পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
ইনকিলাব ডেস্ক : পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে ক্রমাগত মার্কিন ড্রোন হামলায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে আল-কায়েদা। সিরিয়া ও ইরাকের বেশ কিছু অঞ্চল দখলে নিয়ে নিজেদের ঘোষিত খিলাফত গড়ে তুলেছে ইসলামিক স্টেট (আইএস)। এ অবস্থায় আইএসকে ইসলামী জিহাদি সংগঠন হিসেবে স্বীকৃতি না দেওয়া আল-কায়েদা সিরিয়ায় ইসলামিক আমিরাত গড়ে তোলার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। সম্প্রতি ইউরোপীয় এবং মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থা ও সন্ত্রাসবাদ-বিরোধী পর্যবেক্ষকরা জানিয়েছেন, গোপনে বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ আল-কায়েদা নেতাকে ইতোমধ্যে সিরিয়ায় পাঠানো হয়েছে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর এক প্রতিবেদনে পশ্চিমা কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে, সন্ত্রাসী তৎপরতার উর্বর ভূমি হয়ে ওঠা সিরিয়ায় সম্প্রতি আইএস ও আল-কায়েদার সহযোগী সংগঠন নুসরা ফ্রন্টের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ লক্ষ্য করা গেছে। নুসরা ফ্রন্টকে সহযোগিতার জন্য আল-কায়েদা কয়েকজন নেতাকে সেখানে পাঠিয়েছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আল-কায়েদার লক্ষ্য সিরিয়ায় একটি বিকল্প কেন্দ্র গড়ে তোলা এবং সেখানে কথিত ইসলামিক আমিরাত গড়ে তোলা। সংগঠনটির প্রধান নেতা আয়মান আল-জাওয়াহিরি এ লক্ষ্যে ২০১৩ সালে জ্যেষ্ঠ নেতাদের সিরিয়ায় পাঠান। এর এক বছর পর আল-কায়েদার পক্ষ থেকে সিরিয়ায় খোরাসান নামের একটি গ্রুপ পাঠানো হয়। মার্কিন প্রশাসনের দাবি, পশ্চিমা লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানোর জন্যই এই গ্রুপটিকে সিরিয়ায় পাঠানো হয়েছে। পশ্চিমা বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, সিরিয়ায় ঘাঁটি গড়ে তুলতে পারলে আল-কায়েদা আরও শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে। সিরিয়া থেকে ইউরোপে হামলা চালানো যেমন তাদের জন্য সহজ হবে, সেই সঙ্গে আশপাশের দেশগুলো থেকে নতুন কর্মী, সমরাস্ত্র ও রসদ সংগ্রহ করাটা হবে অনেক সহজতর। যুক্তরাষ্ট্রের মিডল ইস্ট ইনস্টিটিউট-এর জ্যেষ্ঠ গবেষক চার্লস লিস্টার চলতি মাসে ফরেন পলিসি পত্রিকায় লিখেছেন, একটি আল-কায়েদা আমিরাত এবং কেন্দ্রীয় আল-কায়েদা নেতৃত্ব সংগঠনটির বৈশ্বিক চেহারায় নতুন রূপ দিতে পারে। লিস্টার আল-কায়েদাকে আইএস-এর তুলনায় অনেক স্মার্ট, কৌশলী এবং অধ্যবসায়ী বলে উল্লেখ করে সতর্ক করে বলেন, সুন্নি মতাবলম্বী সংগঠনটি সিরীয় সুন্নিদের আকৃষ্ট করতে পারে। সিআইএ পরিচালক জন ও’ব্রেনান চলতি মাসে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসিকে বলেছেন, আমরা আল-কায়েদার একটা বড় অংশ ধ্বংস করতে পেরেছি। কিন্তু এটি সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করা যায়নি। তাই তারা কি করছে, সে সম্পর্কে আমাদের সদা সজাগ থাকতে হবে। মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সিরিয়ায় আইএস-এর ১৯ হাজার থেকে ২৫ হাজার সদস্য রয়েছে, সেখানে আল-নুসরা ফ্রন্টের রয়েছে ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার সদস্য। তবে এটা নিশ্চিত নয় সিরিয়ায় কিভাবে আল-কায়েদা নিজেদের ইসলামিক আমিরাত গঠন করবে। ২০১২ সালে সিরিয়ার আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে ইরাকে আল কায়েদার সহযোগী হিসেবে নুসরা ফ্রন্ট গঠিত হয়। কিছুদিন পর আবু বকর আল-বাগদাদি এটাকে ইসলামিক স্টেট হিসেবে ঘোষণা করেন। ওই বছরই যুক্তরাষ্ট্র নুসরা ফ্রন্টকে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করে। কিন্তু ২০১৩ সালে আল-বাগদাদি আইএসআইস গঠনের ঘোষণা দিলে নুসরা ফ্রন্ট আইএসে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং আল-কায়েদার প্রতি আনুগত্য বজায় রাখে। এরপর থেকেই সিরিয়ায় আইএস ও নুসরা ফ্রন্টের মধ্যে সংঘর্ষ চলে আসছে। আল-কায়েদা প্রধান আয়মান আল জাওয়াহিরি রাশিয়া ও পশ্চিমা বিশ্বের কাছ থেকে সিরিয়ার স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। এক অডিও বার্তায় তিনি এ ঐক্যের ডাক দেন। তবে ঐক্য প্রক্রিয়ায় কোনও আমন্ত্রণ পায়নি আইএস। আইএসের সদস্যদেরকে চরমপন্থি ও দলত্যাগী হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি। নিউইয়র্ক টাইমস, টাইমস অব ইন্ডিয়া।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।