পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পদ্মা সেতুর বাকি কাজ শেষ করতে আরও ৩১ মাস সময় চেয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানী। গত মাসে এ সংক্রান্ত চিঠি দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এতে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শেষ করতে ২০২১ সালের ২৬ জুন পর্যন্ত সময় লাগবে। পদ্মা সেতুর ব্যবস্থাপনা পরামর্শকদের মাসিক মূল্যায়ন প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদনটি জমা দেয় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান রেন্ডাল অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস। পদ্মা সেতুর মূল অবকাঠামো নির্মাণে চুক্তি সই হয় ২০১৪ সালের জুনে। ২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর এ সেতুর কাজ শেষ করার কথা ছিল। তবে নির্ধারিত সময়ে কাজ হয়েছে প্রায় ৭০ শতাংশ।
পদ্মা সেতুর ব্যবস্থাপনা পরামর্শকদের মাসিক মূল্যায়ন প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত মূল সেতুর নির্মাণকাজের অগ্রগতি হয়েছে ৭৩ দশমিক ২০ শতাংশ। যদিও গত বছরের নভেম্বরে প্রকল্পটির কাজ শেষ করার কথা ছিল। অর্থাৎ নির্ধারিত সময়ে দুই মাস পরও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৬ দশমিক ৮০ শতাংশ পিছিয়ে রয়েছে মূল সেতুর কাজ।
জানা গেছে, নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার আগেই মূল সেতুর কাজ শেষ করতে অতিরিক্ত ছয় মাস সময় দেওয়া হয়েছিল ঠিকাদারকে। অর্থাৎ চলতি বছরের জুন পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়। তবে বর্ধিত সময়ের মধ্যেও এ কাজ শেষ হবে না বলে গত মাসে জানিয়ে দিয়েছে পদ্মা সেতুর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ কোম্পানী। কাজ শেষ করতে ২০২১ সালের ২৬ জুন পর্যন্ত সময় চাওয়া হয়েছে। অর্থাৎ অতিরিক্ত ৩১ মাস সময় চেয়েছে চায়না মেজর ব্রিজ কোম্পানী। যদিও ঠিকাদারের প্রস্তাব মেনে নেয়নি সেতু বিভাগ। এক্ষেত্রে বর্ধিত সময় দাবির ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
এদিকে, পদ্মা সেতুর নকশা জটিলতার বিষয়টিও ব্যবস্থাপনা পরামর্শকের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এতে বলা হয়, পদ্মা সেতুর ২২ পিলারের নকশার সমস্যাতেই প্রায় দেড় বছর পেরিয়ে গেছে। এর মধ্যে ১৪টি পিলারের পাইলের তলদেশে কাদার স্তর ধরা পড়ে ২০১৬ সালের শেষ দিকে। পরে আরও আটটি পিলারের তলদেশের মাটির গুণাগুণেও ভিন্নতা ধরা পড়ে। ফলে ২২ পিলারের নকশায় পরিবর্তন আনা হয়। এগুলো হলো-৬ থেকে ১২, ১৫, ১৯ ও ২৪ থেকে ৩৬নং পিলার। গত বছরের ডিসেম্বরে সেতুটির নকশা চূড়ান্ত হয়।
অন্যদিকে প্রকল্পটির নদী শাসনের চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে। তবে এ কাজের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চীনের সিনোহাইড্রো করপোরেশন ১৮ মাস অতিরিক্ত সময় দাবি করে। এতে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত নদী শাসন প্যাকেজের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত এ কাজের অগ্রগতি ৪৯ দশমিক ১২ শতাংশ।
সংশ্লিষ্টরা জানান, পদ্মা সেতু প্রকল্পের সংশোধিত মেয়াদ গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ধরা হয়েছিল। পরে তা এক বছরে বাড়িয়ে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর করা হয়। তবে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেও বাকি কাজ শেষ হবে না। এক্ষেত্রে প্রকল্পটির মেয়াদ দুই বছর বাড়ানো দরকার হতে পারে। তবে এখনই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। ঠিকাদারের প্রস্তাব ও বাস্তব অগ্রগতির ভিত্তিতে চলতি বছরের শেষ দিকে প্রকল্পটির মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন করা হবে।
ব্যবস্থাপনা পরামর্শকের প্রতিবেদন মতে, পদ্মা সেতুর ৪২টি পিলারের মধ্যে জানুয়ারি পর্যন্ত ১৭টির নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। আরও ১৪টি পিলারের নির্মাণকাজ চলছে। এগুলোর কোনোটির অর্ধেক, কোনোটির তার চেয়েও কম বা শুধু পাইল ক্যাপ নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া পাঁচটি পিলারের ২১টি পাইল সম্পন্ন হয়েছে। আর ছয়টি পিলারের পাইলিংয়ের কাজ এখনও শুরু হয়নি। সব মিলিয়ে ৫৬টি পাইল নির্মাণ এখনও বাকি রয়েছে।
জানা গেছে, গত বছর জানুয়ারি পর্যন্ত পদ্মা সেতুর মূল অবকাঠামো নির্মাণের অগ্রগতি ছিল ৫২ দশমিক ৮৭ শতাংশ। অর্থাৎ এক বছরে মূল সেতুর অগ্রগতি হয়েছে মাত্র ২০ দশমিক ৩৩ শতাংশ। আর গত বছর জানুয়ারি পর্যন্ত নদী শাসন কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৩৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ। অর্থাৎ এক বছরে এ কাজের অগ্রগতি হয়েছে ১৫ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
এ প্রসঙ্গে পদ্মা সেতু প্রকল্পের একজন কর্মকর্তা বলেন, নকশা জটিলতায় পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ পিছিয়ে গেছে। এজন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে অতিরিক্ত ১৮০ দিন সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে বর্ধিত সময়েও তারা কাজ শেষ করতে পারবে না বলে জানায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৩১ মাস সময় চেয়েছে চায়না মেজর ব্রিজ। তবে তাদের প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়নি। এত সময় লাগার ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে চিঠি চালাচালি হচ্ছে। ওই কর্মকর্তা বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্যাখ্যা পেলে সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে প্রকল্পটির বর্ধিত মেয়াদকাল অনুমোদন করা হবে।
উল্লেখ্য, পদ্মা সেতু প্রকল্পের মূল অবকাঠামো নির্মাণের চুক্তি মূল্য ধরা হয়েছে ১২ হাজার ১৩৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। নদী শাসনের চুক্তি মূল্য ৮ হাজার ৭০৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা। আর পুরো প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। যদিও বাস্তবায়ন বিলম্বে সেতুটির ব্যয় আরও বেড়ে যাবে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।