Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

কুমিল্লায় সড়ক-মহাসড়কে যন্ত্রঘাতক ঘটছে দুর্ঘটনা, ঝরছে তাজা প্রাণ

| প্রকাশের সময় : ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

কুমিল্লা থেকে সাদিক মামুন : সড়কে চলাচলের জন্য দেয়া হয়না পারমিট। এরপরও চলছে। স্থানীয় সন্ত্রাসী ও বিভিন্ন মাধ্যমকে ম্যানেজ করে কুমিল্লা জেলায় পাঁচ হাজারের বেশি ট্রাক্টর ছোটবড় সড়কে বেপোরোয়া চলাচল করছে। এতে ভোগান্তির পাশাপাশি বাড়ছে দুর্ঘটনা। সড়কে ঝরে পড়ছে তরতাজা প্রাণ। সড়কে চলাচলের জন্য এটিকে কোন ধরণের পারমিট দেয়া হয়না।

আমদানী করা এসব ট্রাক্টর যান্ত্রিক কৃষি উপকরণ হিসেবে আনা হয়। কৃষকের চাষাবাদের সুবিধার্থে কিস্তিতে কেনার সুযোগও রয়েছে। আশির দশকে এসে এই ট্রাক্টরের পেছনে ৪টি ছোট চাকাওয়ালা কাঠ বডি সংযুক্ত করে এটিকে মিনি ট্রাকে রূপান্তর করে জমি কর্ষণের পাশাপাশি মালামাল পরিবহনের কাজে লাগানো শুরু হয়। সময়ের সাথে সাথে ইট, মাটি, বালি, রড, সিমেন্ট ইত্যাদি পরিবহনে ট্রাক্টরের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেতে থাকে। গ্রামের পাকা, আধাপাকা এমনকি শহরের সড়কেও ট্রাক্টরের চলাচল বেপরোয়া হয়ে ওঠে। অথচ যানবাহনটি সড়কের চলাচলের কোনোরূপ বৈধতাই নেই। কুমিল্লাতে আমদানিকৃত ট্রাক্টরের ৯৮ভাগই ব্যবহৃত হচ্ছে অবৈধ যানবাহন হিসেবে। আইনের তোয়াক্কা না করে অবাধে বিচরণ করা ট্রাক্টরগুলোর ব্যাপারে কোন মাথা ব্যাথা নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। গত ১৯ ফেব্রæয়ারি কুমিল্লা সদর উপজেলার চাপাপুর এলাকার সড়কে বালুবাহী ট্রাক্টরের চাপায় প্রাণ হারায় ওই এলাকার প্রবাসী হানিফ মিয়ার পাঁচ বছর বয়সী বর্ণমালা কিন্ডারগার্টেনের প্লে-গ্রæপের ছাত্র রিহান। এঘটনার পরদিন শহরতলীর চানপুর বৌবাজারে ইটবাহী ট্রাক্টর মাহিদ নামে এক শিশুকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই সে মারা যায়। এছাড়াও গত দেড়মাসে নাঙ্গলকোট, মুরাদনগর, চান্দিনা, সদর দক্ষিণ, লালমাই ও সদর উপজেলায় ১৫টির বেশি দুঘর্টনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় অনেকেই পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন।

রাস্তাঘাটে শিক্ষার্থীসহ জনসাধারণের চলাচল করতে হচ্ছে দানব ট্রাক্টরের আতঙ্কে। কেবল তাই নয়, এসব ট্রাক্টরের চাকায় পিষ্ট হয়ে নষ্ট হচ্ছে বিভিন্ন এলাকার পাকা রাস্তা। আর গ্রামের মেঠোপথের মাটি আলগা হয়ে পরিণত হচ্ছে ধুলোবালিতে। বেপরোয়া গতি ও কানফাটা আওয়াজে চলাচলকারী ট্রাক্টরের কারণে জনপদে বাড়ছে শব্দ দূষণ। কুমিল্লার পদুয়ার বাজার লাকসাম-চাঁদপুর সড়ক এলাকার একজন ট্রাক্টর বিক্রয় পরিবশেক জানান, ট্রাক্টরগুলো সাধারণত কৃষি উপকরণ হিসেবেই আমরা সরকারি নিয়মনীতি মেনে এনে থাকি। লোকজন কিনে নিয়ে এটিকে কৃষিকাজের পরিবর্তে পণ্য পরিবহনে ব্যবহার করছে।

বিআরটিএ কুমিল্লা সার্কেলের সহকারি পরিচালক আলী আশ্রাফ সিদ্দিকী বলেন, কুমিল্লা জেলায় প্রায় ৫ হাজার ট্রাক্টরের পেছনের অংশে অতিরিক্ত বডি সংযোজন করে সড়কে পন্যবাহী যানবাহন হিসেবে চলাচল করছে। যা সম্পূর্ণরূপে অবৈধ। সড়কে চলাচলের জন্য কোন রুটপারমিট দেয়া হয়নি। আর দেয়ারও বিধান নেই। ট্রাক্টরগুলো যান্ত্রিক কৃষি উপকরণ। ট্রাক্টরগুলোর বেপরোয়া চলাচলে নানাস্থানে প্রতিনিয়ত দূর্ঘটনা ঘটছে। রাস্তাঘাটের ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে ট্রাক্টর নামের এসব অবৈধ যানবাহন আটক করে থাকি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রাণ


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ