পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
সউদী আরব পাকিস্তানের জন্য রেকর্ড বিনিয়োগ প্যাকেজ প্রস্তুত করছে, যেটা অর্থ সঙ্কটে থাকা পাকিস্তানকে অনেকটাই চাপমুক্ত করবে এবং একই সাথে আঞ্চলিক ভূ-রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার ক্ষেত্রেও সহায়তা করবে বলে বলছেন বিশ্লেষকরা।
বিনিয়োগের কেন্দ্রে রয়েছে ১০ বিলিয়ন ডলারের তেল শোধনাগার ও কমপ্লেক্স - যেটা নির্মিত হবে আরব সাগরের উপকূলের কৌশলগত গোয়াদর বন্দর। বহু বিলিয়ন ডলারের চায়না পাকিস্তান ইকোনমিক করিডোরের সবচেয়ে আকর্ষণীয় কেন্দ্র গোয়াদর বন্দরটি ইন্দো-ইরানি বন্দর চাবাহার থেকে খুব একটা দূরে নয়। দুটো সউদী সূত্র এএফপিকে নিশ্চিত করেছে যে, সউদী ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান শিগগিরই ইসলামাবাদ সফরে যাবেন, যদিও এ ব্যাপারে তারা কোন তারিখের কথা বলেননি। দুই দেশেরই কর্মকর্তারা এএফপিকে জানিয়েছেন যে, এই সফরে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়োগ চুক্তি হবে দুই দেশের মধ্যে।
সউদী লাইফলাইন
সউদী অর্থনীতিবিদ ফাদল আল-বোয়েনাইন বলেন, রিয়াদের বিনিয়োগ পাকিস্তানের ধীর অর্থনীতির জন্য লাইফলাইনের কাজ করবে। দেশটির অর্থনীতি ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে এসঅ্যান্ডপি রেটিংয়ে বি থেকে বি-মাইনাসে নেমে গেছে।
বোয়েনাইন এএফপিকে বলেন, “সউদী বিনিয়োগ পাকিস্তানে যাচ্ছে অর্থনৈতিক সহায়তা প্যাকেজ আকারে। এটা পাকিস্তানের বিদেশী ঋণের চাপ এবং বিদেশী মুদ্রার ঘাটতি কমাবে, এবং একই সাথে দুর্বল অর্থনীতিকেও শক্তিশালী করবে”।
তিনি বলেন, ওপেক সদস্য সউদী আরব এই বিনিয়োগের মাধ্যমে বাণিজ্যিক লক্ষ্য পূরণ ছাড়াও অবকাঠামো ও শোধনাগার প্রকল্পে বিনিয়োগের চিন্তা-ভাবনা করছে।
সউদী আরব ও তার উপসাগরীয় সহযোগী দেশ আরব আমিরাত এরই মধ্যে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংককে ৩ বিলিয়ন ডলার করে সহায়তা করেছে, যাতে পাকিস্তান ঋণ পরিশোধের সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে পারে।
সরবরাহের সময়কাল কমিয়ে আনা
অন্যান্য তেল রফতানিকারক দেশগুলোর মতো বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেল রফতানিকারক দেশ সউদী আরবও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তেল শোধনাগার এবং পেট্রোকেমিক্যালস প্রকল্পে ব্যাপক বিনিয়োগ করছে যাতে দীর্ঘমেয়াদে ক্রেতাদের ধরে রাখা যায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গোয়াদর বন্দরের সাথে চীনের সংযোগ স্থাপিত হলে তেল পরিবহনের সময়কাল ৪০ দিন থেকে মাত্র ৭ দিনে নেমে আসবে।
চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের অংশ হিসেবে প্রায় ৬০ বিলিয়ন ডলার ব্যায়ে নির্মিয়মান গোয়াদর বন্দরকে আঞ্চলিক বাণিজ্যের ভবিষ্যৎ কেন্দ্র হিসেবে দেখা হচ্ছে, যেখান থেকে মধ্য এশিয়া, আফগানিস্তান, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকা সহজেই বাণিজ্য করতে পারবে।
বুয়েনাইন বলেন, “চীন ছাড়াও পাকিস্তানের একটি ধনী তৃতীয় পক্ষের প্রয়োজন, যারা অর্থ বিনিয়োগ করতে পারবে”।
ভূ-রাজনৈতিক প্রভাব
ডোর্সে বলেছেন, গোয়াদরে যে কোন ধরনের সউদী বিনিয়োগের একটি ভূ-রাজনৈতিক দিক রয়েছে। ইরান গত বছরের শেষের দিকে চাবাহার বন্দর উদ্বোধন করেছে, যেটার মাধ্যমে স্থলবেষ্টিত আফগানিস্তানের সাথে সরবরাহ রুট গড়ে উঠেছে এবং যেটা ঐতিহাসিক শত্রু পাকিস্তানকে এড়িয়ে ভারতের জন্য বাণিজ্যের পথ খুলে দিয়েছে। ভারত চাবাহারকে আফগানিস্তানে পণ্য সরবরাহ এবং মধ্য এশিয়া ও আফ্রিকার সাথে বাণিজ্যের উপায় হিসেবেও দেখছে।
কিন্তু রিয়াদের ইন্দো-পাক দ্ব›েদ্ব জড়ানোর সম্ভাবনা কম এবং সউদী আরবের নয়াদিল্লীর সাথে গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি চুক্তিও রয়েছে, যেখানে তেলের চাহিদা ক্রমেই বাড়ছে। এপ্রিল মাসে সউদী আরবে পশ্চিম ভারতে বিশাল তেল শোধনাগার এবং পেট্রোকেমিক্যাল কমপ্লেক্স নির্মাণের জন্য ৪৪ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি করেছে। সূত্র : এসএএম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।