Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চিকিৎসাধীন ১১ জনকে প্রধানমন্ত্রীর অনুদান

চকবাজার ট্র্যাজেডি

স্টাফ রিপোর্টার : | প্রকাশের সময় : ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

রাজধানীর চকবাজারে অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন ১১ জনকে প্রধানমন্ত্রীর অনুদানের টাকা হস্তান্তর করা হয়েছে। গতকাল দুপুর সোয়া ১টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের কনফারেন্স রুমে রোগী ও স্বজনদের হাতে এই টাকা তুলে দেওয়া হয়। বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দীন প্রত্যেক রোগীর পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা করে তুলে দেন। এদিকে, বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন রোগীদের দেখতে গতকাল হাসপাতালে আসেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। তিনি রোগীদের খোঁজ খবর নেন।

ঢামেক সূত্রে জানা গেছে, বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন ৯ জন ও অন্য ইউনিটের দুইজন রোগীর পরিবারকে অনুদানের টাকা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে- বার্ন ইউনিটের রোগী হেলাল নিজে টাকা গ্রহণ করেন। এছাড়া রোগী আনোয়ারের স্ত্রী হাজেরা বেগম, মাহমুদুলের স্ত্রী পারভিন আক্তার, রেজাউলের মা হোসনে আরা বেগম, সোহাগের মা বেদানা বেগম, জাকিরের স্ত্রী খোদেজা বেগম, মোজাফফরের স্ত্রী রেনু বেগম, সেলিমের মা তাসলিমা বেগম ও সালাহ উদ্দিনের মা সুবর্ণা আক্তার অনুদানের টাকা গ্রহণ করেন। এছাড়া অন্য ইউনিটে ভর্তি রবিউলের বাবা আব্দুল মজিদ ও কাওসারের মা রাশেদা বেগম এ টাকা নেন।
অনুদান প্রদানকালে শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়কারী ডা. সামন্ত লাল সেন, ঢামেকের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দীন ও বার্ন ইউনিটের পরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজে প্রত্যেক রোগীকে ৫০ হাজার টাকা করে অনুদান দিয়েছেন। তিনি এই টাকা আপনাদের পরিবারের জন্য খরচ করতে বলেছেন। তবে রোগীদের চিকিৎসা ও ওষুধ খরচ হাসপাতাল থেকেই দেওয়া হবে।
মোস্তফা জালাল মহিউদ্দীন বলেন, প্রধানমন্ত্রী এমন পরিস্থিতে নিজেকে স্থির রাখতে পারেন না। তিনি জেগে থেকে সবার খোঁজ নিয়েছেন। এ ধরনের ঘটনা কারও কাম্য নয়। প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যে পুরান ঢাকা থেকে সব কেমিক্যাল গোডাউন ও কারখানা সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। সরানোর কাজ শুরু হয়ে গেছে।
বার্ন ইউনিটের ৯ জনই আইসিউতে
রাজধানীর চকবজারের চুড়িহাট্টার অগ্নিকাণ্ডে বার্ন ইউনিটে ভর্তি চিকিৎসাধীন ৯ জনকে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে। তাদের প্রত্যেকের শ্বাসনালী পুড়ে গেছে। যার কারণে কাউকেই আশঙ্কামুক্ত বলা যাচ্ছে না। ডা. সামন্তলাল বলেন, আইসিইউতে ভর্তি ৯ জনের মধ্যে আনোয়ার হোসেনের (৪৫) শরীরের ২৮ শতাংশ, রেজাউল করিমের (২১) ৫১ শতাংশ, মো. সোহাগের (২২) ৬০ শতাংশ, জাকির হোসেনের (৩৫) ৩৫ শতাংশ, মোজাফফর হোসেনের (৩২) ৩০ শতাংশ, মাহমুদ হকের (৫৭) ১৩ শতাংশ, মো. সেলিমের (৪৫) ১৪ শতাংশ, মো. হেলালের (১৮) ১৬ শতাংশ ও মো. সালাহ উদ্দিনের (৩৫) শরীরের ১০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বুধবার পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ওয়াহেদ ম্যানশনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ৬৭ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে বলে ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে। এ ঘটনায় অনেকে আহত হন। এদিকে, গত শনিবার ঢামেকের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন রোগীদের দেখতে এসে প্রত্যেকের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়ার ঘোষণ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
নিহতদের খোঁজে গতকালও মর্গে স্বজনরা
এদিকে, গতকালও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গের সামনে নিখোঁজ স্বজনদের সন্ধ্যানে অনেকে এসে ভীড় করেন। এর মধ্যে কেউ কেউ আগেই ডিএনএর নমুনা জমা দিয়ে গেছেন। তবে নতুন করেও কেউ কেউ এসে ডিএনএর স্যাম্পল দিয়েছেন।
ঢামেক সূত্র জানায়, অগ্নিকাণ্ডের দিন চকবাজার এলাকায় অটোরিকসা চালক মো. ইব্রাহিম নিখোঁজ হয়। স্বজনদের ধারণা, আগুনের ইব্রাহিমের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। তাই গতকাল নিখোঁজ ইব্রাহিমের খোঁজে তার মেয়ে নাসিমা আক্তার (১০) মা ও চাচা ঢামেকে আসেন।
এছাড়া হাসান আলী নামে এক বাবাও এসেছেন তার ছেলে শাহাবুদ্দীনের খোঁজে। অন্যদের সাথে তিনিও সিআইডির কাছে ডিএনএর স্যাম্পল জমা দেন। স্যাম্পল সংগ্রহকালে সিআইডির ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ ডেস্কে বসে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ