Inqilab Logo

শনিবার ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ২৯ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

১২ ব্যাংকের এডিআর সমন্বয়ের সময় বাড়বে না

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩০ জানুয়ারি, ২০১৯, ৮:২৭ পিএম

আইনে বেঁধে দেওয়া সীমার অতিরিক্ত ঋণ বিতরণকারী ১২ ব্যাংককে আগামী মার্চ মাসের মধ্যেই তা সমন্বয় করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক এই সময়সীমা আর বাড়াবে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. ফজলে কবির এ কথা জানিয়েছেন।

বুধবার (৩০ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণাকালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।

সূত্র মতে, আগ্রাসী ব্যাংকিং এর কারণে আলোচিত ব্যাংকগুলো এ সমস্যায় পড়েছে। এই ব্যাংকগুলোতে এডিআর বা ঋণ-আমানত অনুপাত সীমার বেশি পরিমাণ ঋণ রয়েছে। এদের মধ্যে বেশিরভাগই আমানতের অনুপাতের চেয়ে বেশি ঋণ দিয়েছে। অন্যদিকে দুয়েকটি ব্যাংক বেশি ঋণ না দিলেও তাদের আমানত কমে যাওয়ায় ঋণের পরিমাণ নির্দিষ্ট অনুপাতের সীমার উপরে চলে গেছে। ব্যাংকগুলো হচ্ছে-ফারমার্স ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক, এবি ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, এনআরবি ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক এবং রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক। ইসলামী ব্যাংকগুলোর মধ্যে সীমার বাইরে আছে এক্সিম ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক এবং শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুসারে, সাধারণ ব্যাংকগুলো তাদের আমানতের সর্বোচ্চ ৮৩ দশমিক ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ দিতে পারে। অর্থাৎ কোনো ব্যাংকে ১০০ টাকা আমানত থাকলে সেখান থেকে সর্বোচ্চ ৮৩ টাকা ৫০ পয়সা পর্যন্ত ঋণ দিতে পারবে। আর ইসলামী ব্যাংক হলে দিতে পারবে ৮৯ টাকার ঋণ। আলোচিত ব্যাংকগুলো এই সীমার চেয়ে বেশি পরিমাণ ঋণ বিতরণ করে আইন লংঘন করেছে। এর প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণ-আমানতের অনুপাত নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে নামিয়ে আনতে ৩১ মার্চ পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়। এই সময়সীমাই আর বাড়ানো হবে না বলে ঘোষণা দেন গভর্নর।

আগামী মার্চ মাসের মধ্যে সকল ব্যাংক ঋণ-আমানত অনুপাত বা এডিআর বাস্তবায়ন করতে না পারলে সময় বাড়ানো হতে পারে কিনা জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেন, আমাদের বাজারে এখন যথেষ্ট পরিমাণ উদ্বৃত্ত তারল্য (সারপ্লাস লিকুইডিটি) রয়েছে। সে কারণে এখন এডিআর বাস্তবায়নের সময়সীমা বৃদ্ধির বিষয়ে কিছু ভাবছি না।

তিনি বলেন, ২০১৮ এর নভেম্বরের হিসাব অনুযায়ী ৭৯ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা উদ্বৃত্ত তারল্য রয়েছে। বর্তমানে ব্যাংক খাতের গড় এডি রেশিও ৭৭ দশমিক ৩৭ শাতাংশ। ৫৯টি ব্যাংকের মধ্যে শুধুমাত্র ১১ টি ব্যাংকের এডি রেশিও কিছুটা বেশি রয়েছে। এছাড়া ৪৮টি ব্যাংক এই সীমার মধ্যেই রয়েছে। কাজেই আমি মনে করি এখনও যথেষ্ট সময় আছে। আগামী মার্চ মাসের ৩১ তারিখের মধ্যে সবাই এই সীমার মধ্যে চলে আসতে পারবে বলে আশা ব্যক্ত করেন গভর্নর।

উল্লেখ, দেশের বিশিরভাগ ব্যাংক এই নির্দেশনা অনুসরণ করলেও এই সীমানার বাইরে রয়েছে ১২টি ব্যাংক। ২০১৯ সালের মার্চ মাসের মধ্যে নির্ধরিত ঋণ-আমানত অনুপাত (এডিআর) সমন্বয় করা সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ থাকলেও এখন আর কোনো লাভ হবে বলে জানিয়ে দিলেন গভর্নর।

এই প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘ব্যাংকিং রিফর্মস অ্যাডভাইজার’ এস কে সুর চৌধুরি যুক্ত করে বলেন, ঋণ আমানত অনুপাত বাস্তবায়ন করতে গিয়ে বেসরকারি ঋণে নেতিবাচক প্রভাব পড়ারও কোনো আশঙ্কা নেই। যদি কোনো ব্যাংক এরকমটা করে থাকে তাহলে সেটা একান্তই তাদের সমস্যা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ব্যাংক

৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ