গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
অন্তত দুই বছর গ্যাসের দাম না বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোকে পোশাক শিল্প মালিকদের গলা টিপে হত্যার শামিল মন্তব্য করে এ দাবি জানায় তারা।
বুধবার (২০ মার্চ) কারওয়ানবাজারের বিজিএমইএ ভবনে শিল্পের জ্বালানি মূল্য বৃদ্ধির নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কিত এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির পক্ষে এ দাবি জানানো হয়। তৈরি পোশাক খাত সংশ্লিষ্ট তিন সংগঠন বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ), বাংলাদেশ নীট ওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স এন্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ) এবং বাংলা দেশ টেক্সটাইল মিল অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) যৌথভাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে বিজিএমইএ’র সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আমাদের ছয় হাজার মেম্বারের মধ্যে তিন হাজার মেম্বারের ফ্যাক্টরি দিনে দিনে বন্ধ হয়ে গেছে। একটা উদ্যোক্তা হতে অনেক সময় লাগে। কিন্তু তাকে গলা টিপে হত্যা করা উচিত না। যুগে যুগে কিন্তু আমরা তাই করছি। বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য, ব্যাংকের উচ্চ সূদের হারের জন্য বিভিন্ন কারণে আমাদের গলা টিপে মেরে ফেলা হচ্ছে। আমাদের রক্তক্ষরণ হচ্ছে। আমরা আর এই রক্ত দিতে রাজি নই। যে কোনো কিছু করতে হলে আমাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, বিশ্ববাজারে পোশাকের দাম না বাড়লেও প্রতি বছর ধরে আট শতাংশ হারে শিল্পের উৎপাদন খরচ বাড়ছে। গত বছরের জুনে ব্যাংকের সুদহার ছয়-নয় বাস্তবায়নের কথা থাকলেও তার সুবিধা এখনো পাইনি। ব্যাংক ঋণের উচ্চ সুদের কারণে আমরা কোণঠাসা। এর মধ্যে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ন্যূনতম মজুরি ৫১ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। এতে করে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে ২৫ থেকে ৩৯ শতাংশ। বেতনের চাপ সামাল দিতে পারছি না; এর মধ্যে গ্যাস বিদ্যুতের বিল বাড়ালে তার চাপ সামাল দিব কিভাবে?
সিদ্দিকুর রহমান বলেন, পোশাক খাতে ন্যূনতম মজুরি বাড়ানোর সময় সরকার আমাদের আশ্বস্ত করেছিল পোশাক খাতের সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। এমতাবস্থায় গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির জন্য এই দাম বাড়ানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই। বরং এটি হাস্যকর। তিনি বলেন, এখন আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমছে। সারা বিশ্বের কোথাও জ্বালানির দাম আমাদের মত বাড়ানো হয় না। কিন্ত হঠাৎ করেই ১৩২ শতাংশ দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের কথা বলা হয়েছে। প্রস্তাবিত এই দাম বাড়লে এ খাতে উৎপাদন খরচ বাড়বে পাঁচ শতাংশ। যা এ খাতের উদ্যোক্তাদের পক্ষে মোকাবেলা করা সম্ভব নয়। এটি বাস্তবায়ন হলে বস্ত্র শিল্পের উদ্যোক্তারা গভীর সংকটে পড়বে।
বিজিএমইএ সভাপতি অভিযোগ করে বলেন, শিল্পের চাহিদা অনুযায়ী গ্যাসের চাপ পাচ্ছি না। আবার অনেক ক্ষেত্রে গ্যাস পেলেও পর্যাপ্ত নয়, আবার যতটুকু গ্যাস ব্যবহার করছি তার চেয়ে বেশি বিল পরিশোধ করছি । অর্থাৎ গ্যাস ব্যবহার না করে তিতাস গ্যাস কোম্পানিকে বাতাসের মূল্য দিচ্ছি। এছাড়া দীর্ঘদিন যাবৎ গ্যাস চেয়ে আছি কিন্তু এখনো তা পাইনি।
আগামী দুই বছর গ্যাস বিদ্যুতের দাম না বাড়ানোর দাবি জানিয়ে পোশাক শিল্পের মালিকদের এ নেতা বলেন, অবকাঠামোগত সমস্যা, কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা সহ বিভিন্ন কারণে বিগত সময়ে ব্যবসায়ীরা যে লস করেছে তা পূরণে ব্যবসায়ীদের সময় দিতে হবে। এজন্য আরো দুই বছর সময় চান ব্যবসায়ীরা। এ সময়ে গ্যাস বিদ্যুতের দাম না বাড়ানোর দাবি করেন। একই সঙ্গে হঠাৎ করে গ্যাস বিদ্যুতের দাম না বাড়িয়ে দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণে সরকারের কাছে দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন ও বিকেএমইএ’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মনসুর আহমেদ প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।