পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
সিন্ধু পানি চুক্তি (আইডাব্লিউটি) অধীনে পাকিস্তানের সাথে ভারতের যে পানি বণ্টনের কথা, সেই পানি প্রবাহ আটকে দেয়ার বিষয়টি সরজমিনে দেখতে ভারত সফরে গেছে পাকিস্তানের একটি প্রতিনিধি দল।
তিন সদস্যের পাকিস্তান ইন্দুজ ওয়াটার কমিশন টিমের সদস্যরা বর্তমানে জম্মুতে রয়েছেন। সেখানে তারা চেনাব নদীর উপর ১০০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন পাকাল দুল ড্যাম এবং ৪৮ মেগাওয়াটের লোয়ার কালনাই পানিবিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ পর্যবেক্ষণ করবেন।
পাকিস্তানি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ইন্দুজ ওয়াটার কমিশনার সাইয়েদ মেহের আলী শাহ। সাথে রয়েছেন যুগ্ম কমিশনার উসনাম গনি এবং উপদেষ্টা মেহমুদ হায়াত। তারা আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ভারতে থাকবেন। ভারতীয় প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে আছেন ইন্দুজ ওয়াটার কমিশনার পি কে স্যাক্সেনা এবং তার উপদেষ্টারা।
সূত্র জানিয়েছে যে, প্রকল্প দুটির ব্যাপারে পাকিস্তানের আপত্তি জানানো এটাই প্রথম নয়। পাকিস্তান ইন্দুজ ওয়াটার কমিশন বিগত চার বছর ধরে বহুবার ভারত সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছে, যাতে তাদেরকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনের অনুমতি দেয়া হয়। তবে, এই পর্যায়ে এসে তাদেরকে অনুমতি দেয়া হয়েছে।
৫৯ বছরের পুরনো চুক্তি
পাকাল দুল ড্যামটি ১৬৭ মিটারের একটি প্রস্তাবিত ড্যাম, যেটি জম্মু ও কাশ্মীরের কিশতওয়ার জেলায় চেনাবের উপনদী মারুসাদার উপর নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। ড্যামটির কাজ শেষ হলে এটা হবে রাজ্যের সবচেয়ে বড় পানিবিদ্যুৎ প্রকল্প, যেখান থেকে ১০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। ২০১৮ সালের মে মাসে এটার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং ২০২৩ সাল নাগাদ এটার কাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সিন্ধু নদীর পানি বণ্টন নিয়ে ১৯৬০ সালে পাকিস্তান আর ভারত যে আইডাব্লিউটি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, সেখানে মধ্যস্থতা করেছিল ওয়ার্ল্ড ব্যাংক।
চুক্তি অনুযায়ী সিন্ধু অববাহিকার পূর্বদিকের তিন নদী রাভি, সুটলেজ এবং বেয়াস থেকে পানি পাবে ভারত আর পশ্চিমের ইন্দুজ, ঝিলাম আর চেনাব থেকে পানি পাবে পাকিস্তান। চুক্তিতে পার্মানেন্ট ইন্দুজ কমিশনের (পিআইসি) কর্মকর্তারা একে অন্যের দেশ সফর করতে পারবেন এবং নদীর পানি প্রবাহে বিঘ্ন সৃষ্টির কোন আশঙ্কা দেখা দিলে সেটি তারা পর্যবেক্ষণে যেতে পারবেন।
২০১৬ সালে উরি হামলার পর ভারত আইডাব্লিউটি’র অধীনে আলোচনা স্থগিত করে দেয় এবং নদীর পানি প্রবাহের হিস্যা আটকে দেয়ার হুমকি দেয়। ভারত সে সময় বলেছিল যে, তারা পাঞ্জাব, রাজস্থান, দিল্লি ও হরিয়ানার পানি সঙ্কট মেটানোর জন্য এই নদীগুলোর পানি প্রবাহ ঘুরিয়ে এই রাজ্যগুলোতে নিয়ে যাবে।
প্রতি বছর অন্তত একবার পিআইসি’র বৈঠক হওয়ার কথা - এক বছর ভারতে, দ্বিতীয় বছর পাকিস্তানে। গত বছরের আগস্টে লাহোরে ১১৫তম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। চলতি বছর ভারতে ১১৬তম বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সূত্র : এসএএম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।