Inqilab Logo

বুধবার ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১, ০৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অগ্নিঝুঁকিতে কুমিল্লার বেশিরভাগ ভবন

সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে | প্রকাশের সময় : ২ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

অগ্নি ঝুঁকিতে কুমিল্লা মহানগর ও সংলগ্ন এলাকার অন্তত আশি ভাগ ভবন। এরমধ্যে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে আবাসিক ও বাণিজ্যিক পর্যায়ের সাত তলা থেকে শুরু করে সুউচ্চ ভবনগুলো। তবে ৬/৭ তলার আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনের বেশির ভাগেই নেই আগুন নির্বাপনের কোন সুবিধা।
বাণিজ্যিক ভবনের মধ্যে কয়েকটিতে আগুন নেভানো বা প্রতিরোধের ব্যবস্থা থাকলেও বাকিগুলো অগ্নি ঝুঁকি নিয়েই দাঁড়িয়ে রয়েছে। কেবল এসব ভবনেরই নয়, আগুন নির্বাপণের পর্যাপ্ত সরঞ্জাম নেই ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কুমিল্লা কার্যালয়ের।
কুমিল্লা নগরীসহ শহরতলি এলাকায় নীতিমালা লঙ্ঘন করে দেদারসে নির্মিত হচ্ছে শত শত বহুতল ভবন। বিল্ডিং কোড ও সরকারি বিধি-নিষেধ উপেক্ষা করেই উপরের দিকে উঠছে আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন। ছয় তলার উপরের ভবন মূলত হাইরাইজ বা সুউচ্চ ভবন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকে। নগরীতে এমন সুউচ্চ ভবন রয়েছে তিন শতাধিক। অধিকাংশ ভবনে নেই অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা। আবার নগরীর বিভিন্ন এলাকায় এমনসব বহুতল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে যেখানে ভবনের পাশে নেই পর্যাপ্ত রাস্তা। ফলে আগুন লাগলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি প্রবেশ করা কঠিন হয়ে পড়ে। এ ছাড়া আগুন লাগলে জরুরি অবস্থায় বের হওয়ার সিঁড়িও নেই ভবনগুলোতে।
রাজধানী ঢাকায় পর পর কয়েকটি অগ্নিকান্ডের ঘটনার পর কুমিল্লা নগরী ও সংলগ্ন এলাকায় বহুতল আবাসিক ভবন ও বাণিজ্যিক ভবনে অগ্নিনির্বাপণের সুষ্ঠু ব্যবস্থা আছে কিনা এনিয়ে আলোচনা চলছে বিভিন্ন মহলে। নগরীর হাউজিং এষ্ট্রেট, চকবাজার, ডিগাম্বরীতলা, কাপড়িয়াপট্টি, গোয়ালপট্টি, রাজগঞ্জ, বজ্রপুর, নানুয়াদিঘীর পাড়, দারোগাবাড়ী এলাকা, মনোহরপুর, চর্থা, টমছমব্রীজ, শাকতলা, ইপিজিড এলাকা, পদুয়ার বাজার, পুলিশ লাইন, ঝাউতলা, তালপুকুরপাড়, বাদুরতলা, নজরুল এভিনিউ এলাকা, রেইসকোর্স, কাপতান বাজার, গাংচর, মোগলটুলি, শুভপুর, চানপুরসহ নগরীর অধিকাংশ এলাকায় ৬/৭ তলা বিশিষ্ট আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনগুলোতে নেই অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা। অথচ এসব ভবনে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা চালু না করে সহজেই মিলছে ফায়ার সার্ভিস, পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে ছাড়পত্র।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, নকশাবহির্ভূত ভবন নির্মাণ, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা না রাখাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে কুসিক কর্তৃপক্ষ বেশকিছু ভবনকে লাল তালিকাভুক্ত করেছে। ভবনের প্ল্যান অনুমোদনের সময় আগুন নির্বাপণের বিষয়টি গুরুত্ব দেয়ার পরও যাতে কেই ফাঁক ফোকর দিয়ে ভবন তৈরি করতে না পারে সে বিষয়ে নজরদারি বাড়ানোর ব্যাপারে মেয়র মনিরুল হক সাক্কু নগর ভবনের সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশনা দিয়েছেন।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কুমিল্লা কার্যালয়ের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, আগুনের ঘটনা নিয়ন্ত্রণে তারা মান্ধাতা আমলের সরঞ্জামের ওপর নির্ভরশীল রয়েছেন। ছয় তলার উপরের ভবনের আগুন নেভানোর মতো পর্যাপ্ত ও আধুনিক সরঞ্জাম কুমিল্লা ফায়ার সার্ভিস অফিসে নেই। এছাড়া রয়েছে জনবল সঙ্কট। তবে ওই কর্মকর্তা বলেন, কুমিল্লা নগরী ও আশপাশের এলাকায় প্রতিনিয়ত বড় বড় আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন গড়ে উঠছে। এসবের মধ্যে বিশেষ করে ৬/৭ তলার যেসব আবাসিক ভবন রয়েছে বেশিরভাগেই অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা নেই।



 

Show all comments
  • Soumen Majumdar ২ এপ্রিল, ২০১৯, ৫:০১ পিএম says : 0
    অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা না থেকেও কিভাবে ফায়ার সার্ভিসের সার্টিফিকেট পায়।মনে হচ্ছে গোড়ায় গন্ডগোল।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কুমিল্লা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ