Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খুলনাবাসীর নিত্যসঙ্গী দুর্ভোগ

আবু হেনা মুক্তি | প্রকাশের সময় : ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

ওয়াসার খোঁড়াখুঁড়ি আর ছোট ছোট রাস্তায় মালবাহি বড় বড় ট্রাক অহরহ প্রবেশে যেন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে খুলনাবাসী। তার সাথে অলিতে গলিতে পাল্লা দিয়ে চলছে ইজিবাইক। আর বেপরোয়া গতির দানব হিসেবে পরিচিত মাহেন্দ্রা-অতুল এর জন্য পথচারিরা থাকে আতঙ্কে। সবমিলিয়ে নাস্তানাবুদ হয়ে পড়েছে এ নগরীর আমজনতা। নিয়ম নীতির যেন কোন বালাই নেই নগরীতে।
খুলনায় ওয়াসার কাজে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়িতে রীতিমতো বিরক্ত নগরবাসী। গত দুবছর ধরেই চলছে এসব খোঁড়াখুঁড়ি। চলমান প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য নিয়মিত বিভিন্ন সড়কে খোঁড়াখুঁড়ি হলেও সুষ্ঠু পরিকল্পনার অভাবে নগরবাসীর দুর্ভোগ বাড়ছে বলে মনে করছেন অনেকে। একই সড়ক বারবার কাটা ও দীর্ঘদিন পর্যন্ত সংস্কার না করে রেখে দেয়ায় ভোগান্তি বাড়ছে নগরবাসীর।
ওয়াসার মেগা প্রকল্পের অংশ হিসেবে পানি সরবরাহের লাইন বসাতে বারংবার রাস্তা খোঁড়াখুঁড়িতে নগরীর অধিকাংশ সড়কের বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। পাইপ লাইনের জন্য রাস্তা খোঁড়া হলেও তা মাসের পর মাস স্থায়ী মেরামত না করায় খানাখন্দ ও ছোট বড় গর্তের কারণে ১৬ লাখ নগরবাসী চরম দুর্ভোগে পড়েছে। অভিযোগ উঠেছে একই রাস্তা তিনবার খোঁড়া হয়েছে। তবে দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে দ্রুত রাস্তা সংস্কারের আশ্বাস দিচ্ছে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ।
খুলনা নগরীতে ছোট ছোট রাস্তা ও গলির ভেতরের সড়কগুলোতে মালবাহি বড় বড় ট্রাক অহরহ প্রবেশ করছে। এতে করে সড়কগুলো স্বল্প সময়ের মধ্যে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ওইসব সড়ক চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। খুলনা সিটি কর্পোরেশনের (কেসিসি) উদ্যোগে ছোট ছোট সড়ক রক্ষার জন্য সড়কের প্রবেশ দ্বারে তৈরি করা হয় বার পোস্ট। বর্তমান মেয়র প্রথম নগর পিতার দায়িত্ব পাওয়ার পর এ উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এ জন্য কেসিসির পূর্ত বিভাগ অনেক টাকা খরচ করে। কিন্তু আজ অধিকাংশ সড়ক প্রতিরোধ বারগুলো অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছে। সঠিকভাবে তদারকি না করার জন্য এসব বারগুলোর এখন আর কোনো চিহ্ন নেই।
প্রায় বাড়িওয়ালারা তাদের বাড়ি নির্মাণ করার সময় গলির ভেতরের সড়কে মাল বোঝাই বড় বড় ট্রাক অহরহ আনছে। এতে করে কম ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন সড়কগুলো তাড়িতাড়ি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পড়ছে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে।
নগরীর ফেরিঘাট দেবেন বাবু সড়ক, খালিশপুর পৌর সুপার মার্কেট সড়ক (মানসি বিল্ডিং মোড়), খালিশপুর পদ্মা রোড, মিস্ত্রীপাড়া বাজার সড়ক, বাইতিপাড়া সড়কসহ নগরীর শতাধিক সড়ক বার পোস্ট স্থাপন করা হয়। বর্তমান মেয়র বিগত দিন ক্ষমতায় থাকাবস্থায় তিনি সড়ক ভাল রাখার উদ্দেশে গলি সড়ক দ্বারে বার পোস্ট নির্মাণ করেন। যাতে করে মাল বোঝাই বড় ট্রাক গলির পথে প্রবেশ করতে না পারে।
এদিকে, মহানগরীতে পরিবহণ দানব হিসেবে নগরবাসীর নিকট পরিচিত হয়েছে মাহেন্দ্রা-অতুল। বেবীট্যাক্সীর পরিবর্তে এ গাড়িগুলোকে সড়কে নামানো হয়েছে। বিকট শব্দে বেপরোয়াভাবে তারা পথ চলছে। শব্দ দূষণে অতিষ্ঠ নগরবাসী। পাশাপাশি পথচারিরা থাকে আতঙ্কে। অর্ধেকের বেশি চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। কিন্তু মহল বিশেষের প্রভাবে প্রশাসন যন্ত্র অনেকটা অসহায়।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, নগরীর বিভিন্ন রুটে মাহেন্দ্রা যেভাবে চলছে তাদের সেভাবে চলার রুট পারমিট আদতেই নেই। ইচ্ছা মতোই তারা চলছে। নগরীতে এখন দ্বিগুণ মাহেন্দ্রা-অতুল চলছে। চাহিদা ৭শর মত হলে চলছে ১২শ থেকে ১৩শ মতো।
এদিকে, সাময়িক দুর্ভোগের জন্য দুঃখ প্রকাশসহ দ্রুত কাজ শেষ করার পাশাপাশি সড়ক মেরামতের কথা জানালেন ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: আব্দুল্লাহ পিইঞ্জ। আগামী মার্চ ও এপ্রিলে নগরীর কয়েকটি এলাকায় পানি সরবরাহের আশ্বাস দেন তিনি।
সুজনের জেলা কমিটির সম্পাদক অ্যাড. কুদরৎ ই খুদা বলেন, রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থ্রি হুইলার গাড়িগুলো সড়কে চলছে। দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে চারজন যাত্রী বহন করে আসছিল। অনেক আন্দোলনের পর যাত্রী তিনজন করলেও তার বোঝা যাত্রীর ওপর চাপিয়ে দিয়েছে। দৌলতপুর থেকে খুলনা পর্যন্ত আসতে মাথাপিছু তিন টাকা বেশি গুণতে হচ্ছে যাত্রীদের। মেইন সড়ক দিয়ে চলতে গেলেই বিকট শব্দে অতিষ্ঠ হতে হয়। পাশাপাশি গাড়িগুলো বেপরোয়া গতিতে চলার কারণে থাকতে হয় আতঙ্কের মধ্যে। এটা নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। পাশাপাশি গণপরিবহণ আরও বাড়ানো দরকার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ওয়াসা

৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ