নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
গতকাল সকাল থেকেই শুরু হওয়ার কথা ছিল ক্রাইস্টচার্চ টেস্ট। সব কিছু ঠিক থাকলে এই সময়ে শেষ টেস্টে মাঠেই ব্যস্ত থাকার কথা বাংলাদেশের। কিন্তু সব কিছু যে ঠিক নেই পুরো পৃথিবীই জানে। বদলে যাওয়া বাবস্তবতায় এদিনই এই শহরকেই বিদায় জানায় বাংলাদেশ দল। কথা ছিল প্রয়োজনে আলাদা ফ্লাইটে হলেও যত দ্রæত সম্ভব নিউজিল্যান্ড ছাড়তে চায় বাংলাদেশ দল। তার আর প্রয়োজন পড়েনি। গুরুত্ব অনুধাবন করে দেশটির সবাত্মক সহযোগীতায় এক ফ্লাইটেই ক্রাইস্টচার্চ ছেড়েছে তামিম-মুশফিক-মাহমুদউল্লাহরা।
ক্রাইস্টচার্চে দুই মসজিদে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় শেষ টেস্ট বাতিল হওয়ার পর নিউজিল্যান্ড থেকে গতকাল রাতেই ঘরে ফিরেছে বাংলাদেশ। দলের ম্যানেজার খালেদ মাসুদ পাইলট জানিয়েছেন, গতকাল স্থানীয় সময় দুপুর ১২টায় (বাংলাদেশ সময় ভোর ৫টায়) সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে চড়েন খেলোয়াড়, অফিসিয়ালসহ মোট ১৯ জন। বাকি কোচিং স্টাফরা নিজ উদ্যোগে কেউ উইন্ডিজ কেউ দক্ষিণ আফ্রিকায় যাবেন। বাংলাদেশ সময় রাত ১০টা ৪০ মিনিটে ঢাকায় পা রাখে দল।
এমন ভয়ংকর পরিস্থিতিতে পড়েও বাংলাদেশ দল অবশ্য নিউজিল্যান্ড নিয়ে নিজেদের ভাবনায় কোনো পরিবর্তন আনেনি। তাদের চোখে নিউজিল্যান্ড এখনো বিশ্বের অন্যতম সেরা দেশ। গতকাল ভোরে ক্রাইস্টচার্চ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশের উদ্দেশে উড়াল দেয় বাংলাদেশ। ভারী অস্ত্রধারী পুলিশ বেষ্টিত হয়ে বিমানবন্দরে এলেও খেলোয়াড়দের চোখে মুখে ছেয়ে ছিল রাজ্যের ভয়। এ সময় মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে কথা বলতে পেরেছে চীনের বার্তা সংস্থা সিনহুয়া। তাদের বক্তব্যেই নিউজিল্যান্ড প্রসঙ্গটা উঠে আসে। হতাহতের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে নিজেদের ভাগ্যবান দাবি করে মুশফিক জানিয়েছেন, ‘নিউজিল্যান্ড এখনো বিশ্বের সেরা দেশগুলোর একটি। আমরা এখনো নিউজিল্যান্ডকে ভালোবাসি।’
এমন একটি হামলা যে হতে পারে, সেটা এখনো অবিশ্বাস্য ঠেকছে মুশফিকের। এই হামলার ঘটনা দেখে আসার পর তাঁদের পেশাদারি কোনো সাহায্য দেওয়া হয়েছে কি না, সে প্রসঙ্গে সরাসরি কোনো জবাব অবশ্য দেননি মুশফিক। শুধু বলেছেন, ‘আমরা সবাই খুশি যে বেঁচে আছি।’ তবে দলের অনেককেই ভীত দেখা গেছে, বলে দাবি করেছে সিনহুয়া। যাত্রা শুরুর আগে মুশফিক অবশ্য টুইটারে নিজেই ফেরার কথা জানিয়েছেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, অবশেষে ঘরে ফিরছি।’
গতপরশু শুক্রবার জুমার নামাজের আগে ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে বন্দুকধারীদের গুলিতে তিন বাংলাদেশিসহ শহীদ হন ৪৯ জন মুসল্লি। হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন আরও ১১ জন। আহত মানুষের সংখ্যা অবশ্য আরও অনেক বেশি। বাংলাদেশ দল যেখানে অনুশীলন করছিল, সেই হ্যাগলি ওভালের কাছেই দুই মসজিদের একটি আল নূর মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা। মসজিদের প্রবেশের আগেই আক্রান্ত এক নারীর মাধ্যমে তারা সেখানে গোলাগুলির খবর পান। পরে বাস থেকে নেমে হ্যাগলি পার্কের মাঝ দিয়ে ফিরে আসেন মাঠে। পরে অল্পের জন্য নিজেদের রক্ষা করে হোটেলে ফেরেন তারা।
এই ঘটনার পর তাৎক্ষণিকভাবেই বাতিল হয়ে যায় বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার তৃতীয় ও শেষ টেস্ট। বিসিবি প্রধান জানান বাংলাদেশ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং নিউজিল্যান্ড বোর্ড এবং দেশটির সরকারের পূর্ণ সহযোগীতায়ই ক্রিকেটারদের দ্রত ফিরিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে। মুশফিকদের বিদায় বেলায় ক্রাইস্টচার্চ বিমানবন্দরে ছিল কড়া নিরাপত্তা। বাহিনীর সদস্যরার এই অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে সমবেদনা জানিয়েছেন। নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসের নারকীয় এই ঘটনা পুরো বিশ্বেই এখন সবচেয়ে আলোচিত খবর। ভয়ংকর এই সন্ত্রাসী হামলার অবশেষ এখনো রয়ে গেছে আল নূর মসজিদে, ক্রাইস্টচার্চের রাস্তায় ও প্রত্যক্ষদর্শীদের স্মৃতিতে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।