Inqilab Logo

বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

এবার বর্ণবাদের শিকার কিন

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৪ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

আরও এক ম্যাচ জিতে টানা অষ্টম সেরি আ শিরোপার দিকে এগিয়ে গেছে জুভেন্টাস। কিন্তু কাইয়ারির বিপক্ষে পরশু জুভদের ২-০ গোলের জয়ের আনন্দ স্ল্যান হয়েছে বর্ণবাদী আচরণের কালিমায়। প্রতিপক্ষ দর্শকদের কাছ থেকে এমন ঘৃণিত আচরণের শিকার হয়েছেন জুভেন্টাসের তরুণ ইতালিয়ান ফরোয়ার্ড মইজে কিন।

১৯ বছর বয়সী কিন দলের দ্বিতীয় গোলের পর দুই বাহু প্রসারিত করে দর্শকদের বর্ণবাদী আচরণের জবাব দেন। ম্যাচ শেষে নিজের ইনস্টাগ্রাম পোস্টে কিন লেখেন, ‘বর্ণবাদী আচরণের জবাব দেওয়ার এটাই সর্বোত্তম উপায়।’ তবে তার এমন আচরণ মেনে নিতে পারেননি জুভেন্টাস কোচ মাসিমিলিয়ানো অ্যালেগ্রি ও ডিফেণ্ডার লিওনার্দো বোনুচ্চি। অ্যালেগ্রি বলেন, ‘ঐ ঘটনায় তার (কিনের) এভাবে উদযাপন করা ঠিক হয়নি।’ তিনি বলেন, ‘সে এখনো তরুণ এবং তাকে অনে কিছু শিখতে হবে, কিন্তু একইভাবে দর্কদেরও এমন কিছু বলা ঠিক হয়নি।’

প্রথমার্ধে ম্যাচের প্রথম গোল করা ইতালি জাতীয় দলের খেলোয়াড় বোনুচ্চি বলেন, ‘তোমার উচিত গোল উদযাপন সতীর্থদের সঙ্গে করা। সে এটা ভিন্নভাবেও করতে পারত।’ তার মতে, ‘দোষটা দুই পক্ষেরই, ৫০-৫০। মইজের এমনটা করা ঠিক হয়নি, এবং কার্ভাদেরও (কাইয়য়ারি সমর্থক) এভাবে প্রতিক্রিয়া দেখানো উচিত হয়নি।’ ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে অ্যালেগ্রি বলেন, ‘এটা যারা করেছে তাদের খুঁজে বের করতে আমাদের ক্যামেরা ব্যবহার করা দরকার। তাদের খুঁজে বের করা খুবই সহজ এবং এক বা দুই বছর নয়, তাদের আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করা উচিত।’

ম্যাচের ২০ মিনিটে হলুদ কার্ড দেখেন কিন। তখন থেকেই তাকে নিয়ে বাজে স্লোগান দিতে থাকে স্বাগতিক সমর্থকরা। ম্যাচের ৮৫তম মিনিটে দলের দ্বিতীয় গোলটি করে জালের পাশে গিয়ে উদযাপন করেন কিন। এসময় তাকে উদ্দেশ্য করে কলা, পানির বোতল ও বিয়ার ক্যান ছুড়েও মারেন সমর্থকরা। কাগলিয়ারি অধিনায়ক নিজ সমর্থকদের শান্ত করতে এগিয়ে আসেন। এসময় খেলা প্রায় তিন মিনিট বন্ধ ছিল।

এই ঘটনায় কাগলিয়ারি প্রেসিডেন্ট টমাসো গিলিন দায়ী করেছেন কিনের উদযাপনকে, ‘আমি অধিকাংশ দুয়ো শুনেছি। যদি তারা প্রাণীর মত শব্দ করা শুরু করে থাকে তাহলে আমরা ভুল শুনেছি।’ তিনি বলেন, ‘শেষ দিকে যা হয়েছে তা বাজে উদযাপনের কারণে এবং এটা অন্য যে কোন খেলোয়াড়দের ক্ষেত্রেও ঘটতে পারে।’

মাঠে বর্ণবাদী আচরণ ইদানিং প্রকট আকার ধারণ করেছে। গত মাসে মন্টেনেগ্রোর বিপক্ষে ইংল্যান্ডের ৫-১ গোলে জয়ের ম্যাচে বর্ণবাদী আচরণের শিকার হন রাহিম স্টার্লিং। স্টার্লিং তার হাত কানের কাছে নিয়ে দর্শকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এর প্রতিবাদ করেন। স্টার্লিংকে সমর্থন করেন কোচ ও তার সতীর্থরা। গত ডিসেম্বরে প্রিমিয়ার লিগ ম্যাচে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে স্বাগতিক চেলসির বিপক্ষে একই আচরণের শিকার হন ম্যানচেস্টার সিটি ফরোয়ার্ড স্টার্লিং।

সম্প্রতি উয়েফা প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার সেফারিন এর বিপক্ষে শক্ত অবস্থানের কথা জানান। তিনি বলেন, এমন ঘটনা ঘটলে রেফারির উচিত ম্যাচ বন্ধ করে দেওয়া, ‘এমন সময় ম্যাচ বন্ধ করে দেওয়া অথবা খেলা থামিয়ে দেওয়া উচিত। আমি মনে করি ৯০ শতাংশ সাধারণ মানুষ স্টেডিয়ামে থাকা সেই সব গর্ধবদের পাছায় লাথি মারার পক্ষে।’ তিনি বলেন, ‘এটা ২০১৯ সাল, একশ বছর আগের কোনো সময় নয়।’
লিগ শিরেপার দৌড়ে দ্বিতীয় স্থানে থাকা নাপোলির চেয়ে ১৮ পেয়ন্টে এগিয়ে জুভেন্টাস। বাকি ৮ ম্যাচ থেকে ১০ পয়েন্ট অর্জন করতে পারলেই শিরোপা নিশ্চিত হবে ‘ওল্ড লেডি’ খ্যাত দলটির।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কিন

১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ