পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভারতের কংগ্রেস দলের নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বলেছেন, বিজেপি সরকার একটি কৃষক ও জনবিরোধী বিরোধী সরকার। নরেন্দ্র মোদি সরকারের আমলে কৃষকরা ঋণে ডুবে যাচ্ছে। তার সরকারের কর্মসূচিতে দরিদ্রদের উন্নয়নের কোনো কর্মসূচি নেই। এ সরকার ধনীদের আরো ধনী করছে। তিনি আরো বলেন, গত পাঁচ বছরে প্রধানমন্ত্রী বিশ^ ঘুরেছেন। কিন্তু নিজ নির্বাচনী কেন্দ্রে একবারও আসার সময় হয়নি তার।
উত্তর প্রদেশে তিনদিনের সফরের শেষদিনে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী গতকাল শুক্রবার ফয়েজাবাদে এক বিশাল জনসভায় বক্তৃতাকালে এ কথা বলেন। বারাণসী কেন্দ্র নিয়ে মোদিকে এক হাত নিয়েছেন কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশের বারাণসী এবং গুজরাতের বডোদরা— এই দু’টি কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। দু’টিতেই জয়ের পর বডোদরা কেন্দ্র থেকে ইস্তফা দেন। ফলে গত পাঁচ বছর প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি বারাণসী কেন্দ্রের সংসদ সদস্যও ছিলেন মোদি। কিন্তু নিজের সংসদীয় কেন্দ্রের মানুষের জন্য কী করছেন মোদি। ফয়েজাবাদে নির্বাচনী জনসভা থেকে এই প্রশ্ন তুলেই সংসদ সদস্য মোদিকে অস্বস্তিতে ফেলে দিলেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী।
প্রিয়াঙ্কা বলেন, বারাণসীর লোকজনের কাছে শুনে আমি আশ্চর্য হয়েছি যে, গত পাঁচ বছরে মোদি একবারও বারাণসীতে আসেননি। সংসদীয় এলাকার একটি গ্রামে একবারের জন্যও আসার সময় পাননি। পাঁচ বছরে কোনও একটি পরিবারের একজন লোকের সঙ্গেও কথা বলেননি।
বিদেশ সফর নিয়ে বিরোধীদের কম কটাক্ষ শুনতে হয়নি প্রধানমন্ত্রীকে। ধেয়ে এসেছে ‘এনআরআই প্রধানমন্ত্রী’র মতো কটাক্ষ। আবার বিদেশ থেকে ভারতে এলে বিরোধীরা কখনও বা শ্লেষ বাক্যে বিদ্ধ করেছেন, ‘ভারত সফরে এলেন মোদি’। মোদির এই বিদেশ সফর নিয়েই প্রিয়াঙ্কার কটাক্ষ, ‘উনি আমেরিকা, জাপান, চীন ও গোটা বিশ্বে ঘুরেছেন। কিন্তু তার নিজের কেন্দ্রের মানুষের সঙ্গে কথা বলার সামান্য সময়ও হয়নি।’
‘নিজের কেন্দ্রের জন্যই বা কী করেছেন, আর দেশের জন্যই বা কী করেছেন?’ প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন কংগ্রেস নেত্রী। প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘খুব সামান্য বিষয়, কিন্তু তাৎপর্য বিশাল। এর থেকেই সরকারের মনোভাব বোঝা যায়। এটাই প্রমাণ করে এই সরকার বড়লোকদের আরও বড়লোক করেছে, আর গরিবদের গরিব।’ এই সূত্রেই মোরি সরকারকে জনবিরোধী এবং কৃষক বিরোধী সরকার বলেও আক্রমণ শানান প্রিয়াঙ্কা।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গত বৃহস্পতিবার থেকে পশ্চিম উত্তর প্রদেশে প্রচার শুরু করেছেন। অন্যদিকে প্রিয়াঙ্কা উত্তর প্রদেশ সফরে আমেথি-রায়বেরেলি হয়ে গতকাল শুক্রবার অযোধ্যা সফরে পৌঁছেন। গত বুধবার থেকে তার এ সফর শুরু হয়। রোড-শো, জনসভা করেছেন তিনি। ফয়েজাবাদে জনসভার মধ্য দিয়ে তার তিন দিনের উত্তর প্রদেশ সফর শেষ হয়।
এবারের নির্বাচনে সোনিয়া গান্ধীর নাম ইতোমধ্যেই রায়বেরেলি থেকে ঘোষণা করেছে কংগ্রেস। তবু গত বৃস্পতিবার মায়ের কেন্দ্রে মেয়ে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে সামনে পেয়ে আবদার জুড়ে বসেন কংগ্রেস কর্মীরা, ‘আপনি রায়বেরেলি থেকেই লড়ুন। গোটা পূর্বাঞ্চলে তা হলে হাওয়া উঠে যাবে।’ হাসতে হাসতে অনেকটা রসিকতার ছলে প্রিয়াঙ্কা তাদের বললেন, ‘যদি বারাণসী থেকে লড়ি?’
গত বুধবারই রাহুল গান্ধীর কেন্দ্র আমেথিতে দাঁড়িয়ে প্রিয়াঙ্কা বলেছিলেন, দল চাইলে তিনি ভোটে লড়তে পারেন। তা শুনেই বিজেপি সজাগ হয়ে ওঠে। এদিন তার মুখে খোদ প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী কেন্দ্রের কথা শুনে বিজেপির রক্তচাপ কিছুটা বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রী এখন প্রিয়াঙ্কার ধাঁচে জনসভায় প্রথমে ‘বোন’, পরে ‘ভাই’ বলতে শুরু করেছেন। বিজেপির নেতারা বলছেন, ‘বারাণসীতে মোদিকে হারাতে পারেন, এমন কোনও নেতা নেই। তবু প্রিয়াঙ্কা প্রার্থী হলে নতুন করে কৌশল রচনা করতে হবে।’
উত্তর প্রদেশ কংগ্রেসও রাহুল আর প্রিয়াঙ্কার যৌথ জনসভার পরিকল্পনা করছে। এক ডজনের বেশি। প্রিয়াঙ্কা পূর্ব উত্তর প্রদেশের সাধারণ সম্পাদক হলেও যৌথ সভা রাজ্যের পশ্চিম প্রান্তেও করার পরিকল্পনা হচ্ছে। সাহারানপুরে ৭ এপ্রিল রাহুল-প্রিয়াঙ্কার যৌথ সভা হতে পারে।
কংগ্রেস সূত্রের মতে, গত বৃস্পতিবার প্রিয়ঙ্কা বারাণসী থেকে তার লড়াইয়ের কথা বললেও বাস্তবে তার সম্ভাবনা কম। কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, প্রিয়াঙ্কা ২০২২ সালে বিধানসভা ভোটের জন্য দলের সংগঠনকে শক্তিশালী করছেন। তার পুরো জোরটাই সে দিকে। কর্মীদের সঙ্গে আলাপচারিতাতেও ঠিক এ কথাই বলেছেন প্রিয়াঙ্কা। তিনি বলেন, ‘২০১৯ সালের প্রস্তুতি সম্পূর্ণ। কিন্তু ২০২২ সালের প্রস্তুতি করুন। সরকার আমরাই গড়ব।’
বিজেপি গত বৃহস্পতিবার আমেথি-রায়বেরেলির একটি ভিডিও প্রকাশ করে। তাতে দেখা যায়, কিছু লোক ‘প্রিয়াঙ্কাকে ঘিরে বলছে, ‘পাঁচ বছর পর আপনি এলেন। রাহুল গান্ধীরও দেখা নেই।’ এ সময় ‘প্রিয়াঙ্কা গান্ধী মুর্দাবাদ’ ধ্বনিও শোনা যায় ভিডিওতে।
গত বৃহস্পতিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজেপির প্রচার নিয়ে কংগ্রেস কর্মীদের সতর্ক করে প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘বিজেপির ‘হোয়াটসঅ্যাপ বিশ্ববিদ্যালয়’ থেকে দূরে থাকুন! সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক ‘ভুয়ো খবর’ চলে। সেগুলোর যথাযথ মোকাবিলা করতে হবে।’ পাশাপাশি আরএসএসকে এক হাত নিয়ে তিনি বলেন, ‘যারা কখনও স্বাধীনতা আন্দোলনে শরিক হয়নি, তাদের থেকে জাতীয়তাবাদের সার্টিফিকেট নেওয়ার কোনও প্রয়োজন আমাদের নেই। ওরা তো ব্রিটিশদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করত। সূত্র : এনডিটিভি ও আনন্দবাজার পত্রিকা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।