Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নির্বাচনে ভোটাররা আগ্রহ হারাচ্ছেন

কাল ১২২ উপজেলায় ভোট

পঞ্চায়েত হাবিব : | প্রকাশের সময় : ৩০ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

উপজেলা নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় প্রার্থীরা জয়ী হলেও খুশী নন ভোটাররা। চতুর্থ ধাপে দেশের পাঁচ বিভাগের ১৬টি জেলার ১২৩টি মধ্যে ১২২টি উপেজলায় ভোট হবে আগামীকাল রোববার। ইতোমধ্যে উপজেলা নির্বাচনে চতুর্থ ধাপের চয়ারম্যান পদে ৩৯ জন বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত হয়েছেন। চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মিলে ৮৮ জন বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ-৩ ( সোনারগাঁ) আসনের জাতীয় পার্টির এমপি লিয়াকত হোসেন খোকাসহ বেশ কয়েকজন সরকারি দলের এমপিকে নিজ নির্বাচনী এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন
চতুর্থ ধাপে সব পদেই বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত হয়েছেন, এমন উপজেলা পরিষদের সংখ্যা রয়েছে ১৫। ফলে এসব উপজেলায় নির্বাচনের প্রয়োজন পড়ছে না। এদিকে নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন প্রতিক্রিয়া জনগণকে রাজনীতিবিমূখ করে তুলবে। উপজেলা পরিষদের প্রথম তিন ধাপের নির্বাচনের পর চতুর্থ ধাপেও বিনাপ্রতিদ্ব›িদ্বতায় জয়ের হিড়িক। ভোটে নির্বাচিত না হলেও জনগণের জন্য কাজ করার প্রতিশ্রæতি মেনে চলার অঙ্গীকার করছেন তারা। ভোটাররা বলছেন, এমন প্রক্রিয়ায় নির্বাচনের প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছেন তারা। কমছে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আস্থা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিনা ভোটে প্রার্থীদের জয়ের এমন প্রবণতা গণতন্ত্রের জন্য অশনিসংকেত।
গত ১০ মার্চ থেকে সারাদেশে ধারাবাহিকভাবে উপজেলায় নির্বাচন শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে তিন দফায় নির্বাচন সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। প্রথম দফায় ১০ মার্চ, দ্বিতীয় দফায় ১৮ মার্চ এবং তৃতীয় দফায় ২৪ মার্চ নির্বাচন সম্পন্ন হয়। প্রত্যেক ধাপে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সরকার দলীয় প্রার্থী বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ইসি সচিবালয়ের তথ্য অনুযায়ী, উপজেলা নির্বাচনের তিন ধাপে ৩২৩ উপজেলায় ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। চতুর্থ ধাপে ১২৩ উপজেলার মধ্যে ১২২টি ভোট গ্রহণ হবে আগামী রোববার (৩১ মার্চ)। চতুর্থ ধাপের হিসেবে দেখা যায়, সব মিলিয়ে ৮৮ জন বিনাভোটে জয়ী হয়েছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান ৩৯ জন, ভাইস চেয়ারম্যান ২২ এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান ২৭ জন। তৃতীয় ধাপে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫৫ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৪৮ জন এবং প্রথম ধাপে ২৮ জন বিনাভোটে জয়ী হন। সব মিলিয়ে ১০৮ জন চেয়ারম্যান বিনাভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। এই হিসেবে প্রায় চার ভাগের এক ভাগ চেয়ারম্যান বিনা ভোটে নির্বাচিত হলেন। এছাড়াও প্রায় প্রত্যেক ধাপেই চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হওয়ায় অনেক উপজেলায় নির্বাচনের প্রয়োজন হয়নি। এর মধ্যে প্রথম ৩ উপজেলায় নির্বাচনের প্রয়োজন পড়েনি। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ধাপে ৬ স্তরে উপজেলায় সবাই বিনা ভোটে নির্বাচিত হওয়ার কারণে নির্বাচনের প্রয়োজন পড়েনি। চতুর্থ ধাপে এসে বিনা ভোটে নির্বাচিত হওয়া উপজেলার সংখ্যা দ্বিগুণের বেশি। বিনা ভোটে নির্বাচিত হওয়ায় চতুর্থ ধাপে ১৫ উপজেলায় ভোট গ্রহণের প্রয়োজন হচ্ছে না বলে জানা গেছে।
ইসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে রমজানের আগে আগামী রোববার উপজেলায় ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হচ্ছে। এর পর রমজানের পরে পঞ্চম শেষ দফায় নির্বাচন হবে। তবে পঞ্চম দফায় নির্বাচনের জন্য এখনও তফসিল ঘোষণা করা হয়নি। তবে রমজানের পর আগামী ১৮ জুন শেষ ধাপে ভোট গ্রহণ করা হবে। বিনা ভোটে নির্বাচিতরা সবাই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। একই দলের ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদের প্রার্থীরাও বিনাভোটে জিতে চলেছেন। বিএনপি এবং অন্য রাজনৈতিক দলগুলো ভোটে না আসায় মূলত উপজেলায় বিনা ভোটে রয়েছেন তারা সবাই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী।
যেসব উপজেলায় আগামী রোববার ভোট সে গুলো উপজেলা হচ্ছে, পটুয়াখালী জেলার সদর, দশমিনা, গলাচিপা, কলাপাড়া, মির্জাগঞ্জ, দুমকী ও বাউফল, ভোলা জেলার সদর, মনপুর, দৌলতখান, তজুমুদ্দিন, চরফ্যাশন ও লালমোহন, বরগুনা জেলার সদর, আমতলী, বেতাগী, বামনা ও পাথরথাটা, পিরোজপুর জেলার সদর, ইন্দুরকানী, মঠবাড়িয়া, কাউখালী, ভান্ডারিয়া, নেছারাবাদ ও নাজিরপুর। খুলনা বিভাগের যশোর জেলার সদর, বাঘারপাড়া, ঝিকরগাছা, চৌগাছা, শার্শা, অভয়নগর, মনিরামপুর ও কেশবপুর, খুলনা জেলার দিঘলিয়া, কয়রা, দাকোপ, পাইকগাছা, রূপসা, তেরখাদা, ফুলতলা ও বৈটিয়াঘাটাম, বাগেরহাট জেলার সদর, মংলা, রামপাল, মোরেলগঞ্জ, কচুয়া, শরণখোলা, চিতলমারী, ফকিরহাট ও মোল্লাহাট।
ময়মনসিংহ বিভাগের ময়মনসিংহ জেলার সদর, হালুয়াঘাট, ধোবাউড়া, ফুলপুর, ঈশ্বরগঞ্জ, গফারগাঁও, ফুলবাড়িয়া, ত্রিশাল, গৌরীপুর, নান্দাইল, মুক্তাগাছা ও ভালুকা, মুন্সিগঞ্জ জেলার সদর, সিরাজদিখান, লৌহজং, শ্রীনগর, গজারিয়া ও টংগীবাড়ী। ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার, সোনারগাঁও ও রূপগঞ্জ, ঢাকা জেলার সাভার, ধামরাই, কেরানীগঞ্জ, দোহার ও নবাবগঞ্জ, টাঙ্গাইল জেলার সদর, ধনবাড়ী, মধুপুর, মির্জাপুর, দেলদুয়ার, নাগরপুর, ঘাটাইল, ভূঞাপুর, কালিহাতী, গোপালপুর, বাসাইল ও সখিপুর। কুমিল্লা জেলার তিতাস, বরুড়া, লাকসাম, লাঙ্গলকোট, মনোহরগঞ্জ, চান্দিনা, মুরাদনগর, দেবিদ্বার, বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়া, চৌদ্দগ্রাম, মেঘনা ও হোমনা, নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ, সেনবাগ, সোনাইমুড়ী, কবিরহাট, সুবর্ণচর, চাটখিল ও কোম্পানীগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সদর, সরাইল, আখাউড়া, কসবা, অশুগঞ্জ, নাসিরাবাদ ও নবীনগর এবং ফেনী জেলার সদর, ফুলগাজী, সোনাগাজী, দাগনভুঞা, ছাগলনাইয়া ও পরশুরাম উপজেলা।

 

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নির্বাচন

২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ