ইবি ভিসির অফিসে তালা, অডিও ক্লিপ বাজিয়ে আন্দোলন
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ভিসি প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালামের অডিও ফাঁসের ঘটনায় তৃতীয় দিনেও ভিসি
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) ভিসি অধ্যাপক ড. এসএম ইমামুল হক শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে বক্তব্য দেওয়ার প্রতিবাদে এবং তা প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা। বুধবার সকাল থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে বিক্ষোভ করছেন তারা। দাবি না মানা পর্যন্ত শ্রেণীকক্ষে ফিরে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাসে বৈকালিক চা চক্র ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেখানে শিক্ষার্থীদের আমন্ত্রণ না জানানোয় তারা প্রতিবাদ করেন। তারা অনুষ্ঠান স্থলের বাইরে বিক্ষোভ করেন। এ ঘটনায় ভিসি ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলেন।
শিক্ষার্থীরা জানায়, সকাল আটটা থেকে ক্লাস শুরু হবার কথা থাকলেও তারা ক্লাসে যোগদান করেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের নীচে অবস্থান নিয়েছেন তারা। একই সাথে দাবী না মানা পর্যন্ত ক্লাস পরীক্ষা থেকে বিরত থাকার কথা বলছেন শিক্ষার্থীরা। তারা জানান, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাসে বৈকালিক চা চক্র ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেখানে শিক্ষার্থীদের আমন্ত্রণ জানানো হয় না। শিক্ষার্থীরা গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐ অনুষ্ঠানের বাইরে প্রতিবাদ জানায়।
শিক্ষার্থীরা আরো জানায়, এ ঘটনায় ভিসি ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষার্থীদের রাজাকারের বাচ্চা বলেন। এর প্রতিবাদে এবং ভিসির উক্তি প্রত্যাহারের দাবিতে বুধবার সকাল থেকে ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন শুরু করেছে শিক্ষার্থীরা। এই আন্দোলনের সাথে যুক্ত হয়েছে আরো কিছু দাবি। এরমধ্যে রয়েছে টিএসসিতে পাঠদান না করানো, সেমিনার রুমের ভাড়া ৩ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ৫’শ টাকা করা এবং সকল জাতীয় দিবস শিক্ষক শিক্ষার্থী সমন্বয়ে উদযাপন করা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. ইমামুল হক বলেন, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে সকাল ৯টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ফ্লাগস্টান্ডে জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিবসের সূচনা হয়। দিনব্যাপী শিক্ষার্থীদের নিয়ে নানা অনুষ্ঠান শেষে বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তা এবং প্রশাসন, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও সাংবাদিকদের স্ত্রীসহ চা চক্র ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বরিশালের গণ্যমান্যদের নিয়ে এ চা-চক্রের আয়োজন করা হলেও শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের জন্য দুপুরের প্যাকেটজাত খাবার আবাসিক হলগুলোতে পৌঁছানো হয়। শিক্ষার্থীরা হলের দেয়া খাবার ফিরিয়ে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান বানচালের চেষ্টা চালায়।
ভিসি বলেন, যারা আন্দোলনের নামে স্বাধীনতা দিবসের মতো জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠান বানচাল করার ষড়যন্ত্র করেছিল তাদের রাজাকার বলা হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, মুক্তিযুদ্ধ বিরোধীদের বিপক্ষে অবস্থান নেয়ায় একটি কুচক্রী মহল তাদের স্বাথের্র জন্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। কোটা বিরোধী আন্দোলনের সময় তারা সুবিধা করতে না পেরে তার বিরুদ্ধে এসব ষড়যন্ত্র করছে।
এদিকে ববি’র প্রক্টর ড. সুব্রত কুমার দাস বলেন, এ ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এরপরও কেন তারা এভাবে আন্দোলন করছে তা আমার বোধগম্য নয়। তবে শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে কোনও চিঠি পাওয়া যায়নি। আমরা তাদের চিঠির অপেক্ষায় আছি। চিঠি পাওয়া গেলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে একটা সমাধান বের করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।