পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শুকনো মওসুম শুরুর আগেই শুকিয়ে যাচ্ছে পদ্মা। পানি কমছে। বাড়ছে চরের বিস্তৃতি। খাল সদৃশ্য রুপ নিয়ে ধীরলয়ে বয়ে যাচ্ছে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের লাইফ লাইনটি। কোথাও হাঁটু পানি আবার কোথাও খানিকটা পানির বিস্তৃতি দৃশ্যমান। চাঁপাইনবাবগঞ্জের পাংখা পয়েন্ট থেকে ঈশ্বরদী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পর্যন্ত দুশো মাইলজুড়ে মরুসম ধু ধু বালুচর।
এক সময়ের চঞ্চলা চির যৌবনা আর দূরন্ত হয়ে ছুটে চলা পদ্মা এখন মরা নদীর নাম। দৃষ্টিসীমা ছাড়িয়ে আদিগন্ত বিস্তৃত পানির ধারার স্থলে একই রুপের মরীচিকা সাদৃশ্য বালিচরের বিস্তার। দেখলে মনে হয় নদী নয় যেন নদীর জীবাশ্ম ফসিল। স্রোত না থাকায় প্রতি বছর লাখ লাখ টন পলি এসে জমছে পদ্মার বুকে। উৎস্য ও উজান থেকে পদ্মায় পর্যাপ্ত পানি না আসায় নদী ক্রমশ বালির নীচে চাপা পড়ছে। বাড়ছে বালুচরের বিস্তৃতি আর ঘনত্ব।
গত পয়তাল্লিশ বছরে নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে বালুচরের উচ্চতা বেড়েছে আঠারো মিটার। বর্ষা মওসুমে মাস তিনেকের জন্য নদীতে পানি থাকলেও বছরের নয় মাসজুড়েই তলানিতে থাকছে পানি। শীর্ণ খালের রুপ নিয়ে বয়ে যাচ্ছে এক সময়ের প্রমত্ত পদ্মা। পদ্মা মরে যাবার সাথে সাথে শাখা প্রশাখা নদ নদী বড়াল, মরা বড়াল, মুছাখান, ইছামতি, ধলাই, হুড়া সাগর, চিকনাই, গড়াই, মাথাভাঙ্গা, ভৈরব, নবগঙ্গা, চিত্রা, বেতা কালিকুমার, হরিহর, কালিগঙ্গা, কাজল, হিসনা, সাগরখালি, চন্দনা, কপোতাক্ষ, বেলাবতসহ পঁচিশটি নদ-নদীর অস্তিত্ব প্রায় বিলীন।
বর্ষার সময় কিছু পানি থাকলেও সারা বছর থাকে শুকনো। নৌকা নয় চলে চাষাবাদ। এসব নদীর নাম মানচিত্র আর কিছু বইয়ের পাতায় অস্তিত্ব বজায় রেখেছে। এক সময়ের খরস্রোতা নদীটি এখন নর্দমার নাম নিয়ে বেঁচে আছে। ফারাক্কা ছাড়াও আরো বেশকটি নদীতে ভারত বাঁধ দিয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে তিস্তা, মহানন্দা, করতোয়া, আত্রাই ও ধরলা। এসব নদীতে বাঁধ দেবার ফলে এ নদ-নদী ছাড়াও এর শাখা উপশাখাগুলো অস্তিত্ব হারানোর পথে।
ভারতের পানি আগ্রাসী নীতি শুধু এ অঞ্চলের নদ-নদীগুলোকে শুকিয়ে মারেনি। যার প্রভাব পড়েছে এসব নদীর সাথে সংযুক্ত খাল বিলে। সব শুকিয়ে গেছে। এ অঞ্চলের বিখ্যাত বিল চলনবিল, এক সময় যার বিস্তৃত পানিরাশি দেখে বোঝার উপায় ছিলনা এটা বিল না নদী। বিল হালতি, বিল হিলনা, মহানগর, বিলভাতিয়া, উথরাইল, খিবির বিল, চাতরা, মান্দার বিল, বিলকুমলী, পাতি খোলা, অঙ্গরা, চাঙ্গা, দিকমী, পারুল, সতী, মালসী, ছোনী, বাঘনদী, পিয়ারুল, মিরাট, রক্তদহ, কুমারীদহ, খুকসী, জবায়ের বিল, বাঁধ বাড়িয়া গ্রামের বিল আর দহ হারিয়ে যাচ্ছে প্রকৃতি থেকে।
নদ-নদী খাল-বিলগুলোয় এখন বর্ষা মৌসুমে পানি জানান দেয় তাদের অস্তিত্বের করুণ কাহিনী। নদী-খাল-বিল মরে যাওয়ায় বিরূপ প্রভাব পড়েছে প্রকৃতিতে। খাল-বিল-দিঘী ভরা মাছ নেই। হারিয়ে গেছে অর্ধশত বেশি প্রজাতির মাছ। নৌ যোগাযোগ আর নেই। নদ-নদী আর বিলের বুকে আবাদ হয় ধানসহ বিভিন্ন ফসলের। এতে আবাদী জমি বাড়ার সাময়িক প্রাপ্ত ফসল বেশি হলেও এর সুদূর প্রসারী প্রভাব মারাত্মক হয়ে উঠেছে। চারদিক থেকে মরুময়তা ধেয়ে আসছে।
এবারো পদ্মায় মাস তিনেকের জন্য যৌবন এসেছিল। ওপারের বন্যার চাপ সামলাতে প্রতি বছর ফারাক্কার পাষাণ গেটগুলো খুলে দেয়া হয়। পদ্মা জেগে ওঠে। বন্যার চাপ কমলে কপাটগুলো ফের বন্ধ হয়ে যায়। নদী ফের মরে যায়। এবার যেন দ্রুত মরে যাচ্ছে। শীত মৌসুমের মাঘ মাসেই নদীর পানি তলানিতে। সামনে রয়েছে খরা মৌসুমের চৈত্র বৈশাখ। তখন ‘কি মরণ দশা হবে’ তা নিয়ে দুশ্চিন্তার ভাঁজ নদী তীরবর্তী মানুষের কপালে।
ফারাক্কা চুক্তি অনুযায়ী প্রতি বছরের মত এবারো ১ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে শুকনো মৌসুম। চুক্তি মোতাবেক এই শুস্ক মৌসুমের ৩১ মে পর্যন্ত উভয় দেশ দশদিন ওয়ারী ভিত্তিতে গঙ্গার পানি ভাগাভাগি করে নেবার কথা। কিন্তু বাস্তবতা হলো চুক্তির ২৩ বছরে বাংলাদেশ চুক্তি মোতাবেক পানি কখনো পায়নি। এবার চুক্তি মোতাবেক শুকনো মৌসুম শুরু হবার পর হঠাৎ করে যৌথ নদী কমিশন শোরগোল তুলে জানান দিলে পদ্মায় বিগত বছরগুলোর তুলনায় প্রচুর পানি এসেছে। কিন্তু বাস্তবে গিয়ে পদ্মায় সে পানি দেখা যায়নি।
গত ক’দিন ধরে গোদাগাড়ি থেকে হার্ডিঞ্জ পয়েন্ট পর্যন্ত নদী পর্যবেক্ষণ করে নদী তীরবর্তী মানুষ, জেলে নৌকার মাঝি সবার সাথে আলাপকালে তারা পানি বাড়ার বিষয়টা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন বাংলাদেশ কখনোই চুক্তি মোতাবেক পানি পায়নি। এখনো পাচ্ছে না। এনিয়ে যৌথ নদী কমিশনের সাথে চিঠি চালাচালির মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। আর বিষয়টা অনেকটা গা সওয়া হয়ে গেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গঙ্গা প্রধানত তিনটি উৎস থেকে পানি প্রবাহ পেয়ে থাকে। এগুলো হলো মূল উৎসের হিমবাহ থেকে উৎসারিত পানি, উপনদীগুলোর প্রবাহ এবং বৃষ্টির পানি। ভারত এসব উৎসের একটি ছাড়া সবকটি বাধাগ্রস্ত করে নব্বই ভাগ পানি সরিয়ে নেবার ফলে নদীতে শতকরা দশভাগ পানি স্বাভাবিকভাবে প্রবাহিত হতে পারছে। নেপালের কোশি থেকে শুরু করে ফারাক্কা পর্যন্ত সুদীর্ঘ পথে ভারত পানি প্রত্যাহারের যে এক তরফা কার্যক্রম এখন পর্যন্ত চালিয়ে যাচ্ছে তাতে ভাটির দেশ বাংলাদেশের বিপর্যয় অবশম্ভাবি হয়ে উঠছে। বাংলাদেশের মানুষ চুক্তির নামে প্রতারণার শিকার হয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে মহানন্দা নদীর বুকে ফসলের আবাদ হচ্ছে। আর পাগলা নদীর আগের পাগলামীও নেই। পদ্মা আর মহানন্দার মিলন স্থল গোদাগাড়ীর প্রেমতলীর কাছে ঘোলাপানি আর স্বচ্ছ পানির মায়াবি দৃশ্য আর নেই। পাড়ে বসে ছিলেন সত্তর ছুই ছুই তরিকুল ইসলাম। নদীর পানি কোথায় জানতে চাইলে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলেন, নদীতো সেই কবে মরে গেছে। এখন আছে নিষ্প্রাণ বালির উত্তাপ।
পদ্মার প্রবাহ রাজশাহী নগরী থেকে সরে গেছে মাইল দেড়েক দূরে। পানি কমে চর জাগছে। নদীও সরে যাচ্ছে। কুড়ি মিনিট এবড়ো থেবড়ো চর ঝাউ গাছের ঝোপ জঙ্গল পেরিয়ে হেঁটে পানির কাছে পৌঁছে নৌকায় উঠে চারঘাট বাঘার দিকে যাত্রা। যন্ত্রচালিত নৌকা হলেও যাত্রায় গতি ছিল না। নীচে ডুবো চরে তলা ঠেকছিল। অনেক ঘুরে ঘুরে তিনগুণ সময় খরচ করে চারঘাটে পৌঁছা। দীর্ঘ পথে শাহাপুর ছাড়া খুব কমস্থানে গভীর পানির দেখা মিলেছে। ক্যাডেট কলেজের সামনে এসে নদী আরো সরু হয়েছে। মাঝি বাচ্চু জানালেন এবার আগের চেয়ে বেশী দ্রুত চর পড়ছে। বড়ালের উৎস মুখ চারঘাটে গিয়ে দেখা গেল এখনি পানি শূন্য। নদীর বুকজুড়ে চলছে চাষাবাদ। আগামী বর্ষা মৌসুম না আসা পর্যন্ত পরিস্থিতি আরো ভযাবহ হবে তার আলামত এখনি ফুটে উঠছে।
ঈশ্বরদীর হার্ডিঞ্জ পয়েন্ট পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় ব্রীজের পনেরটি পিলারের মধ্যে সাতটির নীচ দিয়ে পানির প্রবাহ রয়েছে। ভেড়ামারা পয়েন্টের পাঁচটি পিলারে দ্রুত পানি কমছে। ইতোমধ্যে মাঝ বরাবর চর জেগে উঠেছে। স্থানীয়রা জানালেন, ফাল্গুনেই চর পড়ে নদী অর্ধেক হয়ে যাবে। তের নম্বর পিলারের কাছে বেশকটি মাছ ধরার নৌকা অলস বসে রয়েছে। এদের মধ্যে জানিপ, আলেম, জুলমত নামের জেলেরা জানান নদীতে তেমন মাছ মিলছে না। ভোর বেলায় দেখা গেল কিছু ছোট আকারের বেলে, চিংড়ি, ঘেড়ে মাছ নিয়ে ডাঙ্গায় উঠছে। একজনের কাছে কেজি দুয়েক জাটকাও দেখা যায়। তাদের মন ভাল নেই। নদীতে মাছ মিলছে না বলে, নিজের পেটের খরচ ওঠা দায় হয়েছে।
হার্ডিঞ্জ ব্রীজ ও লালনশাহ ব্রীজের নীচে ফসলের ক্ষেত আর ড্রেজার দিয়ে বালি তোলার বিশাল কর্মকান্ড। ব্রীজের নীচে বসেছে বিভিন্ন রকমের মিনি ফাষ্টফুড আর চা সিঙ্গাড়ার হোটেল। এদের একজন রানা সরদার বলেন, শীত মৌসুমে অনেকেই নদীর জেগে ওঠা চরে বেড়াতে আসে। নদীর একেবারে তীরের চা বিক্রেতা রতন বলেন, সেই বর্ষার সময় কদিনের জন্য পানি উঠেছিল। আর এখন ত্রিশফুট নীচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। নদীর কিনারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি ছোট পরিমাপক বসানো রয়েছে। সেখানে প্রতিদিন পানির মাপ নেয়া হয়। পানি কমার দিকে রয়েছে।
চৈত্র বৈশাখ পর্যন্ত পানি কমতেই থাকবে। এমনটি হয় প্রতিবছর। ব্রীজের আশেপাশেই যাত্রী আনা নেয়া করেন রিকশা চালক মতিউর। পানি নিয়ে কথা বলতেই বলে ওঠেন বাদ দেন ওসব কথা। চুক্তি আছে পানি নেই। তবু ওদের মিথ্যা কথার জুড়ি নেই। নদীর বেহাল দশা দেখতে মার্চ এপ্রিলে আসেন তখন দেখবেন। গোদাগাড়ি থেকে হার্ডিঞ্জ ব্রীজ পর্যন্ত পদ্মা নদীর বুকে ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকা নিয়ে মাছ ধরা জেলেদের হা হুতাশ ছাড়া আর কিছু নেই। এক সময় এ অঞ্চলে অন্তত পয়ত্রিশ হাজার মৎস্যজীবী ছিল। এখন দু’তিন হাজারের বেশী হবেনা বলে মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়। কারন নদীতে পানিও নেই মাছও নেই। ফলে বাধ্য হয়ে পেশা বদল করতে হয়েছে।
পদ্মাসহ শাখা প্রশাখা নদ নদীগুলো মরে যাবার কারণে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নামছেই। গত ত্রিশ বছরে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর পঞ্চাশ ষাট ফুট নীচে নেমে গেছে। ভর করেছে আর্সেনিক। এখন ভূগর্ভস্থ পানির স্তর একশো পনের ফিট নীচে অবস্থান করছে। ভূ-উপরিস্থ পানি না থাকা। ব্যাপক হারে গভীর নলকূপের ব্যবহারে এমনটি হচ্ছে। বরেন্দ্রের অনেক স্থানে ডিপটিউবওয়েলে পানি উঠছেনা। বরেন্দ্র অঞ্চলজুড়ে পানির হাহাকার। পদ্মার পানির অভাবে দেশের বৃহত্তম গঙ্গা কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্পসহ পশ্চিমাঞ্চলের বহু সংখ্যক সেচ প্রকল্প হুমকির মুখে পড়ছে।
বিশিষ্ট নদী গবেষক মাহবুব সিদ্দিকী বলেন, ভারত আর্ন্তজাতিক নিয়মের তোয়াক্কা না করে উৎস্য ও উজানে গঙ্গার উপর অসংখ্য প্রকল্প নির্মাণ করে পানি সরিয়ে নিচ্ছে। যার ফলে ফারাক্কা পয়েন্টে যথেষ্ট পানি পৌঁছাতে পারছে না। এসব প্রাণঘাতি প্রকল্প অপসারণ করা ছাড়া গঙ্গা-পদ্মায় স্বাভাবিক প্রবাহ ফিরিয়ে আনার অন্য কোন বিকল্প নেই।
পরিবেশবিদ ও নদী বাঁচাও আন্দোলনের আহবায়ক অ্যাডভোকেট এনামুল হক বলেন, ভারত আর্ন্তজাতিক আইন রীতিনীতি এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন করে গঙ্গাসহ অভিন্ন নদীগুলোর পানি একতরফাভাবে সরিয়ে নিচ্ছে। এখনো আগ্রাসী নীতি চালিয়ে যাচ্ছে। এভাবে বাংলাদেশকে ঠেলে দিয়েছে ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে।
গঙ্গার পানি নিয়ে ত্রিশ বছর মেয়াদী গ্যারান্টিক্লজহীন চুক্তি করলেও বাংলাদেশ কখনোই তার পানির নায্য হিস্যা পায়নি। চুক্তির নামে হয়েছে শুভংকরের ফাঁকি। পদ্মা অববাহিকার কোটি কোটি মানুষ তাদের ইচ্ছের পুতুলে পরিণত হয়েছে। শুকনো মৌসুমে পানি না দিয়ে শুকিয়ে মারা। আর বর্ষার সময় ওপারের বন্যার চাপ সামলাতে ফারাক্কার সব গেট খুলে দিয়ে এপারে ডুবিয়ে মারার খেলা চালিয়ে যাচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।