Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৭ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

শিবগঞ্জে পরাজিত প্রার্থীর ওপর হামলার অভিযোগ

রাজশাহী ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ৩১ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদ ২৪ মার্চ অনুষ্ঠিত নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী সৈয়দ নজরুল ইসলাম। এরপর থেকেই বিভিন্নস্থানে দলটির পরাজিত বিদ্রোহী প্রার্থী হাজী মো. মহসীন মিয়ার কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা হচ্ছে। উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস-চেয়ারম্যান মহসীনের অভিযোগ, বিএনপির নেতাকর্মীদের দিয়ে নির্বাচন পরবর্তী এই সহিংসতা করাচ্ছে পুলিশ।
গতকাল শনিবার দুপুরে রাজশাহী সিটি প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ অভিযোগ করেন। মহসীন মিয়া বলেন, সৈয়দ নজরুল ইসলামের ভাই সৈয়দ নুরুল ইসলাম কুমিল্লার পুলিশ সুপার (এসপি)। আর চাঁপাইনবাবগঞ্জের এসপি টিএম মোজাহিদুল ইসলাম তার ব্যাচমেট। তাই দূর থেকে তিনিই পুলিশকে তার ভাইয়ের পক্ষে ব্যবহার করছেন। আর শিবগঞ্জ থানা পুলিশ ব্যবহার করছে বিএনপিকে। অবশ্য পুলিশ এবং বিএনপি মহসীন মিয়ার এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। সংবাদ সম্মেলনে মহসীন মিয়া বলেন, নির্বাচনের শুরু থেকেই পুলিশ নৌকার প্রার্থীর পক্ষ নেয়। এ নিয়ে তিনি নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন চাঁপাইনবাবগঞ্জের এসপিকে নির্বাচনকালীন দায়িত্ব থেকে সরিয়ে অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শককে দায়িত্ব দেয়া হয়। কিন্তু তারপরেও ভোটে কারচুপি হয়েছে। ভোটের দিন দুপুরের পর কেন্দ্রে কেন্দ্রে পুলিশের সহায়তায় নৌকা সমর্থকরা ভোট ডাকাতি করেছে। এখন তার ‘আনারস’ প্রতীকের সমর্থকদের ওপর হামলা করা হচ্ছে। বিনা মামলায় তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। পরাজিত এই স্বতন্ত্র প্রার্থী বলেন, শিবগঞ্জের ৭-৮টি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা। তাদের বিরুদ্ধে ২০-৩০টি করে নাশকতার মামলা চলমান। এদের ভোট নিয়ে কোনো আগ্রহ ছিল না। কিন্তু ভোটের আগে শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শিকদার মশিউর রহমান তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে তিনি তাদের নৌকার পক্ষে কাজ করার নির্দেশ দেন। তা না হলে গ্রেফতারের হুমকি দেন। এর ফলে তারাও নৌকার পক্ষে কাজ করেন। এখন ভোটের পরে বিভিন্নস্থানে তার কর্মী-সমর্থকদের পিটিয়ে আহত করা হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে দেখা যাচ্ছে, হামলাকারীরা বিএনপির লোকজন। নৌকা প্রার্থীর কথামতো পুলিশের দেয়া নির্দেশনায় তারা হামলায় জড়াচ্ছে। জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপি সভাপতি ও নয়নাভাঙা ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফ আলী বলেন, ওসি কল দিয়েছেন দেখলেই তো ভয় পাই। গাছতলায়-আমতলায় লুকিয়ে থাকি। কত বছর যে থানা দেখিনি তারও কোনো হিসাব নেই। আমরা ভোট বর্জন করেছি, আমরা কেন হামলা করতে যাব? বিএনপির লোকজন হামলা করছে এমন অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন। অপপ্রচার। তবে হামলা-মামলার কারণে নিজের সমর্থকরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন দাবি করে সংবাদ সম্মেলনে জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি মহসীন মিয়া বলেন, গত ২৬ মার্চ রশিকনগর গ্রামে পাঁচু নামে তার এক কর্মীর বাম হাত ও ডান পা ভেঙে দেয়া হয়েছে। তিনি এখন হাসপাতালে ভর্তি। এ ঘটনায় তার স্ত্রী থানায় মামলা করতে গেলেও পুলিশ মামলা নেয়নি। আগের দিন একই গ্রামের রুবেল হোসেন নামে আরেক ব্যক্তিকে পিটিয়ে আহত করা হয়। এ ঘটনাতেও মামলা নেয়া হয়নি। এছাড়া শুক্রবার দিবাগত রাতে বোগলাবাড়ি গ্রাম থেকে আবদুর রহিম, কাওসার হোসেন ও ফারুক হোসেন নামে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বিনা কারণে। কুমিল্লার এসপির ইঙ্গিতে এসব হচ্ছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিবগঞ্জের ওসি শিকদার মশিউর রহমান বলেন, শিবগঞ্জে ভোটের পরে কোনো সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি। নির্বাচনে পরাজিত হয়ে মহসীন মিয়া মিথ্যা অভিযোগ করছেন। ভোটের আগে বিএনপির ইউপি চেয়ারম্যানদের সঙ্গে বৈঠক করার অভিযোগও অস্বীকার করেন তিনি। তিনজনকে গ্রেফতারের বিষয়ে ওসি বলেন, তারা নৌকা প্রার্থীর এক সমর্থককে পিটিয়ে মাথা ফাটিয়েছিলেন। সেই মামলায় তারা এজাহারভুক্ত আসামি। তাই গ্রেফতার হয়েছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের এসপি টিএম মোজাহিদুল ইসলাম বলেছেন, কুমিল্লা থেকে শিবগঞ্জে প্রভাব বিস্তারের কোনো সুযোগ নেই। কোনো ঘটনা ঘটে থাকলে সে বিষয়ে মামলা নেয়া হবে। মামলা নেয়া হচ্ছে না এমন অভিযোগ তার কাছে করা হলে তিনি বিষয়টি দেখবেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হামলার অভিযোগ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ