Inqilab Logo

বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

স্ত্রী মিতুর ৭ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ

ডা. আকাশের আত্মহনন : ভয়াবহ দাম্পত্য অশান্তি

বিশেষ সংবাদদাতা, চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০২ এএম

ডা. মোস্তফা মোরশেদ আকাশের আত্মহননের ঘটনায় প্ররোচনা প্রদানে অভিযুক্ত তার স্ত্রী ডা. তানজিলা হক চৌধুরী মিতুকে ৭ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় পুলিশ কর্তৃপক্ষ। গতকাল শনিবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) প্রসিকিউশন শাখার মাধ্যমে আদালতে রিমান্ডের আবেদন জমা দেয়া হয়েছে। আজ-কালের মধ্যে রিমান্ড আশা করছে পুলিশ। কর্মকর্তাদের ধারণা, রিমান্ডেই বেরিয়ে আসবে ডা. আকাশের আত্মহত্যার পেছনে স্ত্রী মিতুর কী দায় ছিল। পরকীয়া তথা নৈতিক স্খলনের সঙ্গে ডা. আকাশের আত্মহননের যোগসূত্র সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হবে।
এদিকে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের ‘থ্রি ডক্টরসের’ সেই আলোচিত ও পরিচিত মেধাবী ডা. মোস্তফা মোরশেদ আকাশের আত্মহননের ঘটনাটি গত তিন দিন যাবৎ সর্বত্র মানুষের বিবেককে ব্যাপক নাড়া দিয়েছে। এ নিয়ে চলছে তুমুল সমালোচনা আর গুঞ্জন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিনের পর দিন দাম্পত্য জীবনে অশান্তির কান্না তুলে ধরে শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যার পথ বেছে নেন ডা. আকাশ। তার অগণিত শিক্ষার্থী, সহপাঠী, বন্ধু এমনকি শিক্ষার্থীদের অভিভাবক মহলে উচ্চারিত হচ্ছে নানা প্রশ্ন, নানা কৌতুহল। শেষ পর্যন্ত আত্মহননের পথে প্ররোচনা দানকারী অবিলম্বে চিহ্নিত হবে কি? আদৌ কি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে? নাকি কিছুদিন মাতামাতির পর সবকিছু থমকে যাবে অতীতের একেকটি মর্মান্তিক আত্মহননের ঘটনাবলীর মতো।
সচেতন নাগরিক মহলে নানামুখী প্রশ্ন উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ঘুরপাক খাচ্ছে, নৈতিক স্খলন, পরকীয়া, বৈষয়িক লোভ-প্রলোভন আর হিংসা-প্রতিহিংসার পরিণতিতে সামাজিক মূল্যবোধের দিন দিন ঘটছে চরম অধঃপতন। এতে করে সর্বনাশা নদীভাঙনের চেয়েও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে দাম্পত্য জীবনে ভাঙন আর ধস। বাড়ছে কলহ, সন্দেহ-অবিশ্বাস আর হতাশার মহামারি।
এদিকে ফেসবুকে প্রকাশ্যে নিজ প্রিয়তমা স্ত্রীর দিনের পর দিন পরকীয়া-আসক্তির বিষয়ে স্ট্যাটাস দিয়ে চরম হতাশা আর গ্লানিতে ভেঙে পড়া চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক মোস্তফা মোরশেদ আকাশ গত বৃহস্পতিবার ভোরে শিরায় ইনজেকশনে বিষ প্রয়োগ করে আত্মহননের পথ বেছে নেন। আত্মহত্যা মহাপাপ। তবে এ করুণ মৃত্যু কেউই স্বাভাবিক বলে মেনে নিতে চাচ্ছেন না।
ডা. আকাশের আত্মহত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় আত্মহননে প্ররোচনার অভিযোগটি প্রাধান্য পেয়েছে। গত শুক্রবার ডা. আকাশের স্ত্রী ডা. তানজিলা হক চৌধুরী মিতুসহ ৬ জনকে এজাহারভুক্ত আসামি এবং আরও ৩ থেকে ৪ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে চান্দগাঁও থানায় মামলা দায়ের করেন ডা. আকাশের মা জোবেদা খানম। আসামিরা হলেন তানজিলা হক চৌধুরী মিতু, তার মা শামীম শেলী, বাবা আনিসুল হক চৌধুরী, বোন সানজিলা হক চৌধুরী আলিশা, তানজিলা হক চৌধুরী মিতুর দুই ছেলেবন্ধু উত্তম প্যাটেল ও ডা. মাহবুবুল আলম। এছাড়া ৩ থেকে ৪ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
ইতিপূর্বে গত বৃহস্পতিবার রাতে নগরীর নন্দনকানন এলাকায় তানজিলা হক চৌধুরী মিতুকে তার খালাতো ভাইয়ের বাসা থেকে পুলিশ গ্রেফতার করে। ডা. আকাশ চন্দনাইশ উপজেলার বরকল বাংলাবাজার এলাকার আব্দুস সবুরের ছেলে। তিনি স্বপরিবারে চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার বি-বøক ২ নম্বর রোডের ২০ নম্বর বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। তানজিলা হক চৌধুরী মিতুর বাড়ি কক্সবাজার জেলার কুতুবদিয়া বড়ঘোপ এলাকায়। মিতুর পরিবার পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকার ২ নম্বর রোডের ৪০/এ নম্বর বাড়িতে থাকেন। মিতু যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলিনায় থাকতেন। ১৩ জানুয়ারি তিনি বাংলাদেশে ফিরেন।



 

Show all comments
  • hafiz anwar ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৭ এএম says : 0
    মোস্তফা মোরশেদ আকাশ তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন পুরুষের সাথে পরকিয়ার অভিযোগ এনেছেন।এবং তা প্রমান সহকারে। আশাকরি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এর যথাযথ ব্যবস্থা নিবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Shaoni Clish ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৭ এএম says : 0
    Why are we always judgemental? How much do we know? Why are we accusing the wife without any proof? Maybe she is shocked for her husband's death and now we are making it even harder for all these stupid comments. Shame.
    Total Reply(0) Reply
  • Rabiul Islam ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৮ এএম says : 0
    ধর্ষনণ যেমন অপরাধ তেম‌নি পরকীয়া তার চে‌য়েও গুরুতর অপরাধ, এর জন্য আইন তৈরি ক‌রে গুরুত্বর শা‌স্তির ব্যবস্তা করা উ‌চিত।
    Total Reply(0) Reply
  • নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৮ এএম says : 0
    So sad. Emotional persons give their lives but nothing gets changed. People do not value love these days. They are hankering after illusions without knowing what they want. Rest in peace Dr. Akash.
    Total Reply(0) Reply
  • Enamul Hafiz Latifee ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৯ এএম says : 0
    বাংলাদেশে ...পরকীয়ার বিষয়ে কোন ধরণের আইনি সহায়তা পাওয়া যায় না, তাই পরকীয়ার প্রেমিকের সাথে মিলে স্বামীকে খুন করা, স্বামীকে মানসিক অশান্তিতে রেখে সব মেনে নেয়ার চাপ দেয়া, এবং স্বামীকে এভাবে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করা হয়। আমাদের দেশ তখনই নতুন করে আইন করে যখন বাইরে থেকে চাপ আসে, অথচ নিজে থেকে ভাল মানুষদের রক্ষার্থে কিছু করতে চায় না। ধর্ষণ যেভাবে ক্ষমাযোগ্য নয় একইভাবে পরকীয়ার মাধ্যমে এধরণের কিছু হলেও তা আইনি ব্যবস্থার মাঝে আনা দরকার। অপরাধের কোন লৈঙ্গিক পরিচয় নেই, এগুলো বোঝা উচিত সবার, বিশেষ করে আইনপ্রণেতাদের।
    Total Reply(0) Reply
  • নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৯ এএম says : 0
    পুরুষ নির্যাতন আইন চাই।
    Total Reply(0) Reply
  • নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৯ এএম says : 0
    শফি হুজুরের মেয়েদের শিক্ষা বিষয়ক কথাটা এইবার চিন্তা করে দেখেন আপনারা।
    Total Reply(0) Reply
  • নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৯ এএম says : 0
    এখানে কী পুরুষ নির্যাতন হয়েছে? নারী নির্যাতনের মতো পুরুষ নির্যাতনের জন্যে কী আইন আছে? নারীর ক্ষমতায়ন না হলে পুরুষের নির্যাতন থেকে সে নিজেকে বাঁচাতে পারব না। কিন্তু ক্ষমতাবান নারী যদি অপেক্ষাকৃত কম ক্ষমতাবান পুরুষদের উপর নির্যাতন করে তবে তার আইনি সুরক্ষা পাবার মত কি সুযোগ আছে? বিষয়টা কিন্তু অবহেলার না।
    Total Reply(0) Reply
  • Saleh Arefin ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৪০ এএম says : 0
    Suicide is a great sin. It is not the right way that is being practiced more often in our society nowadays. To stop the crime of our life, we need to be more patient and deal with the situation tactfully. So, we should concentrate on our family values [Which are not present in our maximum family] and a disciplined lifestyle.
    Total Reply(0) Reply
  • নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৪০ এএম says : 0
    ডিভোর্স দিলেই তো পারতেন বৌকে/যে ভালোবাসার কদর জানে না, তার প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শন বোকামি। আল্লাহ উনার শান্তি দেন, আর উনার বৌকে আইনের আওতায় নিয়ে স্বামী–স্ত্রীর পবিত্র সম্পর্কের প্রতি বিশ্বাস ঘাতকতার কারণে শাস্তি দাবি করছি।
    Total Reply(0) Reply
  • Deepak Eojbalia ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৪০ এএম says : 0
    Not only provoking murder she must be faced clean murder. She killed an emotional person who loved her very much.
    Total Reply(0) Reply
  • নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৪১ এএম says : 0
    দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আত্মহনন

৩ জানুয়ারি, ২০২০

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ