পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি কমিয়ে চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন মুদ্রানীতিতে সরকারি খাতে ১০ দশমিক ৯ শতাংশ এবং বেসরকারি খাতে ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ ঋণ প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে। অর্থবছরের প্রথমার্ধে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ছিলো ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ। এছাড়া অভ্যন্তরীণ ঋণ প্রবাহ ১৫ দশমিক ৯ শতাংশ এবং রেপো-রিভার্স রেপোর সুদের হার ধরা হয়েছে ৪ দশমিক সাত পাঁচ শতাংশ এবং ৬ শতাংশ। ব্যাংকগুলোর আমানত কম থাকায় সংকোচনশীল বা রক্ষণশীল মুদ্রানীতি প্রণয়ন করা হয়েছে অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের জন্যও।
গতকাল বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির ২০১৮-১৯ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের মুদ্রানীতি ঘোষণা করেন। এ সময় ডেপুটি গভর্নর এস এম মনিরুজ্জামান, বাংলাদেশ ব্যাংকের চেইঞ্জ ম্যানেজমেন্ট পরামর্শক আল্লা মালিক কাজমী, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান আবু হেনা মোহাম্মদ রাজি হাসান, ব্যাংকিং রিফর্ম অ্যাডভাইজার এস কে সুর চৌধুরী, অর্থনৈতিক উপদেষ্টা মো. আখতারুজ্জামানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
গভর্নর বলেন, বেসরকারি খাতে ঋণের যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তা সরকারের প্রক্ষেপিতহারে জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা করার পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখবে।
২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৮ শতাংশ। আর গড় মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৬ শতাংশে আটকে রাখার আশা করা করা হয়েছে। এবারের মুদ্রানীতির ঘোষণাপত্রে জিডিপি প্রবৃদ্ধি সাড়ে ৭ শতাংশ থেকে ৮ দশমিক ২ শতাংশের মধ্যে অর্জিত হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেবা ও কৃষি খাতের প্রাণবন্ত কর্মচাঞ্চল্যের পাশাপাশি অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশ ও স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি বজায় থাকলে এই হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব। অন্যদিকে, বর্তমানে মূল্যস্ফীতির হারও নিম্মমুখী রয়েছে। আগামী ছয় মাসও মূল্যস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রার মধ্যেই থাকছে। মুদ্রানীতির ঘোষানাপত্রের তথ্যানুযায়ী, জুন শেষে মুল্যস্ফীতির হার ৫ দশমিক ৩ থেকে ৫ দশমিক ৬ শতাংশের মধ্যে থাকবে।
গত ছয় মাসে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবাহ খুব একটা বাড়েনি। ডিসেম্বর পর্যন্ত বার্ষিক ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে প্রকৃত অর্জন হয়েছে ১৩ দশমিক ৩ শতাংশ। সদ্য সমাপ্ত জাতীয় নির্বাচনের আগে অনিশ্চয়তার আশঙ্কায় বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ কমেছে বলে মনে করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ বিষয়ে লিখিত বক্তব্যে গভর্নর বলেন, অর্থবছরের প্রথমার্ধের (জুলাই-ডিসেম্বর) মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছিল ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ। কিন্তু ডিসেম্বর শেষে এ খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যের চেয়ে অনেক কম হয়েছে; ১৩ দশমিক ৩ শতাংশ।
সদ্য সমাপ্ত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সম্ভাব্য অনিশ্চয়তার উৎকণ্ঠা এর একটি কারণ হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করেন তিনি। গর্ভনর বলেন, ‘চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধের মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ নির্ধারণ করা হলেও তার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হয়নি। তবে এবার অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি ১৬ দশমিক ৫ নির্ধারণ করা হয়েছে, তা অর্জন করা সম্ভব হবে বলে আমরা আশা করছি। এছাড়া আমানত ও ঋণ সুদহারের যোগান ও চাহিদাভিত্তিক ওঠানামায় সা¤প্রতিককালে সৃষ্ট প্রতিবন্ধকতা বেসরকারি খাতে ঋণ যোগানের প্রবাহকে প্রভাবিত করছে কিনা- সেটা অর্থবর্ষের দ্বিতীয়ার্ধে স্পষ্ট হবে বলেও জানান গভর্নর।
প্রথমার্থে সরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ছিল ৮ দশমিক ৬ শতাংশ। নতুন মুদ্রানীতিতে তা ২ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ দশমিক ৯ শতাংশ। গেল মুদ্রানীতি সরকারি খাতে ঋণের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করায় এবার তা আরও বাড়িয়ে নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে মুদ্রানীতিতে অভ্যন্তরীণ ঋণের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা আগের মতোই ১৫ দশমিক ৯ শতাংশ অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। এদিকে, গেল মুদ্রানীতিতে রিজার্ভ মুদ্রার যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল সেটিও অতিক্রম করে। মূলত জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রিজার্ভ মুদ্রার সরবরাহ বেড়ে যায়। তাই নতুন মুদ্রানীতিতে রিজার্ভ মুদ্রার সরবরাহ কিছুটা টেনে ধরেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগের চেয়ে দশমিক ১ শতাংশ কমিয়ে রিজার্ভ মুদ্রার নতুন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ শতাংশ। তবে রিজার্ভ মুদ্রার সরবরাহ কমানোর কথা বলা হলেও ব্যাপক মুদ্রার সরবরাহ আগের চেয়ে ১ দশমিক ৮ শতাংশ বাড়িয়ে ধরা হয়েছে ১২ শতাংশ। এছাড়া নতুন মুদ্রানীতিতে নীট বৈদেশিক সম্পদের পরিমাণ আগের চেয়ে আরও কমার আশঙ্কা করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ব্যাংকিং খাতে উচ্চ খেলাপি ঋণ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে গর্ভনর ফজলে কবির বলেন, এখন থেকে নতুন করে আর খেলাপি ঋণ বাড়বে না বরং কমে আসবে। এ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং অর্থমন্ত্রণালয়ের দুইটি কমিটি কাজ করছে। ডলারের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ডলারের দাম বৃদ্ধিতে উদ্বেগের কিছু নেই। বরং ডলারের বিপরীতে টাকা বেশ শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। জ্বালানী তেলের মূল্য নিয়ে বলেন, জ্বালানী তেলের দাম খুব বেশি উঠানামা করছে না।এটা নিয়ে খুব বেশি উদ্বেগের কোনো কারণ নেই।
ব্যাংকিং খাতে সরকারের বিভিন্ন ছাড় দেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমানত ও ব্যাংক ঋণ সুদের হার ৬ ও ৯ পুরোপুরি কার্যকর না হওয়ার বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করছে। মার্চের মধ্যে ঋণ ও আমানত অনুপাত (এডিআর) সমন্বয় করা নিয়ে তিনি বলেন, ৫৯টি ব্যাংকের মধ্যে ১১ টি ব্যাংকের এডি রেশিও কিছুটা বেশি। এটা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক নজর রাখছে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে ফজলে কবির বলেন, বিদেশী বিনিযোগ বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকার নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে। ইতিমধ্যে এর কিছু সুফল পাওয়া যাচ্ছে। নতুন তিনটি ব্যাংকের অনুমোদন দেয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর বলেন, ২০১৭ সালে ব্যাংক তিনটি সব শর্ত পরিপালন করে আবেদন করার পরেও বাংলাদেশ ব্যাংক পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখছে এগুলো দেয়া যাবে কিনা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।