Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বুুড়িগঙ্গায় নৌকাডুবি

২০ ঘণ্টায় এক লাশ উদ্ধার নিখোঁজ ৫ : তদন্ত কমিটি গঠন, স্বজনদের আহাজারি

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৯ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

রাজধানীর সদরঘাট সংলগ্ন বুুড়িগঙ্গা নদীতে লঞ্চের ধাক্কায় নৌকাডুবিতে নিখোঁজ ৬জনের মধ্যে জামশিদা (২০) নামে এক নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও পাঁচজন নিখোঁজ রয়েছেন। এদের সন্ধানে কাজ করছে নৌবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুুরি দলের তিনটি ইউনিট। গতকাল শুক্রবার দুপুরের দিকে বুড়িগঙ্গার তেলঘাট ও রহমান সাহেবের ডকের মধ্যবর্তী এলাকা থেকে জামশিদার লাশ উদ্ধার করা হয়। গত ২০ ঘন্টায়ও নিখোঁজদের লাশ উদ্ধার না হওয়ায় সাধারন মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এ ঘটনায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডাব্লিউটিএ) ৩সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। আগামী ৩কার্যদিবসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এখনো নিহত জামসিদার স্বামী দেলোয়ার হোসেন (৩৮), একমাত্র ৬ মাসের সন্তান জুনায়েদ, ভাই শাহজালালের স্ত্রী সাহিদা বেগম (৩২) এবং ভাইয়ের দুই কন্যা মীম(৮) ও মাহী(৬) এখনো নিখোঁজ রয়েছে। এ ছাড়া শাহজালাল নামে একজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ওই ঘটনার পর শত শত সাধারন মানুষ নদীর তীরে এসে জড়ো হয়। গতকাল সকাল থেকে নিখোঁজদের আত্মীয়-স্বজনের পাশাপাশি স্থানীয় লোকজন নদীর তীরে এসে অবস্থান নেয়। এ সময় স্বজনদের আহাজারি করতে দেখা গেছে। তাদের সবার বাড়ি শরীয়তপুর জেলার শখিপুর থানা এলাকায়।
পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম বলেন, সমন্বিতভাবে উদ্ধারকার্য জোরদার করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সব ধরনের চেষ্টা চলছে। প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতদের আত্মীয়-স্বজনের বরাত দিয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার এসআই আব্দুর রাজ্জাক জানান, গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কামরাঙ্গিরচর থেকে একই পরিবারের সাত জন যাত্রী নিয়ে একটি নৌকা সদরঘাট টার্মিনালের দিকে যাচ্ছিল। সেখান থেকে লঞ্চে করে শরীয়তপুরে এক বিয়ে বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল তাদের। একই সময়ে টার্মিনাল থেকে বরিশালের দিকে ছেড়ে যাচ্ছিল লঞ্চ সুরভী। সে সময় ব্যাকগিয়ার দিতে গিয়ে সুরভীর পেছনে ধাক্কা লেগে যাত্রিবাহী নৌকাটি ডুবে যায়। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ও নৌ বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে যৌথ অভিযান শুরু করে। অভিযান এখনও অব্যাহত রয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএ’র যুগ্ম-পরিচালক (সদরঘাট) মো. আরিফ উদ্দিন দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, সুরভী-৭ লঞ্চের ধাক্কায় সংঘটিত এই দুর্ঘটনা তদন্তে বিআইডব্লিউটিএ’র পক্ষ থেকে বন্দর পরিচালককে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রত্যক্ষদর্শী হাসেম মিয়া জানান, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কামরাঙ্গীরচর থেকে শাহজালাল মিয়া তার পরিবারের সাত সদস্য নিয়ে নৌকায় চড়ে সদরঘাটে যাচ্ছিলেন। সদরঘাটের কাছাকাছি পৌঁছলে সুরভী-৭ লঞ্চের পেছন দিকের ধাক্কায় তাদের বহনকারী নৌকাটি ডুবে যায়। এসময় লঞ্চের পেছনে থাকা পাখার আঘাতে শাহজালালের দুই পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পাশে থাকা নৌপুলিশের একটি টহল টিম শাহজালালকে উদ্ধার করে মিডফোর্ড হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে পঙ্গু হাসপাতালে পাঠায়।
তিনি বলেন, শাহজালালকে উদ্ধার করা সম্ভব হলেও পানিতে তলিয়ে যায় পরিবারের অন্য সদস্যরা। রাত থেকে বিরতিহীনভাবে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে বিআইডব্লিউটিএ, ফায়ার সার্ভিস, নৌ-পুলিশ, নৌ-বাহিনী ও কোস্টগার্ডের সদস্যরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: লাশ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ