পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বকেয়া মজুরি পরিশোধ এবং মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ ৯ দফা দাবিতে বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিকদের ডাকে প্রধান প্রধান পাটকল অধ্যুষিত এলাকায় সড়ক রেলপথ অবরোধ অব্যাহত রয়েছে। এসময় শ্রমিকরা সড়ক পথে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন ও সমাবেশ করেছেন। আবার কোথাও সড়কের উপর যানবাহন আড়াআড়িভাবে রেখে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে। এদিকে সড়ক অবরোধ থাকায় মহাসড়কের যাত্রীরা পড়েছেন চরম দুর্ভোগে। আমাদের ব্যুরোদের পাঠানো তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন :
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, চট্টগ্রাম মহানগরী ও জেলায় গতকাল দ্বিতীয় দিনের মতো সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন পাটকলের শ্রমিক-কর্মচারীরা। এতে বিভিন্ন সড়কে যানবাহন ও রেল চলাচল ব্যাহত হয়। সড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে শ্রমিকেরা।
অবরোধের কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়রেক সীতাকুÐে বেশ কিছু সময় যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। নগরী থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গামী শাটল ট্রেনও আটকা পড়ে আমিন জুট মিল এলাকায়। পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকালে সড়কে নামেন পাটকল শ্রমিকেরা। মহানগরী ও জেলার রাষ্ট্রায়ত্ত ১০টি পাটকলের সামনে বিক্ষোভ হয় বলে জানান শ্রমিক নেতারা।
নগরীর আমিন জুট মিলের শ্রমিকরা রেল লাইনের ওপর অবস্থান নেন। এ সময় শাটল ট্রেন আটকা পড়ে। আধা ঘন্টা পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে ট্রেনটি ছেড়ে যায়। একদল শ্রমিক মিলের সামনে সড়কের উপর যানবাহন আড়াআড়িভাবে রেখে বিক্ষোভ করেন। সড়কের ওপর টায়ারেও আগুন দেওয়া হয়। বিক্ষোভের কারণে আমিন জুট মিলের সামনের সড়ক দিয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আমিন জুট মিলস ছাড়াও বাংলাদেশ জুট মিল করপোরেশনের (বিজেএমসি) অধীন ১০টি পাটকলের মধ্যে ওল্ড ফিল্ডস, গুল আহমেদ জুট মিলস, হাফিজ জুট মিলস, এমএম জুট মিলস, আর আর জুট মিলস, বাগদাদ-ঢাকা কার্পেট কারখানা, কর্ণফুলী জুট মিলস, ফোরাত কর্ণফুলী কার্পেট, গালফ্রা হাবিব ও মিলস ফার্নিসিং লিমিটেডের শ্রমিকেরা অবরোধ কর্মসূচি পালন করে।
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ বকেয়া বেতন-ভাতার আদায়ের দাবিতে আজও ধর্মঘট পালন করছে রাজশাহী জুট মিলের শ্রমিকরা। গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে তারা ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের ওপরে অবস্থান নিয়ে ও শুয়ে পুলিশি বেষ্টনীর মধ্যে লাল পতাকা ও লাঠি হাতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে। ফলে ঢাকা রাজশাহী মহাসড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
কাটাখালি জুট মিলস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জিল্লুর জানান, ধর্মঘট কর্মসূচির অংশ হিসেবে দুপুর পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে চলবে। এর মধ্যে দাবি আদায় না হলে ৭ তারিখের পর নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দেয়া হবে।
খুলনা ব্যুরো জানায়, নয় দফা দাবিতে ৭২ ঘণ্টার ধর্মঘট ও প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে রাজপথ-রেলপথ অবরোধের কর্মসূচি পালন করেন খুলনার রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের শ্রমিকেরা। গত মঙ্গলবার ভোর ৬টা থেকে খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত ৯টি পাটকলে শুরু হওয়া টানা ৭২ ঘণ্টার শ্রমিক ধর্মঘট পালন করে। সেই সঙ্গে গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত খুলনা-যশোর মহাসড়ক এবং রেলপথ অবরোধ করে রাখে পাটকল শ্রমিকেরা।
নতুন রাস্তা মোড়ে অবস্থান নিয়ে খুলনা-যশোর মহাসড়ক, নতুন রাস্তা মোড় থেকে সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড সড়ক, বিআইডিসি সড়ক এবং রেলপথ অবরোধ করে রেখেছেন তারা। এছাড়া শ্রমিকেরা বিক্ষোভ মিছিল, টায়ারে আগুন জ্বেলে বিক্ষোভ প্রদর্শন ও সমাবেশ করছেন। এদিকে সড়ক অবরোধ থাকায় মহাসড়কের যাত্রীরা পড়েছেন চরম দুর্ভোগে।
বকেয়া মজুরি পরিশোধ এবং মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ ৯ দফা দাবিতে বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিক লীগের ডাকে খুলনার ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, খালিশপুর, দৌলতপুর, স্টার, ইস্টার্ন, আলিম এবং যশোরের জেজেআই ও কার্পেটিং জুট মিলের শ্রমিকেরা এ আন্দোলন কর্মসূচি পালন করছেন। তারা জানান, গত মঙ্গলবার রাতে খুলনা অঞ্চলের সকল পাটকল শ্রমিক নেতাদের বৈঠকে কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
আন্দোলনরত শ্রমিক নেতারা বলেন, সরকার ঘোষিত জাতীয় মজুরি ও উৎপাদনশীলতা কমিশন-২০১৫ সুপারিশ বাস্তবায়ন, অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক কর্মচারীদের পি এফ গ্র্যাচুইটি ও মৃত শ্রমিকের বীমার বকেয়া প্রদান, টার্মিনেশন, বরখাস্ত শ্রমিকদের কাজে পুনঃবহাল, শ্রমিক-কর্মচারীদের নিয়োগ ও স্থায়ী করা, পাট মৌসুমে পাটক্রয়ের অর্থ বরাদ্দ, উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে মিলগুলোকে পর্যায়ক্রমে বিএমআরই করাসহ নয় দফা বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছিলো। কিন্তু আমাদের দাবিগুলো এখনও বাস্তবায়ন না হওয়ায় আমরা রাজপথে আবার নামতে বাধ্য হয়েছি।
পাটকল শ্রমিক নেতা সোহরাব হোসেন জানান, শ্রমিকরা ৭ থেকে ৯ সপ্তাহের মজুরি না পাওয়ায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তারা তাদের সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ, ঘর ভাড়া দিতে পারছেন না। এ অবস্থায় বাধ্য হয়েই তারা আন্দোলনে নেমেছেন।
পাটকল শ্রমিকদের ধর্মঘটে বাম জোটের সমর্থন
রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকল শ্রমিকদের ৭২ ঘণ্টা ধর্মঘটের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন বাম গণতান্ত্রিক জোট। জোট অবিলম্বে ঘোষিত মজুরি কমিশন প্রদান, বকেয়া বেতন পরিশোধ, পাটখাতে বরাদ্দ বৃদ্ধিসহ ৯ দফা দাবি মেনে নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানায়। গতকাল এক বিবৃতিতে এই দাবি জানানো হয়।
বাম নেতারা বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকলে মাথাভারী আমলা-প্রশাসন পোষা, সময় মতো অর্থ ছাড় না করে অসময়ে পাট কেনা, পুরানো যন্ত্রপাতি নবায়ন ও আধুনিকায়ন না করাসহ নানা দুর্নীতি অনিয়মই যে লোকসানের কারণ তা বিভিন্ন সময়ে আলোচনায় আসলেও এ সমস্যা নিরসনে সরকারের কোন উদ্যোগ নেই। নেতৃবৃন্দ এসব সমস্যা দূর করে লোকসান বন্ধ ও শ্রমিকদের মজুরিসহ ন্যায়সঙ্গত দাবি মেনে নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।
বিবৃতিতে সই করেন বাম গণতান্ত্রিক জোট এর কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সমন্বয়ক ও বাসদ নেতা বজলুর রশীদ ফিরোজ, কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সদস্য কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, খালেকুজ্জামান, শাহ আলম, মুবিনুল হায়দার চৌধুরী, শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তী, সাইফুল হক, আকবর খান, জোনায়েদ সাকি, ফিরোজ আহম্মেদ, মোশাররফ হোসেন নান্নু, অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, মোশরেফা মিশু, হামিদুল হক প্রমূখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।