMRA SHUDHU KEW KEW KORBO? PA DHORE SHORIE DIBO ?? TAHOLE R AMADER ARMY RAKHAR DORKAR KI?? GHONO GHONO CANTONMENT BANANOR DORKAR KI?? ATO SUBMARINE, PLANE , TANK KINE POYSHA KHOROCHER DORKAR KI?? E SHOB KI SHUDHU DESHER MANUSH KE PITANOR JONNY E RAKHA HOCHE ??? BARNO HOCHE??
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফুটবল

২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ