Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাইক নিয়ে দিল্লির গৃহবধূর দুর্গম গিরিপথ জয়

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ৮:৪৭ পিএম

বাবার বাইকের পিছনের বসে ঘুরে বেড়াতে ভাল লাগত তার। সেই থেকেই শুরু বাইকের প্রতি প্রেম পল্লবী ফৌজদারের। বিশ্বের অন্যতম সেরা বাইকারদের মধ্যে নাম রয়েছে ৩৯ বছর বয়সের ভারতীয় এই গৃহবধূরও।

শুরুটা হয়েছিল বেঙ্গালুরু, উধমপুর, লখনউ, জম্মু, শ্রীনগর, পঞ্জাব, এই শহরগুলোয় একা বাইক চালিয়ে ঘুরে বেড়ানোর নেশা থেকে। তবে বাধা এসেছে তো বটেই। বছর চারেক আগে প্রথম বার যখন মাউন্টেন বাইকিং শুরু করলেন, এক ছেলের বয়স ছয়, অন্য জনের নয়। ছেলেদের প্রতি দায়িত্ব নেই, এমন কথাও শুনতে হয়েছে তাকে।পল্লবীর স্বামী পরীক্ষিৎ মিশ্র একজন সেনা অফিসার। তিনি পাশে না থাকলে একা গৃহবধূর পক্ষে লড়াইটা সম্ভব হত না বলে জানিয়েছেন দুই ছেলের মা পল্লবী। তিনিই একমাত্র ব্যক্তি, যিনি ভারতের অন্যতম কঠিন গিরিপথ উমলিংলা পাস, সাথাতোলা পাস ও মানা পাস জয় করেছেন বাইক চড়ে।

২০১৫ সালের ৭ জুলাই প্রথম একা লাদাখে যান বাইক চালিয়ে। দিল্লি থেকে লেহ-র ৩০০০ কিমি পথ পাড়ি দেন তিনি। সেই থেকে শুরু। ১৬টি পাস ইতিমধ্যেই জয় করে ফেলেছেন তিনি। যার মধ্যে আটটির উচ্চতা ৫ হাজার মিটারের উপরে।

দু’মাস ধরে ওই পথের উপর গবেষণা চালিয়ে হাতে মানচিত্র এঁকে ফেলেন গোটা এলাকার। মনের জোর হারাননি পল্লবী। মাত্র ২০ দিনে তিনি লাদাখের মোট আটটি পাস জয় করেন। ৫০০ টাকা প্রতি লিটার পেট্রলের খরচ ছিল লেহ-তে। সঙ্গে ছিল জিপিএস ও উচ্চ প্রযুক্তির ক্যামেরা।

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে পাঁচ হাজার মিটার উচ্চতায় অবস্থিত আটটি পাস জয় করেন তিনি, তাও প্রথম বারের চেষ্টাতেই। পল্লবী ইতিমধ্যেই নাম তুলেছেন লিমকা বুক অব রেকর্ডসে।

খারদুং লা, লাচুলং লা, তাগলাং লা, মারসিমিক লা, চাং লা-এই পাঁচটি পাস একই যাত্রাপথে জয় করেছেন বেশ কয়েক জন বাইকার। তবে পল্লবী এ ছাড়াও সাথাথো লা, কাকসাং লা ও হরি লা জয় করেছেন একই পথে। মহিলা তো বটেই, কোনও পুরুষ বাইকারও জয় করেননি এই গিরিপথ।

তিনি যে বার অন্যতম কঠিন ‘মোটরেবল মাউন্টেন পাস’ জয় করছেন, সেই একই বছর একই পথে মারাত্মক খারাপ আবহাওয়ায় প্রাণ হারান ৩০ জন। প্রথম মহিলা হিসাবে মানা পাস জয় করেছেন তিনি। যার উচ্চতা প্রায় ৫৬৩৮ মিটার। একটা ওল্ড কাস্ট আয়রন বুলেট, একটা ট্রায়াম্ফ, একটা ডুকাটি স্ক্র্যাম্বলার আর একটা অ্যাভেঞ্জার। এই ‘বন্ধুদের’ সাহায্যেই যাবতীয় গিরিপথ জয় করেছেন পল্লবী।

২০১৭ সালে রাষ্ট্রপতির থেকে পেয়েছেন নারীশক্তি সম্মান। উত্তরপ্রদেশ সরকারও তাকে ‘আউটস্ট্যান্ডিং গ্লোবাল উইম্যান’ সম্মানে ভূষিত করে। একটি নতুন গিরিপথও আবিষ্কার করেছেন তিনি। নিজের বাইক ট্রায়াম্ফ বনিভিলের নামে সেই পাসের নাম রেখেছেন বনি লা।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাইক


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ