নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
উপমহাদেশের বাইরে বাংলাদেশকে প্রতিপক্ষ হিসেবে পেলেই রেকর্ড ভাঙ্গা-গড়ার খেলায় মেতে ওঠে অন্য দলগুলো। চলতি হ্যামিল্টন টেস্টও এর ব্যতিক্রম হচ্ছে না। নিজেদের প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ যে রান করেছে উদ্বোধনী জুটিতে তার চেয়ে বেশি রান করেছে নিউজিল্যান্ড। এটা অবশ্য ম্যাচের দ্বিতীয় দিনের খবর। তৃতীয় দিনে অনেকগুলো ব্যক্তিগত মাইলফলক স্পর্শ করে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ডাবল সঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন দলপতি কেন উইলিয়ামসন। বাংলাদেশের নির্বিষ বোলিংকে নিয়ে টেস্টেও টি-২০ মত ছেলেখেলা করলেন নিল ওয়াগনার ও কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম। ব্ল্যাক ক্যাপ হাহিনীও পেয়েছে তাদের রেকর্ড সংগ্রহ, রেকর্ড লিড।
এই টেস্ট যে পঞ্চম দিনে যাচ্ছে না এটা মোটামুটি নিশ্চিত হয়েছে পরের দেড় সেশনে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে। ১৭৪ রান করতে গিয়ে ৪ উইকেট হারিয়েছে টাইগাররা। এবারো দারুণ বাংলাদেশের দারুণ শুরুটা শেষ হয়েছেই নিমিষেই। মাহমুদউল্লাহর দলকে এখন চোখ রাঙাচ্ছে ইনিংস হারের লজ্জা। স্বগতিকদের আবার ব্যাটিয়ে পাঠাতে হলে হাতের ৬ উইকেটে এখনো করতে হবে ৩০৭ রান।
১৯৩০ সাল থেকে টেস্ট খেলছে নিউজিল্যান্ড। দীর্ঘ এই সময়ে কত অনেক কোচের সান্নিধ্যে এসেছে দলটি। কিন্তু ম্যাকমিলানের সময়েই তারা প্রথম দেখা পেলো সাতশোর্ধো রানের দেখা। ম্যাচ পরবর্তি সংবাদ সম্মেলনে আসেন দলের একসময়ের খেলোয়াড় ম্যাকমিলান। সেখানে জানালেন, কোনো রেকর্ডের জন্য খেলেনি তার দল। দীর্ঘ সময় ব্যাট করার পরিকল্পনা থেকেই রেকর্ড হয়ে গেছে বলে জানান তিনি, ‘সর্বোচ্চ রানের মাইলফলক নিয়ে আমরা ভাবছিলাম না। আমরা দীর্ঘ সময় নিয়ে ব্যাট করতে চেয়েছি।’
ব্যাটিং বান্ধব উইকেটের সুবিধা কাজে লাগিয়ে ৬ উইকেটে ৭১৫ রান করে নিউজিল্যান্ড তাদের প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে। দলের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন দ্বিতীয়বারের মত ক্যারিয়ারে দ্বি-শতক স্পর্শ করেই ইনিংস ঘোষণা করেন। এ প্রসঙ্গে ম্যাকমিলান বলেন, ‘উইলিয়ামসন তার দ্বি-শতক পূর্ণ করার পর মনে করেছে ইনিংস ঘোষণা করার এটাই সময়। আর আমরা চাচ্ছিলাম বোলাররা তরতাজা উইকেট পাক; দিনের শেষভাগে ঘণ্টাখানেক সময় নয় শুধু।’
রেকর্ডের লক্ষ্যে না খেললেও ৭১৫ রানের মাইলফলক ঐতিহাসিক মর্যাদা পাচ্ছে কিউইদের ব্যাটিং কোচের কাছে, ‘অবশ্যই, আমরা যে পরিমাণ রান করেছি তা ঐতিহাসিক কাতারে। এই ইনিংসে ব্যাটসম্যানরা দারুণ অবদান রেখেছে। যারা ভালো করেছে তারা বেশ গর্ব বোধ করছে।’
বাংলাদেশি বোলারদের বিপক্ষে উইলিয়ামসনের ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকানো সহজ ছিল না জানিয়ে উইলিয়ামসনদের ব্যাটিং শিক্ষকের ভাষ্য, ‘এটা সহজ ছিল না ওর জন্য। এর পেছনে ওর অনেক কঠোর শ্রম আছে। এই কঠোর শ্রম তাকে এভাবে খেলতে সাহায্য করেছে। সে উইকেটের চারপাশে খেলতে পারে। সবকিছু মিলিয়ে এটা দারুণ এক ইনিংস ছিল।’
ম্যাকমিলান অবশ্য ভদ্রতার খাতিরেই বাংলাদেশী বোলারদের সম্মান দিলেন। বাস্তবে বলার মত কিছুই করতে পারেননি মিরাজ-জায়েদ-এবাদত-খালেদরা। কিউইদের কোন পরীক্ষায়ই ফেলতে পারেননি তারা। ইনিংস ঘোষণা না করলে স্বাগতিকদের সংগ্রহ আটশ ছাড়াতো নিমিষেই। গ্র্যান্ডহোমের রূদ্রমুর্তি সেই কথাই বলছিল। এই অলরাউন্ডার অপরাজিত থাকেন ৫৩ বলে ৪ চার ও ৫ ছক্কায় ৭৬ রানে। তার আগে ৩৫ বলে ৪৭ রানের ঝড় তুলে যান ওয়াগনার। ফিফটি পেয়েছেন নিকোলসও। উইলিয়ামসন তার অপরাজিত ২০০ রানের ইনিংসটি সাজিয়েছেন ২৫৭ বলে ১৯টি চারের সাহায্যে।
বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে কিন্তু মনে হয়নি তারা কোন পরিকল্পনা নিয়ে নেমেছে। অবশ্য পাহাড়সম রান মাথায় নিয়ে ব্যাট করতে গিয়ে বিচলিত হননি তামিম ও সাদমান ইসলাম। দুজনেই খেলছিলেন স্বচ্ছন্দে। হাতছানি দিচ্ছিল শতরানের জুটি। কিন্তু সাদমানকে এক বাউন্সারে কাবু করে ফেরান ওয়াগনার। ৮৮ রানে উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পর মুহূর্তের মধ্যে সব এলোমেলো। ঠিক যেন প্রথম ইনিংসেরই প্রতিচ্ছবি।
ওয়ানডাউনে নেমে এই ইনিংসেও হতাশ করেন মুমিনুল হক। দুই চারে ৬ বল টিকে মাত্র ৮ রান করে ট্রেন্ট বোল্টের বলে টেইলরের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। ব্যর্থ চারে নামা মোহাম্মদ মিঠুনও। রানের খাতা খোলার আগেই গালিতে বোল্টের পাতা ফাঁদে পা হড়কান তিনি। ১১০ রানে তৃতীয় উইকেট হারানের পর তামিমের ব্যাট ভসার নাম হয়ে ওঠে। শট একটু বেশি খেললেও কন্ট্রোল ছিল তামিমের। কিন্তু টিম সাউদির বাউন্সার ডাক করতে গিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন, তার আগে বল তার ব্যাট ছুঁয়ে আশ্রয় নিয়েছে ওয়েটলিংয়ের গ্লাভসে। দিনের বাকিটা সময় ৪৮ রানের জুটিতে পার করেছেন সৌম্য আর মাহমুউল্লাহ। তবে ইনিংস হারের শঙ্কা তাতে একটুও কমেছে বলে মনে হয় না।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ : ২৩৪ ও ৪৩ ওভারে ১৭৪/৪ (তামিম ৭৪, সাদমান ৩৭, মুমিনুল ৮, মিঠুন ০, সৌম্য ৩৯*, মাহমুদউল্লাহ ১৫*; বোল্ট ২/৫৩, সাউদি ১/৫৪, গ্র্যান্ডহোম ০/১৫, ওয়েগনার ১/৪৮, অ্যাস্টল ০/৪)।
নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংস : ১৬৩ ওভারে ৭১৫/৬ (আগের দিন ৪৫১/৪) (রাভাল ১৩২, ল্যাথাম ১৬১, উইলিয়ামসন ২০০* টেইলর ৪, নিকোলাস ৫৩, ওয়েগনার ৪৭, ওয়েটলিং ৩১, গ্র্যান্ডহোম ৭৬; জায়েদ, ০/১০৩, ইবাদত ১/১০৭, খালেদ ০/১৪৯, সৌম্য ২/৬৮, মিরাজ ২/২৪৬, মাহমুদউল্লাহ ১/৩, মুমিনুল ০/৩২)। *তৃতীয় দিন শেষে নিউজিল্যান্ড ৩০৭ রানে এগিয়ে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।