পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
সরকারের ভর্তুকি দিয়ে হলেও ইন্টারনেট সহজলভ্য করার কথা জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। সারা দেশে ইন্টারনেট একই মূল্যে করার কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এক দেশ এক রেট করতে হবে। সবাই যেন ইন্টারনেটের সুযোগ-সুবিধা পায় তা নিশ্চিত করতে হবে। কোন জায়গায় ভর্তুকি দিতে হলে দেব। ছেলেমেয়েরা ভর্তুকি পেয়ে যদি এগিয়ে যায় তাহলে সে জায়গায় অবশ্যই আমরা যাবো। তিনি বলেন, ইন্টারনেট সেবায় মোবাইল ফোন অপারেটর ও এনটিটিএনদের ক্ষমতা যতটুকু আছে তা দিয়ে জনগণকে সর্বাচ্চ মান নিশ্চিত করতে হবে, কোন রকমের অজুহাত দেওয়া যাবে না। গতকাল (মঙ্গলবার) বিকেলে হোটেল লা ভিঞ্চিতে টেলিকম খাতের রিপোর্টারদের সংগঠন টেলিকম রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক বাংলাদেশের (টিআরএনবি) আয়োজনে ‘ডিজিটাল সেবায় ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক: বর্তমান ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় মন্ত্রী এ কথা বলেন।
ডাক, টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, ফিক্সড ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সহজলভ্য করতে সারা দেশে একই মূল্যে নির্ধারণ করতে হবে। ঢাকায় একজন গ্রাহক যে মূল্যে ইন্টারনেট ব্যবহার করবে পঞ্চগড়ের প্রত্যন্ত গ্রামেও যেনে সেই একই মূল্যে ইন্টারনেট পায় সেই ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে এজন্য সরকার ভর্তুকি দেবে। ইন্টারনেট সহজলভ্য করতে ট্রান্সমিশন প্রতিষ্ঠান এনটিটিএন ও ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান আইএসপিদের একে অপরকে দোষারোপ না করে সমস্যা সমাধান করার কথাও বলেন মন্ত্রী।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, বর্তমানে আমরা এক হাজার ২০০ জিবিপিএস ইন্টারনেট ব্যবহার করি এবং এটি বাড়ছে। যে সমস্যাগুলো আছে সেগুলো সমাধান করবো, সরকারের পক্ষ থেকে কোন সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেব না, তাদের সাথে কথা বার্তা বলেই গাইড লাইন চ‚ড়ান্ত করছি। সমস্যা কোথায় এবং এর সমাধান কি হবে এসব নিয়ে আলোচনা করতে হবে।
সরকারের সর্বশেষ নির্বাচনী ইশতেহারে গ্রাম হবে শহর হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, গ্রাম শহর হওয়ার মানে হচ্ছে ডিজিটাল গ্রাম হবে, শহরের সুযোগ সুবিধা গ্রামে হবে, যে ইন্টারনেট স্পিড শহরে হবে তা গ্রামেও করতে হবে। শহরের বাইরে কেন বাড়তি পয়সা দিতে হবে, সেটা গ্রহণযোগ্য না। ট্রান্সমিশন কোম্পানি এনটিটিএনদের জন্য খরচ বাড়ছে এই খরচ যেন গ্রাহকের উপর না পারে, সেটা সরকার দেবে না কি হবে তা ঠিক করতে হবে।
২০২৩ সালের মধ্যে যে কোন ভাবেই ৫-জিতে যাওয়া হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, প্রযুক্তিতে পিছিয়ে যাওয়ার রিক্স আমরা নিতে পারি না। যে বিজনেস প্ল্যান নিয়ে আপনার এগিয়েছেন সে বিজনেস প্ল্যান আগামী ১০ বছর থাকবে না। ৫-জি অনেক পরিবর্তন আনবে এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিষয়গুলোতে পরিবর্তন আসবে।
টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি চেয়ারম্যান জহুরুল হক বলেন, গত ১০ বছরে আমরা অনেক দূর এগিয়েছি। এখন বেøইম গেইম না করে এ সেক্টরের সবাই এক যোগে কাজ করতে হবে। আলোচনা করে সমস্যাগুলো নিস্পত্তি করতে হবে।
ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন (আইএসপিএবি) সভাপতি এম এ হাকিম বলেন, ঢাকার বাইরে সেবা নিয়ে যেতে পারছি না কারণ সেখানে ট্রান্সমিশন খরচ বেশী, ঢাকায় যেটা এক হাজারে দিতে পারি সেখানে তা আড়াই হাজারের বেশী হয়। ট্রান্সমিশন খরচ বেশী হওয়ায় তা সম্ভব হচ্ছে না। ট্রান্সমিশন খরচ এবং স্থানীয় মাস্তানদের জন্য কোয়ালিটি অব সার্ভিস দিতে পারছি না। ট্রান্সমিশন লাইসেন্স আইএসপিদের দিলে এ খরচ কমে আসবে।
গ্রামীণফোনের ডেপুটি সিইও ইয়াসির আজমান বলেন, ৭ কোটি মানুষের বেশী গ্রাহককে আমরা কোয়ালিটি অব সার্ভিস দিচ্ছি। অপারেটররা নিরবিচ্ছিন্নভাবে বিনিয়োগ অব্যাহত রেখেছে। জিপি’র এখন এমন একটি সাইটও নেই, যেখানে ডাটা কানেকশন নেই।
অ্যামটবের সাবেক সেক্রেটারি টিআইএম নুরুল কবির বলেন, একজন আরেকজনকে দোষারোপ করাতে গ্রাহক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। একটি গ্রাউন্ড লেবেল স্টাডি দরকার আসলে সমস্যাটা কোথায়। আমাদের কোন ন্যাশনাল মাস্টার প্ল্যান নেই, এই প্ল্যান করে দেখতে হবে আমাদের লক্ষ্যটা কি আর আমরা কোথায় যেতে চাচ্ছি। এনটিটিএনদের গতি আরো বাড়াতে হবে, কোয়ালিটি অব সার্ভিস নিশ্চিত করতে হবে।
ফাইবার অ্যাট হোমের চেয়ারম্যান মইনুল হক সিদ্দিকী বলেন, তিনটি বিষয় এখানো আলোচনা হচ্ছে কোয়ালিটি অব সার্ভিস, অ্যাভিলিটিভি ও প্রাইজ। ১৪ লাখ টাকার ট্রান্সমিশন ৪০ হাজার টাকা নেমে এসেছে, ইওয়ান ৪০০টাকায় নেমে এসেছে। গ্রাহককে আরো সস্তায় ইন্টারনেট সেবা দেওয়া যায় এবং যারা এ সেবার বাইরে তাদের আরো কিভাবে সহজ লভ্য করা যায় সেভাবে চিন্তা করতে হবে।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সামিট কমিউনিকেশন এর প্রধান নির্বাহী আরিফ আল ইসলাম, রবির রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স ভাইস প্রেসিডেন্ট অনামিকা ভক্ত, টিআরএনবি সভাপতি মুহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম, সেক্রেটারি সামির কুমার দে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।