বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
শিক্ষকদের একটি অংশ কর্তৃক বিভিন্ন দাবীতে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচীর বিপরীতে শিক্ষার্থীদের ক্লাস ও পরীক্ষা চালুর দাবিতে আন্দোলনমুখর দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক কার্যক্রম অচল হয়ে পড়েছে। গত নভেম্বর মাস থেকে চলে এই আসা অচলাবস্থা নিরসনে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকে দায়ী করছে আন্দোলনকারী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
ইতোমধ্যেই দুই বিভাগের শিক্ষার্থীরা দেড় বছরের সেশন জোটের কবলে পড়ে গেছে। শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবনের এই দায় কে নেবে আন্দোলনকারী শিক্ষকেরা নাকি প্রশাসন। গত মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে হাবিপ্রবি’র প্রশাসনিক ভবনে তালা দেয় শিক্ষার্থীরা। পরে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যালয়, লাইব্রেরী, টিএসসিসহ অন্যাান্য কার্যালয়েও তালা দেয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে বসে বিক্ষোভ করে। পরে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাসভবনের সামনে বসে পড়েছে।
শিক্ষার্থীরা জানায়, গত প্রায় আড়াই মাস ধরে শিক্ষকরা ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রেখে আন্দোলন করছে। এতে করে তারা শেসনজটের মধ্যে পড়েছেন। কবে নাগাদ সঙ্কটের সমাধান হবে সেটাও অনিশ্চিত। রোববার থেকে ক্লাস-পরীক্ষা চালুর আশ্বাস দিলেও প্রশাসন তা করতে পারেনি। তাই গতকাল সোমবার থেকে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমেছে। এদিকে সোমবার রাত থেকে প্রায় ৪ ঘন্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ জন শিক্ষককে অবরোধ করে রেখেছিল শিক্ষার্থীরা।
এর আগে ক্লাস-পরীক্ষা চালুর জন্য রোববার দিবাগত রাতে ভিসির বাসভবনে শিক্ষকসহ ভিসিকে অবরুদ্ধ করে শিক্ষার্থীরা। পরে আশ্বাস দেয়া হয় সোমবার সকালের মধ্যে ক্লাস-পরীক্ষা চালু হবে। কিন্তু সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শিক্ষকদের সাথে আলোচনা করেও সঙ্কট নিরসনে কোন সুরাহা করতে পারেনি প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৪ নভেম্বর থেকে বেতন বৈষম্য দুরীকরণ, সহকারী অধ্যাপকদের লাঞ্ছিত ও নারী শিক্ষিকাদের শ্লীলতাহানিকারীদের বিচার, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, রেজিষ্ট্রার ও ছাত্র উপদেষ্টার বহিস্কার ও দুই সহকারী অধ্যাপকের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন করছেন নতুন পদোন্নতিপ্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপকরা। তাদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরামও। এতে করে গত আড়াই মাস ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আন্দোলনে থাকায় হাবিপ্রবির অধিকাংশ ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানায়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা নিজ অবস্থান ও সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছেন। যাতে করে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। ক্লাস-পরীক্ষা চালুর ব্যাপারে কথা দিয়েও কথা রাখা হচ্ছে না। ক্লাস-পরীক্ষা চালুর জন্য দিনাজপুর-রংপুর মহাসড়ক অবরোধ করার হুমকি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
অপরদিকে একইসাথে ইনক্রিমেন্ট প্রদান বা বেতন বৈষম্য নিরসনের দাবীতে ৫৭ শিক্ষক আন্দোলন শুরু করে। এরই মধ্যে গত ১৪ নভেম্বর ও ২৯ নভেম্বর দুটি ঘটনার মধ্যে ২৯ তারিখের ঘটনায় তাৎক্ষনিকভাবে দুজন শিক্ষককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলেও ১৪ তারিখের ঘটনায় কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। বেতন বৈষম্যের দাবীতে ক্লাস বর্জনকারী শিক্ষকদের দাবীর প্রতি সমর্থন জানিয়ে প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরাম এর সদস্যরা ক্লাস বর্জন শুরু করে।
শিক্ষকদের দাবীর ব্যাপারে উপাচার্য প্রফেসর ড. মু. আবুল কাশেম জানান, যথাযথ নিয়ম মেনেই দুই শিক্ষককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছিল। তারপর দুই ঘটনায় কমিটি করা হয়েছে। কমিটির সদস্য করা হয়েছে আন্দোলনকারী শিক্ষকদের। তারা যার নাম দিবে সেই হবে সদস্য। কিন্তু তারা নাম না দেয়ায় কমিটি কাজ করতে পারছে না। অপরদিকে ইউজিসি’র নির্দেশনা না থাকায় ইনক্রিমেন্ট প্রদান করা সম্ভব নয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।