পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
উপজেলা নির্বাচনের প্রতি ভোটারদের অনীহা দিন দিন বাড়ছে। এ নিয়ে সরকার ও নির্বাচন কমিশন এক ধরনের অস্বস্তিতে পড়েছে। নির্বাচনের প্রতি ভোটারদের এই আস্থাহীনতা বিশেষজ্ঞদেরও ভাবনায় ফেলেছে।
বাংলাদেশে নির্বাচন মানে উৎসব। তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচনকে ঘিরে প্রার্থী-সমর্থক ও ভোটারদের মধ্যে এক ধরনের উৎসাহ-উদ্দীপনা এমনকি উত্তেজনারও সৃষ্টি হয়। নির্বাচনের দিন সকাল থেকে ভোটকেন্দ্রে থাকে ভোটারদের উপচে পড়া ভিড়। তবে ভোটের এই চিরায়ত রূপ সদ্যসমাপ্ত ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন এবং উপজেলা নির্বাচনের প্রথম দুই ধাপে একেবারেই দেখা যায়নি। এসব নির্বাচনে সারা দিন ভোটকেন্দ্র ছিল ভোটারশূন্য। নির্বাচন কর্মকর্তারা ভোটারের প্রতীক্ষায় কেন্দ্রে বসে ঝিমিয়ে সময় পার করেছেন।
উপজেলা নির্বাচনের প্রতি ভোটারদের এই অনীহার কারণ কী? নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ও বিশ্লেষকদের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তারা ভোটের প্রতি ভোটারদের এই আস্থাহীনতার জন্য প্রধানত ৫টি কারণ উল্লেখ করেছেন। এ পাঁচটি কারণের মধ্যে প্রধান ও প্রথম হচ্ছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজের ভোট দিতে না পারা। দ্বিতীয়টি হচ্ছে, যথাযথ দায়িত্ব পালনে নির্বাচন কমিশনের ব্যর্থতা। তৃতীয়, প্রশাসনের পক্ষপাতমূলক আচরণে ভোটাররা হতাশ। চতুর্থ, বিএনপির ভোট বর্জন করায় শক্ত কোনো প্রতিপক্ষ নেই। কে জয়ী হবেন, তা আগেই বুঝে যাওয়ায় ভোটার কেন্দ্রে যাচ্ছে না। আর পঞ্চম কারণ হচ্ছে, ভোট না দিলেও গণনায় অনেক ভোট দেখানোতে ভোটাররা আগ্রহ হারাচ্ছে।
এ বিষয়ে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জনগণ তাদের ভোট দিতে পারেনি এমন অভিযোগ রয়েছে। ওই নির্বাচনে নিজের ভোট দিতে না পারায় এখন ভোটের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। বলা যায়, জাতীয় নির্বাচনের প্রভাব এর পরের সব নির্বাচনে পড়েছে। নির্বাচন কমিশন থেকে যত যা-ই বলা হোক না কেন, নির্বাচনগুলোতে ভোটারের উপস্থিতি ধারাবাহিকভাবে কমছে। এ ছাড়া, উপজেলা নির্বাচনে বিএনপিসহ অনেক রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করেনি। ফলে নির্বাচনে তেমন কোনো প্রতিদ্ব›িদ্বতা নেই। আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের মধ্যে ইতোমধ্যে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ চেয়ারম্যান বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নির্বাচিত হয়েছেন। বাকি উপজেলাগুলোতেও সরকারদলীয় প্রার্থী জয়ী হবেন, এমন ধারণা সবার মনে। এসব কারণে ভোটাররা ভোট দেয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে।
সাবেক নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ বলেন, যখন নির্বাচনে বড় দল আসে না এবং বিভিন্ন পদে যারা দাঁড়িয়েছেন, তাদের মধ্যেই কেউ জিতবেন বলে বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যায়, তখন ভোটাররা উৎসাহ হারিয়ে ফেলেন। এ ছাড়া ভোটের পরিবেশ, প্রশাসনের ভূমিকা এসবও ভোটারদের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতার আলোকে ভোটাররা এখন কতটা সুন্দর ও সুষ্ঠু পরিবেশে ভোট দিতে পারবেন, সেটি নিয়ে সন্দিহান হয়ে আছেন। ফলে তারা কেন্দ্রে যান না।
বিশিষ্ট নির্বাচন বিশ্লেষক সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নির্বাচনী ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার কারণে গণতন্ত্রও খাদের কিনারায় এসে দাঁড়িয়েছে। ভোট ও নির্বাচন ব্যবস্থার ওপর মানুষের আস্থা কমে গেছে। কারণ, ভোট এখন আর মানুষকে দিতে হয় না। নির্বাচনের পুরো বিষয়েই কারসাজি বিদ্যমান। প্রশাসন নিয়ন্ত্রিত কারসাজিপূর্ণ নির্বাচন প্রক্রিয়ার কারণে মানুষ ভোটের ওপর আস্থা হারিয়েছে। ভোটাররা দেখছে তারা ভোট না দিলেও দিন শেষে প্রচুর ভোট গণনা করা হচ্ছে। এসব কারণে ভোট নিয়ে মানুষের মনে অনীহা সৃষ্টি হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আতাউর রহমান বলেন, প্রতিদ্ব›িদ্বতাহীন ভোটের প্রতি জনগণ আস্থা হারিয়েছে। একদলের আধিপত্য এবং নির্বাচন কমিশনের প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকার ফলে তাদের প্রতি জনগণের আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে প্রশাসনের ভূমিকা ও নির্বাচন কমিশনের ব্যর্থতা ভোটারদের হতাশ করেছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার তাদের প্রতি ভোটারদের আস্থা নেই, এমন অভিযোগ মানতে নারাজ। একটি বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি নির্বাচন বর্জন করায় ভোটার উপস্থিতি কম হচ্ছে বলে তিনি মনে করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।