পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নেতৃত্ব ও আর্থিক সুবিধার লোভে খন্ড-বিখন্ড হওয়া ইসলামি দলগুলো জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে ঐক্য করতে ব্যর্থ হওয়ায় তাদের প্রায় সব প্রার্থীই জামানত হারিয়েছেন। দলগুলো নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রার্থী দেয়ার ক্ষেত্রে ঐক্যবদ্ধ না হয়ে বিভিন্ন জোটের সাথে সমঝোতা করে এবং এককভাবে নির্বাচন করেও কোনো সফলতা পায়নি। এরপরও ইিসলামি দলগুলোর মধ্যে এর পরও নির্বাচন অথবা ইস্যুভিত্তিক ঐক্যের চিন্তা প্রবল হচ্ছে না, বরং বিভক্তিকেই আকড়ে ধরে রয়েছে। ইসলামি দলগুলোর এ বিভক্তি ও খন্ড বিখন্ড হওয়ার ইতিহাস দলগুলোর জন্মের পর থেকেই শুরু।
স্বাধীনতার পূর্ব থেকেই বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পাটি ও জামায়াতে ইসলামি, বাংলাদেশে রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বেশ কিছু সময় ইসলামি দলগুলোর তৎপরতা না থাকলেও আশির দশকের দিকে উল্লিখিত দু’টি দল ছাড়া, দেশে কওমি ধারার তেমন কোনো ইসলামি দল ছিল না। আশির দশকের মাঝামাঝিতে, হযরত হাফেজ্জী হুজুর (রহ.) তওবার ডাক দিয়ে রাজনীতিতে পদার্পন করেন। তার ডাকে কওমি অঙ্গনের প্রায় সকলেই শরিক হন। কিন্তু পরবর্তীতে নেতৃত্ব ও পরিবারতন্ত্র এবং কওমি বিরোধী চক্রান্তের কারণে এ আন্দোলনও বেশি দূর অগ্রসর হতে পারেনি। নব্বই দশকের দিকে কওমি ভিত্তিক ইসলামি আন্দোলন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলাম পার্টি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম নিয়ে গঠিত ইসলামি ঐক্যজোট জনমনে আশার সঞ্চার করেছিলো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিজেরা জোটবদ্ধ থাকতে পারেনি নেতৃত্ব ও ষড়যন্ত্রের কারনে। পরিনতিতে ইসলামি ঐক্যজোট, জোটের পরিবর্তে এখন একটি দলে পরিনত হয়েছে। অথচ ইসলামি ঐক্যজোট ১৯৯১ সালে মিনার প্রতীকে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করে সিলেটে মাওলানা ওবায়দুল হক এমপি নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে ইসলামি ঐক্যজোট বরগুনায় একটি আসন পায়। পরবর্তীতে জোট মহাজোটের দ্বন্দে ইসলামি ঐক্যজোট থেকে বর্তমান ইসলামী আন্দোলন বের হয়ে যায়। এরপরেও ২০০০ সালের নির্বাচনে ইসলামী ঐক্যজোট জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করে। সকল ইসলামী দলের সমর্থন নিয়ে মুফতি ফজলুল হক আমিনী বি.বাড়িয়া থেকে এমপি নির্বাচিত হন। কিন্তু জোটের রাজনীতিতে অর্ন্তভুক্তির পর ইসলামি দলগুলো বিভক্ত হয়ে পড়ে। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস কওমি অঙ্গনের আলোচিত অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিচিতি লাভ করেও আর্দশিক কারণে দু’ভাগ হযে যায়। সম্প্রতি জমিয়তে উলামায়ে ইসলামও নেতৃত্বের দ্বন্দে দু’ভাগে বিভক্ত হয়েছে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে ইসলামী জনতার প্রত্যাশা ছিলো, ইসলামি দলগুলো সকল ভেদাভেদ ভুলে অন্তত নির্বাচন কেন্দ্রীক অথবা সংসদের আসন ভিত্তিক একটি ইসলামি জোট গঠন করবে। কিন্তু এরূপ জোট গঠিত না হওয়ায় সম্প্রতি জাতীয় নির্বাচনে ইসলামি দলগুলোর একাধিক প্রার্থী একই আসন থেকে নির্বাচন করায় করুণ পরিণতি হয়েছে। একই আসনে একাধিক প্রার্থী দেয়ার কারণে তাদের পরাজয় আগাম বুজে ইসলামি ঘরনার ভোরটারাও তাদেরকে ভোট দেননি।
এমতাবস্থায়, ইসলামি দলগুলোর নেতৃবৃন্দকে ঐক্য প্রক্রিয়ায় এগিয়ে আসা অত্যন্ত জরুরি। কারণ ভবিষ্যতে এক আসনে একক প্রার্থী দিয়ে নির্বাচন করলে, ইসলামি জনতার ভোট ইসলামি দলগুলোর পক্ষে আসবে। তাই সকল ইসলামি নেতৃবিন্দুকে নিজ দলীয় আমিত্ব এবং নেতৃত্বের লোভ ছেড়ে ঐক্য গড়ে তোলা অপরিহার্য বলে মনে করছে ইসলামি অঙ্গন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।