চরিত্র মানুষের শ্রেষ্ঠতম অলঙ্কার
সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাত- মানবজাতি। এ শ্রেষ্ঠত্ব মানুষ তার চরিত্র দিয়ে অর্জন করে নেয়।
শেষ
এ সম্পর্কে নির্দেশনা হলো যে, ‘হজরত ত্বলক ইবনে আলী রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, কোন লোক তার স্ত্রীকে নিজ প্রয়োজন পূরণের উদ্দেশ্যে ডাকলে সে যেন সাথে সাথে তার নিকট আসে, এমনকি সে চুলার উপর রান্না-বান্নার কাজে ব্যস্ত থাকলেও’ -(তিরমিজি ঃ ১১৬০, মিশকাতুল মাসাবীহ ঃ ১২০২)। অন্যথায় এ ব্যাপারে সতর্কবাণী প্রদান করা হয়েছে। অন্য হাদীসে এসেছে, ‘হজরত আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, কসম সেই সত্তার যাঁর হাতে আমার প্রাণ। কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীকে যখন বিছানায় আহ্বান করে, কিন্তু সে তা অস্বীকার করে, নিঃসন্দেহে যে পর্যন্ত সে তার স্ত্রীর প্রতি সন্তুষ্ট না হয়, ততক্ষণ আসমানবাসী তার প্রতি অসন্তুষ্ট থাকেন’ -(মুসলীম ঃ ৩৪৩২)। তাই আদর্শ স্ত্রীগণ এ ব্যাপারে যত্নবান থাকবেন।
একই ভুল বারংবার না করা, ভুল করে ফেললে শুধরে নেয়া এবং সে ভুল যাতে সংঘটিত না হয় সেক্ষেত্রে সতর্ক থাকা একজন উত্তম স্ত্রীর অন্যতম গুণাবলীর একটি। তিনি হবেন আল্লাহ পাকের যিকির কারীণী। সর্বদা তার জিহ্বা আল্লাহর যিকিরে মশগুল রাখবেন। স্ত্রী হবেন পুতঃপবিত্র, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। পোষাক-পরিচ্ছেদ এবং শারিরীকভাবে তা প্রকাশ পাবে। আল্লাহর বাণী, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওবাকারী এবং অপবিত্রতা থেকে যারা বেঁেচ থাকে তাদেরকে পছন্দ করেন’ - (সুরা আল বাক্বারা ঃ ২২২)।
আদর্শ স্ত্রীগণ স্বামীর সকল আদেশের অনুগতশীল হবেন। তবে যদি কোন পাপ কাজের অথবা আল্লাহ ও তাঁর রাসুল পাকের বিরূদ্ধাচরণ কিছু হয় তা হবে অগ্রহণযোগ্য। যা মানা যাবে না। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন, ‘কোন সৃষ্টির অনুগত হতে গিয়ে আল্লাহর অবাধ্য কোন কাজ করা যাবে না’।
স্ত্রী স্বামীকে কিছু দান করলে বা খেদমতের কারণে তাকে খোঁটা দিবেন না। স্বামীর অনুমতি ছাড়া নফল রোজা আদায় করবেন না। মুহরীম ছাড়া অন্য কাউকে স্বামীর অনুমতি ছাড়া তার বাড়ীতে বা রূমে প্রবেশ করতে না দেয়া আদর্শ স্ত্রীগণের বিশেষ গুণ। তিনি হবেন লজ্জাশীল। স্বামীকে কখনও কোনভাবে কষ্ঠ দিবেন না। স্বামীর অনুমতি ব্যতিরেখে তার সম্পদের কোনকিছু কোথাও ব্যয় করবেন না। তবে, আল্লাহর পথে দান করলে উভয়েই সাওয়াবের অধিকারী হবেন। হাদীস শরীফের ভাষ্যমতে, ‘হজরত আয়েশা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, কোন স্ত্রী যদি তার ঘর হতে বিপর্যয় সৃষ্টির উদ্দেশ্য ছাড়া খাদ্যদ্রব্য সাদকা করে তবে এ জন্যে সে সাওয়াব লাভ করবে। আর উপার্জন করার কারণে স্বামীও সাওয়াব পাবে এবং খাজাঞ্চীও অনুরূপ সাওয়াব পাবে। তাদের একজনের কারণে অন্যজনের কোন কমতি হবে না’ -(বোখারী ঃ ১৪২৫)। আদর্শ স্ত্রীর গুণের অন্যতম একটি হলো স্বামীর পাশে অন্য কোন অপরিচিত গায়রে মুহরীম লোকের প্রশংসা করবেন না, তবে ঐ ব্যক্তির ধর্মীয় ভালগুলোর প্রশংসা করতে পারবেন।
সর্বোপরি, আদর্শ স্ত্রীগণ স্বামীকে সন্তুষ্ট ও খুশি রাখবেন। আর এর মাধ্যমেই জান্নাত লাভের পথ সুগম করবেন। হাদীস শরীফের ভাষায়, ‘হজরত উম্মে সালমাহ রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, স্ত্রীর প্রতি তার স্বামী সন্তুষ্ট ও খুশি থাকা অবস্থায় কোন স্ত্রীলোক মারা গেলে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে’ -(তিরমিজি, রিয়াদুস সালেহীন ঃ ২৯২)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।