Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চীনের সাথে যুক্ত হতে চায় মিজোরাম

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩১ জানুয়ারি, ২০১৯, ৭:৩৪ পিএম

উত্তরপূর্ব ভারতের সব রাজ্যে যখন ভারতের নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরোধীতায় প্রতিবাদ চলছে, তখন মিজোরাম রাজ্যে প্রতিবাদ হচ্ছে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী চাকমাদের নাগরিকত্ব দেয়ার বিরুদ্ধে। মিজোরামের রাজধানী আইজলে সম্প্রতি এরকমই একটা মিছিলে হাজার তিরিশেক মানুষের জমা হয়েছিল, যেখানে প্রচুর সংখ্যায় দেখা গেছে একটা পোস্টার, ‘বাই বাই ইন্ডিয়া, হ্যালো চায়না।’ এই পোস্টার দিয়ে বোঝানো হয়েছে নাগরিকত্ব বিলের ইস্যুতে ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে চীনের সঙ্গে সংযুক্ত হতে চাইছে তারা।
মিজোরামের রাজনৈতিকভাবে অতি প্রভাবশালী এন জি ও সংগঠন ইয়াং মিজো এসোসিয়েশনের প্রধান লালমাৎসুয়ানা বলেন, ‘মিজোরামের ভারতে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত আমাদের পূর্বপুরুষরা নিয়েছিলেন। সেই সিদ্ধান্তের বিরোধীতার প্রশ্নই নেই, আর চীনের সঙ্গে সংযুক্ত হওয়াও অবাস্তব। তবে দিল্লির অভিভাবকরা যদি বারে বারে আপত্তি জানানো স্বত্বেও বিলটি পাশ করানোর দিকে এগিয়ে যায়, তাহলে ছাত্র যুবকদের অভিমান তো হতেই পারে।’
অন্যান্য উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যে যেখানে ধর্মীয় নির্যাতনের কারণে বাংলাদেশ থেকে চলে আসা হিন্দুদের নাগরিকত্ব দেয়ার বিরোধিতা করা হচ্ছে, সেখানে মিজোরামে বৌদ্ধ চাকমাদের বিরুদ্ধে কেন নেমেছেন মিজোরা?
মিজো সংগঠনগুলো বলছে, আন্তর্জাতিক সীমান্ত ঘেঁষা যে চাকমা স্বশাসিত পরিষদ রয়েছে, সেখানে বিপুল সংখ্যক চাকমা বাংলাদেশ থেকে মিজোরামে চলে এসেছেন। নাগরিকত্ব বিল পাশ হয়ে গেলে এই ‘অবৈধ চাকমারাও’ ভারতের নাগরিক হয়ে যাবেন।
চাকমাদের জন্য স্বশাসিত জেলা পরিষদ তৈরীর সময়েই মিজো সংগঠনগুলো আপত্তি করেছিল। ওই স্বশাসিত অঞ্চলে নিয়মিতই বাংলাদেশ থেকে চাকমাদের অনুপ্রবেশ ঘটে বলে তারা দাবী করে। ৬১-এর জনগণনায় খুবই অল্প কয়েকজন চাকমা ছিলেন, আর বর্তমানে তাদের দাবি অনুযায়ীই প্রায় এক লক্ষ চাকমা রয়েছেন সেখানে। এই সংখ্যাটাতো আর শুধুমাত্র বংশবৃদ্ধির কারণে হতে পারে না। এদের একটা বড় অংশ বাংলাদেশ থেকে চলে আসা মানুষ বলে দাবী করেন লালমাৎসুয়ানা। তার আরো অভিযোগ স্বশাসিত পরিষদ এলাকায় সব চাকরি চাকমাদেরই দেয়া হয়, মিজোরা আইনত সেখানে জমি কিনতে পারে না।
মিজোরামে বসবাসকারী চাকমারা অবশ্য বলছেন, সরকারের পক্ষ থেকেই বারে বারে বলা হয়েছে যে সে রাজ্যে কোনো চাকমা অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে এসে বসবাস করছে না। অল ইন্ডয়া চাকমা সোশ্যাল ফোরামের সাধারণ সম্পাদক পরিতোষ চাকমা বলছিলেন, ‘এটা আসলে মিজোদের দীর্ঘ দিন ধরে চলে আসা চাকমা বিরোধী নীতির অংশ। পুরো সরকারী কাঠামো আর মিজো এনজিওগুলোর এটা একটা মিথ্যা প্রচার। চাকমাদের গ্রাম থেকে উৎখাত করা হচ্ছে, শিক্ষার অধিকার দেয়া হয় না, আমাদের বাড়ি থেকেও তাড়িয়ে দেয়া হয় রাজধানী আইজলে। এরা আসলে চায় ৭৩ সালে তৈরী হওয়া স্বশাসিত পরিষদটা যাতে ভেঙ্গে দেওয়া যায়।’ চাকমা সংগঠনগুলোর আরো অভিযোগ, বাংলাদেশ থেকে চাকমারা নয়, মিয়ানমারের সীমান্ত পেরিয়ে অনুপ্রবেশ ঘটাচ্ছে মিজোদেরই স্বজাতি ‘চিন’ সম্প্রদায়ের মানুষ। নিজের সম্প্রদায়ের মানুষ বলে মিজোরা সেটা নিয়ে আপত্তি তুলছে না।
সেটা যে ঘটছে কিছু সংখ্যায়, সেটা স্বীকার করেন লালমাৎসুনায়ানাও। তবে সংখ্যায় সেই অনুপ্রবেশ কথিত চাকমা অনুপ্রবেশের তুলনায় নগণ্য, এমনটাই ধারনা করেন মিজো নেতৃবিন্দরা। সূত্র: বিবিসি।



 

Show all comments
  • Nannu chowhan ৩১ জানুয়ারি, ২০১৯, ৮:৪২ পিএম says : 0
    That's very interesting news.le baba thela shamla.....
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ