পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
ভোক্তা পর্যায়ে সকল ক্ষেত্রে প্যাকেটজাত পণ্য ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলেন, প্যাকেটের বাইরে খোলা বা ড্রামের পণ্যের কোনো লেবেল, মান না থাকায় স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকে। ফলে প্যাকেটজাত পণ্যের মান ভালো ও স্বাস্থ্যসম্মত হওয়ায় ভোক্তাদের এ বিষয়ে সচেতন করতে হবে। পাশাপাশি ভারতে পণ্য রফতানিতে নন ট্যারিফ বেরিয়ার কমানো, নির্দিষ্ট একটি স্থান থেকে ভ্যাট আদায়, পণ্যের ন্যায্য মূল্য নির্ধারণে উৎপাদক, পরিবেশক ও ভোক্তা এ তিন পর্যায়ে অভিন্ন মূল্য নির্ধারণের পরামর্শ দেন তারা।
সোমবার (২৮ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্মেলন কক্ষে দেশীয় শিল্পের স্বার্থ সংরক্ষণে বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের ভূমিকা এবং শুল্ক সংক্রান্ত সহায়তা বিষয়ে মতবিনিময় ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সেমিনারে বক্তরা এসব কথা বলেন। মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের সদস্য শেখ আব্দুল মান্নান, বিশেষ অতিথি সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলুর রহমান। ট্যারিফ কমিশনের সদস্য আবু রায়হান আলবেরুণীর সঞ্চালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের সদস্য ড. মোস্তফা আবিদ খান।
শেখ আব্দুল মান্নান বলেন, ভারত আমাদের ২৫টি পণ্য ছাড়া সকল পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দিলেও কিছু কিছু নন ট্যারিফ বেরিয়ারের জন্য এ সুবিধা আমরা পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারি না। এ জন্য আমাদের আগে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করতে হবে। এরপর সে বিষয়গুলো নিয়ে উভয়পক্ষ আলোচনা করে সমাধান করা হবে। ইতোমধ্যে অনেকগুলোর সমাধানও হয়েছে।
তিনি বলেন, এলডিসি দেশ হিসেবে আমরা অনেক দেশে শুল্কমুক্ত সুবিধা পেয়ে থাকি। সেসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে শুল্ক নির্ধারণ করতে হয়। আমরা এমন কিছু করবো না যাতে দেশীয় শিল্পের ক্ষতি হয়। তাদের স্বার্থ সংরক্ষণ করেই আমরা সিদ্ধান্ত নেই। পণ্যের ন্যায্য দাম নির্ধারণে ও দেশীয় শিল্প সুরক্ষায় যা প্রয়োজন সব করা হবে। এজন্য ব্যবসায়ীদেরও আন্তরিক হতে হবে। তথ্য প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সকলে সহযোগিতার প্রয়োজন রয়েছে। আমাদের বাণিজ্য বাড়ছে সেজন্য জনবলও বাড়াতে হবে। পাশাপাশি পণ্যের বহুমুখীকরণ ও নতুন নতুন বাজারের দিকে যেতে হবে।
ফজলুর রহমান বলেন, পণ্যে ভেজালের নামে ব্যবসায়ীদের হয়রানি বন্ধ করতে হবে। কারণে-অকারণে ব্যবসায়ীদের নামে নোটিশ, ওয়ারেন্ট ইস্যু দেয়া কমানো এবং এ সকল ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। পাশাপাশি পণ্যের ভেজাল নিয়ন্ত্রণে উৎপাদকদের নিয়ে কাজ করলে ভালো সুফল পাওয়া যাবে। এছাড়া বিএসটিআই, ট্যারিফ কমিশন ও ভোক্তা অধিদফতরের কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি মনিটরিং কমিটি করলে হয়রানি কমবে। একই সঙ্গে ট্যারিফ কমিশনকে একটি স্বচ্ছ গাইডলাইন দিতে হবে।
তিনি বলেন, বাজারে পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে হলে পণ্য পরিবহণে ড্রামের পরিবর্তে প্যাকেট ব্যবহার করতে হবে। তাহলে ভোক্তারা মানসম্মত ও ন্যায্য দামে পণ্য পাবে। কারণ ড্রামের পণ্যের কোনো মান থাকে না। পাশাপাশি স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে। এজন্য দুই টাকা দাম বেশি হলেও সকল ক্ষেত্রে প্যাকেটজাত পণ্য ব্যবহার করা যেতে পারে বলে জানান তিনি।
মোস্তফা কামাল বলেন, নন ট্যারিফ বেরিয়ার নিয়ে ভারতে সঙ্গে যে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে রফতানি বাড়াতে দ্রুত সমাধান করতে হবে। পণ্যের ন্যায্য দাম নির্ধারণ করাসহ সকল ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ ভ্যাট রেখে ভ্যাটের হার কমানো এবং বিভিন্ন স্থান থেকে ভ্যাট আদায় না করে নির্দিষ্ট একটি স্থান থেকে ভ্যাট আদায়ের কথা বলেন তিনি।
বক্তারা বলেন, পণ্যের দাম নির্ধারণে উৎপাদক, পরিবেশক ও ভোক্তা এ তিনটি পর্যায়কে বিবেচনায় আনতে হবে। ভ্যাট নিয়ে হয়রানি বন্ধে বিভিন্ন স্থান থেকে ভ্যাট না নিয়ে নির্দিষ্ট একটি স্থান থেকে ভ্যাট নিতে হবে। এছাড়া পণ্য রফতানিতে ভারতে নন ট্যারিফ ব্যারিয়ার কমানো, কিছু পণ্যে পলিব্যাগ ব্যবহার রাখার পরামর্শ দেন তারা। একই সঙ্গে কোনো আইন প্রণয়নের আগে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে পরামর্শ করে নিলে সকলের জন্য ভালো ফল পাওয়া যাবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।