Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ট্রাম্পের স্বীকৃতিকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রত্যাখ্যান

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৭ মার্চ, ২০১৯, ৪:৪৫ পিএম

সিরিয়ার গোলান মালভূমিকে ইসরায়েলি ভূখণ্ড হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে যে স্বীকৃতি প্রদান করেছে, তা ইতোমধ্যে প্রত্যাখ্যান করেছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়; যাদের মধ্যে উপসাগরীয় বেশ কয়েকটি দেশও রয়েছে।

১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর সিরিয়ার কাছ থেকে মালভূমিটির দখল নিয়েছিল ইসরায়েল। পরে গত সোমবার ওয়াশিংটন থেকে এক ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষরের মাধ্যমে গোলানকে ইসরায়েলের ভূখণ্ড হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি প্রদান করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যা ইতোমধ্যে প্রত্যাখ্যান করেছে উপসাগরীয় দেশ সউদী আরব, বাহরাইন, কাতার, কুয়েত ও ইরানসহ আরও বেশ কিছু দেশ।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে দেওয়া এ স্বীকৃতির পর জাতিসংঘ থেকে বলা হয়, ‘এই গোলান ইস্যুতে তাদের আগের অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি।’ তাছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নও ইতোমধ্যে ট্রাম্পের এই স্বীকৃতিকে পুরোপুরি প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা দিয়েছে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দেওয়া এ স্বীকৃতির পর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, পোল্যান্ড ও বেলজিয়ামের রাষ্ট্রদূত এক যৌথ বিবৃতি দিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গোলান মালভূমিতে ইসরায়েলের সার্বভৌমত্বের বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টের দেওয়া স্বীকৃতিকে আমরা অস্বীকার করছি। যা ইসরায়েল ১৯৬৭ সালে দখল করেছিল।’
তাছাড়া এই ইস্যুতে জাতিসংঘের দ্বারস্থ হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান। একইসঙ্গে চীন, রাশিয়া, কানাডা এবং লেবাননের পক্ষ থেকেও ট্রাম্পের এ স্বীকৃতি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। তাদের মতে, ‘গোলান মালভূমিতে ইসরায়েলি দখলদারিত্ব কখনোই স্বীকার করে না তারা।’
অপরদিকে গত মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতির বিরুদ্ধে এক বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে সিরিয়ার জনগণ। এতে বিভিন্ন দেশে ফেস্টুন এবং প্ল্যাকার্ড হাতে এর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদে নেমেছিলেন তারা। যদিও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেওয়া এ স্বীকৃতিকে ইতোমধ্যে ‘ঐতিহাসিক’ বলে মন্তব্য করেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি নিউজ জানায়, স্বীকৃতি প্রদানের এই ঘোষণাপত্র স্বাক্ষরের সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পাশে ছিলেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। আর এর মধ্য দিয়ে গোলান প্রশ্নে বিগত কয়েক দশক যাবত চলা যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পুরোপুরি বদলে দিলেন ট্রাম্প।
ঐতিহাসিক এ ঘোষণার পর্বে উপস্থিত সাংবাদিকদের নেতানিয়াহু বলেছিলেন, ‘আমরা কোনোভাবেই গোলান বেহাত হতে দেব না।’ তখন ট্রাম্পের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ‘এমন সময় আপনার এ ঘোষণা এল, যখন অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে ইসরায়েলের নিরাপত্তার জন্য এটি বেশি দরকার ছিল। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী এও বলেছেন, ‘ইসরায়েলের আত্মরক্ষার এক যুদ্ধের মধ্য দিয়ে এই গোলানকে জয় করে। এখানে রয়েছে ইহুদিদের হাজার বছরের শেকড়। যার মূল্য আমরা অবশ্যই দিব।’
যদিও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই গোলান প্রশ্নে ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিয়েছেন, তবে অন্য কোনো দেশ এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রকে অনুসরণ করার সম্ভাবনা এখনো অনেকটা ক্ষীণ।
সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, 'এটি আন্তর্জাতিক মহলের জন্য এক লজ্জাজনক ঘটনা।' তাছাড়া দেশটিতে চলমান সংঘাতে সিরিয় প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে সমর্থন করা রাশিয়া এ ঘটনার ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ায় ব্যক্ত করেছে। তাদের মতে, ‘এটি মধ্যপ্রাচ্যের সকল অঞ্চলকে নতুন করে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যেতে পারে। যা কখনোই কাম্য নয়।’

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ