পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
রফতানি আয়ে ইতিবাচক ধারা ধরে রেখেছে বাংলাদেশ। টানা পাঁচ মাস ধরে বাড়ছে অর্থনীতির অন্যতম প্রধান এই সূচক। চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-জানুয়ারি) বিভিন্ন পণ্য রফতানি করে বাংলাদেশ দুই হাজার ৪১৮ কোটি (২৪ দশমিক ১৮ বিলিয়ন) ডলার আয় করেছে। এই অংক লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮ শতাংশ বেশি। আর গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে আয় বেশি এসেছে ১৪ দশমিক ৩৯ শতাংশ। সর্বশেষ জানুয়ারি মাসে পণ্য রফতানি থেকে আগের বছরের একই মাসের তুলনায় ৮ শতাংশ বেশি অর্থ দেশে এসেছে।
ভোটের পর স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ বিরাজ করায় আগামী মাসগুলোতে রফতানি আয় আরও বাড়বে বলে আশা করছেন অর্থনীতির বিশ্লেষক, ব্যাংকার এবং রফতানিকারকরা। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষক জায়েদ বখত বলেন, এমনিতেই রফতানি আয়ে বেশ গতি ছিল। ১৪/১৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি খুবই ভালো। নির্বাচনের পর শেখ হাসিনার সরকারই দায়িত্ব নিয়েছে। কোন অস্থিরতা নেই। সরকারের ধারাবাহিকতায় উন্নয়নের ধারাবাহিকতা থাকে। রফতানি বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও তাই হবে।
৩০ জানুয়ারি চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের মুদ্রানীতি ঘোষণার সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেন, মুদ্রানীতির অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে সমর্থন যোগানো। সেই লক্ষ্য অর্জনে ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরের ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধির ইতিবাচক ধারা চলতি অর্থবছরেও অব্যাহত রয়েছে। ডিসেম্বর নাগাদ দেশজ ও বৈদেশিক চাহিদার সূত্রে উৎপাদন কর্মকান্ডের জন্য উপকরণাদি আমদানি ১৭ দশমিক ৯২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি এবং রফতানির ১৪ দশমিক ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি তারই সাক্ষ্য।
উৎপাদন কর্মকান্ডে কোন বিঘœ ব্যতিরেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর অর্থবর্ষের দ্বিতীয়ার্ধে বিনিয়োগ ও উৎপাদন কর্মকান্ডের ধারা আরও জোরালো হবে প্রত্যাশা করা যায়। তৈরি পোশাক রফতানির উপর ভর করেই লক্ষ্যমাত্রা ছাড়ানো সম্ভব হয়েছে জানিয়ে বিজিএমইএর সহ-সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, আমাদের পোশাকের প্রতি ক্রেতাদের আস্থা বেড়েছে। আমরা এখন বেশি দামের পোশাকও রফতানি করছি। নতুন নতুন বাজারে প্রবেশ করছি আমরা। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) রফতানি আয়ের হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) বিভিন্ন পণ্য রফতানি থেকে দুই হাজার ৪১৭ কোটি ৯৬ লাখ ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ। এই অংক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৪ দশমিক ৩৯ শতাংশ বেশি। এই ছয় মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেড়েছে ৭ দশমিক ৯১ শতাংশ।
জুলাই-জানুয়ারি সময়ে রফতানি আয়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছিল দুই হাজার ২৪০ কোটি ৭০ লাখ ডলার। গত বছরের এই সাত মাসে আয় হয়েছিল দুই হাজার ১৩২ কোটি ৪৯ লাখ ডলার।
জানুয়ারিতে ৩৬৭ কোটি ৯৭ লাখ ডলার রফতানি আয় দেশে এসেছে। এই মাসে লক্ষ্য ধরা ছিল ৩৬২ কোটি ২০ লাখ ডলার। গত বছরের জানুয়ারিতে আয় হয়েছিল ৩৪০ কোটি ৮৮ লাখ ডলার। এ হিসাবে জানুয়ারি মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেড়েছে ১ দশমিক ৫৯ শতাংশ।আর পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিতে (মাসভিত্তিক) আয় বেড়েছে ৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ।
ইপিবির তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, জুলাই-জানুয়ারি সময়ে মোট রফতানি আয়ের ৮৩ দশমিক ৬১ শতাংশই এসেছে তৈরি পোশাক রফতানি থেকে। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৪ দশমিক ৫১ শতাংশ। অর্থাৎ ২৪ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে ২০ দশমিক ২৮ বিলিয়ন ডলারই এসেছে এ খাত থেকে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।