বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) উপ-নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্ব›িদ্বতার জন্য ২১ জন মনোয়নপত্র কিনেছেন। তাদের মধ্যে দু’জন ছাড়া সবাই গত বছর মনোনয়নপত্র কিনেছিলেন। উচ্চ আদালত এ নির্বাচনের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার পর তাদের আর নতুন করে মনোনয়নপত্র কিনতে হবে না। কিন্তু এক বছর পর এবং একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হওয়ায় অনেকেই এখন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চাচ্ছেন না। আবার কেউ কেউ এখনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। তবে প্রধানবিরোধী দল বিএনপি উপ-নিবাচনে অংশগহণ করবে না তা জানিয়েছে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে এবং উত্তর ও দক্ষিণের কাউন্সিলর পদে নির্বাচনের জন্য এক বছর আগে ঘোষিত তফসিলে যারা মনোনয়নপত্র তুলেছিলেন বা জমা দিয়েছিলেন, তাদের নতুন করে মনোনয়নপত্র তুলতে বা জমা দিতে হবে না বলে জানিয়েছেন দুই সিটির নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা।
গতকাল রোববার দুই সিটির নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল কাশেম সাংবাদিকদের এ কথা জানান। তিনি বলেন, নতুন করে যে তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে, তা আগের তফসিলের ধারাবাহিকতা। সে জন্য আগে য়ারা মনোনয়নপত্র নিয়েছেন বা জমা দিয়েছেন, তাদের নতুন করে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ বা জমা দিতে হবে না। তবে কোনো প্রার্থী চাইলে তথ্য হালনাগাদ করে নতুন করে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী মোহাম্মদ ফজলে বারী মাসউদ বলেন, বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সরকার যে পরিবেশ সৃষ্টি করেছে তাতে নির্বাচনে যাওয়া আমাদের জন্য উচিত হবে না। বরং সরকারের উচিত হবে গণভবনে বসে তাদের প্রার্থীদের বিজয়ী ঘোষণা করা। এতে টাকার অপচয় হবে না। মানুষের সময়ও বাঁচবে।
স্বতন্ত্র প্রার্থী জুনায়েদ সাকী বলেন, মেয়র পদে নির্বাচন করব কি না- এখনও সিদ্ধান্ত নেইনি। আজ সোমবার এ বিষয়ে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত জানাব।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা উত্তরের নির্বাচনের জন্য গত বছর মেয়র পদে মনোয়নপত্র কিনেছেন সেলিম উদ্দিন (স্বতন্ত্র), মোহাম্মদ শাকিল আহমেদ (এনডিএম), এইচবিএম ইকবাল (আওয়ামী লীগ), মোহাম্মদ ফজলে বারী মাসউদ (ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ), স্বাধীন আক্তার আইরিন (স্বতন্ত্র), শাকিল ওয়াহেদ (স্বতন্ত্র), মো. মাসুম বিল্লাহ (ন্যাশনাল পিপলস পার্টি- এনপিপি) রবিন কুমার পাল (ডিজিটাল আওয়ামী লীগ), গাজী ইয়াকুব ইসলামী (ঐক্যজোট, কামরুল ইসলাম (বিএনএফ), আবুল কালাম আজাদ (জাতীয় বিপ্লবী পার্টি), আনিসুজ্জামান খোকন (স্বতন্ত্র), মোহাম্মদ ওসমান গনি (আওয়ামী লীগ), মুরসালিন হায়দার (স্বতন্ত্র), ফারুক আহমেদ (স্বতন্ত্র), এইচ এম গোলাম রেজা (স্বতন্ত্র), খালেদা খানম রুনু (বাংলাদেশ সত্যব্রত আন্দোলন), জুনায়েদ সাকী (স্বতন্ত্র), জিল্লুর রহমান চৌধুরী (স্বতন্ত্র), আনিসুর রহমান ন্যাশনাল পিপলস পার্টি ও আতিকুল ইসলাম (আওয়ামী লীগ)।
ঢাকা উত্তরের মেয়রের মেয়াদ শেষ হবে ২০২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত। এ ছাড়া ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন স¤প্রসারিত ওয়ার্ডে সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ১৮টি করে মোট ৩৬টি পদে নির্বাচন হবে। তাদেরও মেয়াদ ২০২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত। তাই অনেকেই এখন এ ব্যাপারে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। এ ছাড়া একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়েও অনেক দল ও প্রার্থীর মধ্যে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। তাই তারাও পিছিয়ে যাচ্ছেন।
২২ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশন (ইসি) ঢাকা উত্তর সিটির (ডিএনসিসি) মেয়র এবং ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটির (ডিএসসিসি) ১৮টি করে ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে নির্বাচনের পুনঃ তফসিল ঘোষণা করে। এতে বলা হয়েছে, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ৩০ জানুয়ারি। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ২ ফেব্রুয়ারি, প্রত্যাহারের শেষ দিন ৯ ফেব্রুয়ারি। ভোট গ্রহণ ২৮ ফেব্রুয়ারি। ওই দিন ইসি সচিবালয়ের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ সাংবাদিকে বলেছিলেন, আগের তফসিলে জমা দেওয়া মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যাবে। তাই প্রার্থীদের নতুন করে মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে। আগের প্রার্থীদের জামানতের টাকা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে সচিব বলেছিলেন, কোনো প্রার্থী চাইলে তা ফেরত দেওয়া হবে।
২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর আনিসুল হকের মৃত্যু হলে ডিএনসিসির মেয়রের পদটি শূন্য ঘোষিত হয়। এরপর ইসি ৯ জানুয়ারি এই পদে উপনির্বাচন এবং ডিএনসিসি ও ডিএসসিসিতে নতুন যুক্ত ১৮টি করে ওয়ার্ডে সাধারণ নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করে। ভোট হওয়ার কথা ছিল ২৬ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ১৭ জানুয়ারি এই নির্বাচনের তফসিলের কার্যকারিতা স্থগিত করেন। সম্প্রতি আদালত এ-সংক্রান্ত সব কটি রিট আবেদন খারিজ করে রায় দেন। যার ফলে নির্বাচন অনুষ্ঠানের আইনি জটিলতা দূর হয়। আগের তফসিলে ডিএনসিসির মেয়র পদে নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগের আতিকুল ইসলাম, এইচ বি ইকবালসহ মোট ২১ জন প্রার্থী মনোনয়ন ফরম তুলেছিলেন। তবে মেয়র পদে আতিকুল ইসলামের পক্ষে তার নির্বাচন সমন্বয়কারী এ কে এম মিজানুর রহমান গতকাল রোববারও একটি মনোনয়ন ফরম তোলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।