Inqilab Logo

সোমবার ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

তৌহিদুরের বিরুদ্ধে ফান্ড তছরুপ চুরি, প্রতারণা ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ প্রমাণিত

ঝিনাইদহ ইসলামী ফাউন্ডেশনের ফিল্ড অফিসার

ঝিনাইদহ জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৬ মার্চ, ২০১৯, ৪:৩৫ পিএম

ইসলামী ফাউন্ডেশন ঝিনাইদহ জেলা কার্যালয়ের ফিল্ড অফিসার (এফও) মোহাম্মদ তৌহিদুর রহমানের বিরুদ্ধে সরকারী ফান্ড তছরুপ, চুরি, প্রতারণা, দায়িত্ব পালনে অবহেলা ও অসদাচরণের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। শৈলকুপা থেকে পাঠানো একটি অভিযোগ পত্রের তদন্ত করতে গিয়ে তৌহিদুরের সীমাহীন দুর্নীতির তথ্য পেয়েছে ইসলামী ফাউন্ডেশনের এক সদস্য বিশিষ্ট গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গন শিক্ষা কার্যক্রমের প্রশাসন-১ শাখার সাবেক সহকারী পরিচালক আইয়ুব হোসেন। এ ঘটনায় একটি বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়েছে যার নং ০৩/২০১৯। মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গন শিক্ষা কার্যক্রমের প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম সচিব) মোঃ হাবিবুর রহমান সাক্ষরিত ৩৬৩ নং স্মারক সূত্রে জানা গেছে, জেলা কার্যালয়ের ফিল্ড অফিসার (এফও) মোহাম্মদ তৌহিদুর রহমান ২০১৬ সালে শৈলকুপার নিজ ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকায় ১৩ জন শিক্ষক নিয়োগ করেন। এর মধ্যে ৫ জনই তার আত্মীয় স্বজন। অধিকাংশ কেন্দ্রের মান ভাল না। তৌহিদুর রহমান ফাজিলপুর জামে মসজিদের প্রাক প্রাথমিকে খালাতো ভাই নুর মোহাম্মদ ও মহেশপুর জামে মসজিদ ও মক্তবে আপন ফুফাতো ভাইকে নিয়োগ দিয়ে স্বজনপ্রীতির আশ্রয় নেন। ২০১৬ সালে আরজিনা খাতুন নামে এক শিক্ষক মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গন শিক্ষা প্রকল্পের প্রাক প্রাথমিক কেন্দ্র থেকে সেচ্ছায় অবসর নিলে এফও তৌহিদুর জাল জোচ্চুরির আশ্রয় নিয়ে ওই শিক্ষিকার নামে ভুয়া চেক তৈরী করে তার আপন বড় বোন কামরুন নাহার কনাকে প্রদান করেন। এছাড়া দুর্নীতিবাজ তৌহিদ কোন রিসোর্ট সেন্টার পরিদর্শন না করেই মাসে ১২ দিনের টিএডিএ বিল ও মটরসাইকেলের জ্বালানী বাবদ সাড়ে ৫ বছরে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। তার এসব দুর্নীতির কারণে ইসলামী ফাউন্ডেশন চাকরী বিধিমালা ১৯৯৮ এর ৩৯ ক, খ এবং ৩৯ চ বিধিতে দোষি সাব্যস্ত করে ১০ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ ও ব্যক্তিগত কোন শুনানীর প্রত্যাশা করেন কিনা তা জানাতে বলা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ফিল্ড অফিসার (এফও) মোহাম্মদ তৌহিদুর রহমান নিজেই দোষ স্বীকার করেছেন। এদিকে ইসলামী ফাউন্ডেশনের শৈলকুপার তমালতলা সাধারণ রিসোর্ট সেন্টারের লাইব্রেরিয়ান পদে এইচএসসি পরীক্ষার সনদ জাল করে তৌহিদুর রহমান তার বড় ভাই আসাদুজ্জামানকে চাকরী দিয়েছেন। শৈলকুপা ডিএম কলেজ থেকে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য একজন শিক্ষার্থীর সনদ জাল করে তার ভাইয়ের নাম বসিয়ে দেওয়া হয়। ইসলামী ফাউন্ডেশনের হেড অফিসের সহকারী পরিচালক আলমান হোসেন তদন্ত করে এ সবের তথ্য পেয়েছেন। তিনি তদন্ত করে দেখেছেন, অনলাইন বা উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যাললের কোন রেজিষ্টারে ২০১৬ সালে আসাদুজ্জামান নামে কেও এইচএসসি পরীক্ষায় পাস করেন নি। তবে ঝিনাইদহ ইসলামী ফাউন্ডেমনের ডিডি আব্দুল হামিদ এই দুর্নীতিবাজকে বাঁচানোর জন্য বিশেষ মিশন নিয়ে কাজ করছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। তবে ডিডি আব্দুল হামিদ এ খবর অস্বীকার করে বলেন, হেড অফিস থেকে তদন্ত করে ঝিনাইদহ জেলা কার্যালয়ের ফিল্ড অফিসার (এফও) মোহাম্মদ তৌহিদুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে। এর একটা কপি আমি পেয়েছি। তিনি বলেন সাধারণ রিসোর্ট সেন্টারের নিয়োগ কর্তা জেলা প্রশাসক। কোন সেন্টারে দুর্নীতি বা জাল সনদে চাকরী করার তথ্য পাওয়া গেছে আমি কেবল হেড অফিসকে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জানাতে পারি। শৈলকুপার তমালতলা সাধারণ রিসোর্ট সেন্টারের লাইব্রেরিয়ান পদে এইচএসসি পরীক্ষার সনদ জাল করে চাকরীরত তৌহিদুর রহমান তার বড় ভাই আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে তিনি ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উপরে জানাবেন বলেও জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রমাণিত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ