পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ত্রিশ হাজার কোটি টাকা চুরি করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি রাফাল চুক্তি নিয়ে আলাদাভাবে দরাদরি চালিয়েছেন। রাফাল নিয়ে সংবাদপত্রে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন তুলে ধরে এই অভিযোগ করলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। বহুদিন ধরেই প্রধানমন্ত্রীকে ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’ বলে দাবি করে আসছিলেন রাহুল। গতকাল সকালে রাহুল বলেন, এদিন প্রকাশিত প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়েছে, রাফাল প্রতিরক্ষা চুক্তি নিয়ে যখন ভারত ও ফ্রান্সের মধ্যে দরাদরি চলছিল, তখন প্রধানমন্ত্রীর দফতরের চালানো সমান্তরাল দরাদরি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। সেই রিপোর্ট তুলে ধরে সাংবাদিক সম্মেলন করে রাহুল গান্ধী অভিযোগ করেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজে বিমান বাহিনীর ৩০ হাজার কোটি টাকা চুরি করে তাঁর বন্ধু অনিল আম্বানিকে দিয়েছেন। একটি প্রতিবেদনে সামনে এসেছে, যেখানে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, ফ্রান্স সরকারের সঙ্গে সমান্তরাল দরাদরি চালাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী।’
রাফাল চুক্তির তদন্তে ফের যৌথ সংসদীয় কমিটি গঠনের দাবি জানিয়ে রাহুল গান্ধী বলেন, ‘চৌকিদারই যে চোর তা আবার প্রমাণিত হল। আমরা বারবার বলে আসছি এ ব্যাপারে জেপিসি তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। এখন মন্ত্রণালয় নিজেই বলছে, তারা পিএমও-কে বলবে যারা ভারতীয় দরাদরির দলে নেই, তারা যেন সমান্তরাল দরাদরি থেকে সরে আসেন।’
গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর পার্রিকরকে দেখতে গিয়ে তিনি রাফাল প্রসঙ্গ তোলেননি বলে এদিন জানান রাহুল। তাঁর মতে, সেটা ছিল নেহাতই সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ।
এর আগে গতকাল পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হয় যে, অনিল আম্বানিকে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাইয়ে দিতে রাফাল চুক্তিতে হস্তক্ষেপ করেছিল প্রধানমন্ত্রীর দফতর। এর ফলে কংগ্রেস দীর্ঘ দিন যাবত যে অভিযোগ করে আসছে তাতে পানি পেয়ে যায়।
কীভাবে ফের ওই দাবি করছে কংগ্রেস! এর পেছনে রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের একটি নোট। সেটি উঠে এসেছে বিশিষ্ট দৈনিক দ্যা হিন্দু-র একটি প্রতিবেদনে। হিন্দু-র একটি প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, রাফাল চুক্তি নিয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি দরকষাকষি করেছিল প্রধানমন্ত্রীর মন্ত্রণালয়। এনিয়ে তীব্র আপত্তি জানায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
২০১৫ সালের ২৪ নভেম্বর প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় একটি নোট দিয়ে তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পর্রীকরকে বলে, ‘রাফাল চুক্তিতে হস্তক্ষেপ করছে প্রধানমন্ত্রীর দফতর। ‘ওই নোটটি তৈরি করেন তৎকালীন প্রতিরক্ষা সচিব জে মোহন কুমার। ওই নোট লেখা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রীর দফতরের উচিত রাফাল চুক্তি নিয়ে মাথা না গলানো। এতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পদক্ষেপের বিরোধিতা করা হচ্ছে।’
ওই নোটে আরও লেখা হয়, প্রধানমন্ত্রীর দফতর যদি মনে করে ফরাসি সংস্থার সঙ্গে রাফাল যুদ্ধ বিমান কেনার ব্যাপারে ঠিকঠাক দরকষাকষি করতে পারছে না প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় তাহলে তারা চুক্তি নিয়ে নতুন করে কথাবার্তা বলতে পারে। তবে প্রতিরক্ষা সচিব মোহন কুমার গতকাল (শুক্রবার) টুইট করেছেন, ওই নোটে রাফালের দাম সম্পর্কে কোনও কিছু ছিল না। তা ছিল একেবারে চুক্তি করার পদ্ধতিগত দিক নিয়ে।
এ নিয়ে ফের তোপ দাগতে শুরু করেছেন রাহুল গান্ধী। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে টুইট করা প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হয়েছে, রাহুল গান্ধীর একটা সোজাসাপটা প্রশ্ন রয়েছে। সেটি হল, রাফাল চুক্তির কি বিরোধিতা করেছিল প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়!
এ বিষয়টি বরাবরই অস্বীকার করে আসছে বিজেপির সরকার। উড়িয়ে দিয়ে আসছেন নিজেকে ‘জনগণের চৌকিদার’ পরিচয় দিয়ে আসা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
লোকসভায় বৃহস্পতিবার বক্তৃতাকালে মোদি বলেন, রাফাল নিয়ে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে মিথ্যে কথা বলছে কংগ্রেস। প্রথমে বিস্মিত হলেও পরে আমি বুঝতে পারি দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার সময় প্রতিরক্ষাবিষয়ক একটা চুক্তিও সততার সঙ্গে করেনি কংগ্রেস। সব কিছুতেই ওদের কোনো না কোনো মামা-চাচা প্রয়োজন হয়েছে।
তৎকালীন প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া
‘রাফাল চুক্তি নিয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পাঠানো নোটে অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। সবকিছু ঠিকমতো এগোচ্ছে, ভয় পাওয়ার কিছু নেই’। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের পাঠানো নোটের উত্তরে এটাই বলেছিলেন তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পার্রিকর। গতকাল শুক্রবার লোকসভায় রাহুল গান্ধীকে একহাত নিয়ে এরকমই দাবি করেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।
একটি সর্বভারতীয় ইংরেজি পত্রিকা ২০১৫-র ২৪ নভেম্বর তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পাররিকরকে পাঠানো তাঁর মন্ত্রণালয়ের কর্তাদের একটি নোট প্রকাশ করে। সেখানে প্রধানমন্ত্রীর দফতর রাফাল চুক্তিতে নাক গলাচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়। রাফাল চুক্তি নিয়ে পিএমও সমান্তরালভাবে দর কষাকষি করছে বলেও জানানো হয় পার্রিকরকে। এর ফলে ভারতের দর কষাকষির ক্ষমতাও কমে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়।
সংবাদসংস্থা এএনআই এরপর ওই নোটের ভিত্তিতে পার্রিকরের জবাব প্রকাশ করে। সেখানে তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী অফিসারদের বক্তব্যকে ‘অতি-প্রতিক্রিয়া’ বলে ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেন, ‘সবকিছু ঠিক চলছে। ভয় পাওয়ার কিছু নেই। প্রধানমন্ত্রীর দফতর ও ফরাসি প্রেসিডেন্টের অফিস বিষয়টির ওপর নজর রাখছে।’ প্রতিরক্ষাসচিবকে তিনি প্রধানমন্ত্রীর দফতরের মুখ্য সচিবের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি মিটিয়ে নিতে বলেন। সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।