মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
যুক্তরাষ্ট্রের উত্তরাঞ্চলকে স্থবির করে দেয়া ভয়ঙ্কর ঠান্ডা ও ভারী তুষারের তান্ডব চলতি সপ্তাহে পিছু হটেছে, কিন্তু আট রাজ্যে কেড়ে নিয়েছে কমপক্ষে ২৭ জনের প্রাণ। বাড়ির বাইরে ও তাপহীন ঘরের ভেতরে ঠান্ডায় জমে গিয়ে এবং তুষার পরিষ্কার করার সময় বেশির ভাগ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। সেই সাথে কয়েকশ’ মানুষ ফ্রস্টবাইট (ঠান্ডার স্পর্শে দেহের অসাড়তা), হাড় ভাঙা, হার্ট অ্যাটাক ও কার্বন মনোক্সাইডের বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। গত শুক্রবার মিনিয়াপোলিস ও শিকাগোতে অতি ঠান্ডা কেটে গিয়ে তাপমাত্রা মাইনাস ৫-৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উন্নীত হয়। নর্থ ডাকোটার ডিকিনসনে উষ্ণতা বৃদ্ধি পেয়ে শূন্য ডিগ্রিতে পৌঁছে। আগের দিন সেখানে তাপমাত্রা ছিল মাইনাস ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মেরু ঘূর্ণি সরে আসায় ইলিনয়ে একরাতে তাপমাত্রা কমে গিয়ে মাইনাস ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে দাঁড়িয়েছিল। বাতাসের উষ্ণতা ছিল মাইনাস ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা কিছু এলাকায় আরও খারাপ। সেখানে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ফ্রস্টবাইট ও হাইপোথারমিয়া (শরীরের তাপ অস্বাভাবিক কমে যাওয়া) সমস্যা নিয়ে ২২০ জনের অধিক ব্যক্তি হাসপাতালে ভর্তি হন। মিনিয়াপোলিসের হেনিপিন হেলথকেয়ারের মুখপাত্র ক্রিস্টিন হিল শুক্রবার বলেন, তারা পুরো শীতকালে ৩০ জনের মতো ফ্রস্টবাইটের রোগী পান। কিন্তু এবার গত সপ্তাহেই ভর্তি হয়েছেন ১৮ জন। এর আগে সপ্তাহব্যাপী ভয়াবহ রকমের ঠান্ডায় যুক্তরাষ্ট্র প্রায় অচল হয়ে পড়ে। দেশটির মিডওয়েস্ট অঞ্চলের তাপমাত্রা রেকর্ড গড়ে হিমাঙ্কের ৩০ ডিগ্রি নিচে নেমে গিয়েছিল। বর্তমানেও শিকাগোর তাপমাত্রা মাইনাস ১৪ ডিগ্রিতে। এতে জমে গেছে বরফের পাহাড়। শুধু মিডওয়েস্টই নয়, নিউইয়র্কে নায়াগ্রা জলপ্রপাতেও বরফের ঘন স্তর পড়েছে। তীব্র ঠান্ডায় হাড় কাঁপছে, তারপরও যার সৌন্দর্য টানছে পর্যটকদের।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, নায়াগ্রা জলপ্রপাতের নতুন ছবিতে পর্যটকদের মনকে এমনভাবে আকর্ষণ করছে যে, তারা বলছেন, বিভিন্ন নামকরা ফিল্মের বরফের দৃশ্যকেও হার মানিয়ে দেবে এখনের নায়াগ্রা জলপ্রপাত। কানাডার অন্টারিও প্রদেশের দিক থেকেও নায়াগ্রা জলপ্রপাত বরফের সাদা সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে। এ সপ্তাহে ওই অঞ্চল দিয়েও তাপমাত্রা নেমেছিল হিমাঙ্কের অনেক নিচে। বর্তমানেই আছে মাইনাস ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যার ফলে নায়াগ্রা জলপ্রপাতের এ দিকটায়ও অন্যান্য সময়ের চেয়ে অনেক বেশি ফটোজেনিক বরফ পড়েছে। যদিও কানাডা দিয়ে জানুয়ারির শুরু থেকেই এখানে বরফ জমেছিল।
বর্তমানে নায়াগ্রার তিনটি জলপ্রপাত দেখলে মনে হবে এটি একটি আজব দেশ। কোনো রূপকথার রাজ্য। পানির ওপরে বরফের ঘন অবরণ যেনো নায়াগ্রা নদীকে সাদা উঁচু-নিচু পাহাড় বানিয়ে দিয়েছে। এমনকি জলপ্রপাতের আশেপাশের পাথরের উপরও জমে গেছে বরফ। আর এই সৌন্দর্য হাতছানি দিয়ে পর্যটকদের টানছে। নজর কেড়ে নিচ্ছে তাদের।
ইতোমধ্যে সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে নায়াগ্রা জলপ্রপাতের নতুন ছবি। যা দেখে অনেকেই অবাক হয়ে যাচ্ছেন, কী করে এতো সুন্দর হতে পারে! তবে নায়াগ্রায় বরফ জমা এবারই প্রথম নয়। এর আগেও বেশ কয়েক বার বরফ জমেছিল এখানে।
নিউইয়র্কের তাপমাত্রা এখন হিমাঙ্কের ১৪ ডিগ্রি নিচে। তবুও পরিস্থিতির অনেকটা উন্নতি হয়ে বলছে কর্তৃপক্ষ। এখনও ঠান্ডায় কাঁপছেন অদিবাসীরা। মানুষ বাইরে বের হতে সাহসই করতে পারছেন না। জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সপ্তাহজুড়ে।
ওদিকে, বুধ এবং বৃহস্পতিবার শিকাগোর তাপমাত্রা নেমে গিয়েছিল বরফের মহাদেশ অ্যান্টার্কটিকার চেয়েও প্রায় ১০ ডিগ্রি ফারেনহাইট নিচে। আর এই ভয়ানক রকমের ঠান্ডায় মিডওয়েস্ট অঞ্চলের কয়েকটি রাজ্যে অন্তত ২১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে শুধু শিকাগোতেই নয়জনের মৃত্যু হয়েছে।
এছাড়া এই প্রাকৃতিক দুর্যোগ পোলার ভার্টেক্সের ভয়াবহ আঘাতে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে ভর্তির হার। স্থানীয়রা বলছে, প্রচন্ড রকমের ঠান্ডার করণে মানুষ ঠিকভাবে শ্বাস নিতে পারছেন না। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, শুক্রবার দেশটির তাপমাত্রা উপড়ে উঠে আসে। এদিন মিডওয়েস্টের কিছু জায়গায় তাপমাত্রা হিমাঙ্কের ওপরে বা সমান হয়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার সীমান্তবর্তী অঞ্চলে নায়াগ্রা নদীর মধ্যে তিনটি জলপ্রপাত- হর্সশু বা কানাডা ফলস, আমেরিকান ফলস এবং ব্রাইডাল ভিল ফলসে। যেগুলো দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে প্রচুর পরিমাণে পানি প্রবাহিত হয়। সূত্র : ইউএনবি ও ওয়েবসাইট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।