পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মার্কেটগুলো অবৈধ ভাবে গড়ে উঠা দোকান উচ্ছেদে ফের মাঠে নামছে সংস্থাটি। সে অনুযায়ী প্রস্তুতি গ্রহণ করছে ডিএসসিসি। মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসের অনুমোদন পেলে শিঘ্রই আবারো উচ্ছেদ শুরু করা হবে। তবে করোনা পরিস্থিতি যদি আরো অবনতি হয় এবং লকডাউন পুনরায় বাড়ানো হয় তাহলে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করতে সময় নেবে সংস্থাটি।
২০২০ সালের ৮ ডিসেম্বর ফুলবাড়িয়া-২ মার্কেটে অবৈধ দোকান উচ্ছেদের মাধ্যেমে অভিযান শুরু করে ডিএসসিসি। কয়েকদিনে এ মার্কেটের মোট ৯১১টি অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করা হয়। এরপর ১৭ ডিসেম্বর রাজধানীর গুলিস্তানের সুন্দরবন মার্কেটের মূল নকশার বাইরে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ৭৫৩টি দোকান উচ্ছেদ শুরু করে ডিএসসিসি।
এরপর থেকে দীর্ঘদিন অবৈধ দোকান উচ্ছেদ বন্ধ রাখে ডিএসসিসি। গত বছরের শেষ দিনে ওয়াসার কাছ থেকে খাল সিটি করপোরেশনের হস্তান্তর হলে খাল উদ্ধারে ব্যস্ত ছিল সংস্থাটি। বর্ষাকালের প্রস্তুতি হিসেবে খাল উদ্ধার ও ড্রেনেজ পরিষ্কারে মনোযোগী ছিল ডিএসসিসি। বর্তমানে বর্ষাকাল শেষের দিকে হওয়ায় পুনরায় মার্কেটগুলোতে থাকা অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে ডিএসসিসি।
এ বিষয়ে ডিএসসিসির নির্বাহী মেজিস্ট্রেট ও সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. মুনিরুজ্জামান ইনকিলাবকে বলেন, ডিএসসিসির মার্কেটগুলোর অবৈধ দোকান উচ্ছেদের জন্য প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। মেয়র মহোদয়ের অনুমোদন পেলে অভিযান শুরু হবে। তিনি আরো জানান, করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে অভিযান শুরু হবে।
এদিকে অবৈধ দোকান উচ্ছেদের পর আবারো অসাধু একটি সিন্ডিকেট সুন্দরবন স্কোয়ার মার্কেটে প্রায় ৬০টি দোকান অবৈধ ভাবে পুনরায় নির্মাণ করেছে। গত এপ্রিল মাসের লকডাউনের সময় মার্কেট যখন বন্ধ ছিল তখন এ দোকানগুলো নির্মাণ করা কয়। এ বিষয়ে মুনিরুজ্জামান বলেন, এসব দোকানও উচ্ছেদ করা হবে।
সিটি করপোরেশনে সূত্র জানায়, সংস্থার ১৮টি মার্কেটে ৩ হাজার ৮১টি অবৈধ দোকান গড়ে তুলেছে একটি প্রভাবশালী অসাধু চক্র। প্রায় দু’দশক ধরে এসব দোকান তৈরি করে বিক্রি করা হয়েছে। এরমধ্যে ফুলবাড়িয়া সুপার মার্কেট-২ এবং সুন্দরবন স্কোয়ার মার্কেটে প্রায় এক হাজার ছয়শত অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করে ডিএসসিসি।
আরও জানা গেছে, সে সময় সিটি কর্পোরেশন সংশ্লিষ্টদের যোগসাজশে মার্কেটের মালিক সমিতির নেতাদের সমন্বয়ে গড়ে উঠা ওই সিন্ডিকেট ডিএসসিসির এসব মার্কেটের নকশা লঙ্ঘন করে অবৈধ দোকানপাট নির্মাণ করলেও নির্বিকার ছিল কর্তৃপক্ষ। এসব মার্কেটের অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ করতে আগের কোনো মেয়র বা প্রশাসক কোনো উদ্যোগ নেননি। তবে ডিএসসিসির বর্তমান মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের ঢাকা অধ্যুষিত ডিএসসিসিকে বদলে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। প্রথম দিন থেকে তিনি সংস্থার অনিয়ম বন্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছেন।
তারই ধারাবাহিকতায় মার্কেটের নৈরাজ্য বন্ধে উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তার নির্দেশে ডিএসসিসির
ডিএসসিসি সূত্রে জানা যায়, নকশানুযায়ী নিউ সুপার দক্ষিণ মার্কেটের দোকান সংখ্যা ১ হাজার ২২৪টি। ওই মার্কেটে নকশাবহির্ভূতভাবে ২০টি দোকান গড়ে বিক্রি করেছে অসাধু চক্র। নিউ সুপার উত্তর ডি-বøক মার্কেটের নকশানুযায়ী দোকান সংখ্যা ৫২৭টি। বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৫২২টি। মামলার কারণে ৫টি বরাদ্দ দেয়া সম্ভব হয়নি। এ মার্কেটেও সম্পত্তি বিভাগের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের সহায়তায় ৪১টি দোকান গড়ে বিক্রি করেছে অসাধু চক্র। চকবাজার পাবলিক টয়লেট নকশানুযায়ী মার্কেটের দোকান সংখ্যা ৩৬টি। এ মার্কেটে নকশাবহির্ভূতভাবে ১টি তৈরি করে বিক্রি করা হয়েছে।
নিউমার্কেট এলাকার গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ সংলগ্ন দুই পাম্প স্টেশনের মাঝখানে নিজ খরচে সেমিপাকা ঘর তুলে নেয়ার শর্তে ৮৪টি দোকান বরাদ্দ দেয়া হয়। পরে সেখানে অবৈধভাবে তিন তলা মার্কেট নির্মাণ করে বরাদ্দকৃত দোকানের চেয়ে আয়তনে অনেক বড় দোকান তৈরি করা হয়েছে। একইভাবে অবৈধভাবে ১১২টি দোকান তৈরি করে বিক্রি করেছে মার্কেট সমিতির নেতা এবং স্থানীয় পর্যায়ের সরকারদলীয় রাজনৈতিক দলের অসাধু নেতারা।
সূত্র জানায়, গুলিস্তান ট্রেড সেন্টারে প্রায় ৪০০টি দোকান অবৈধ, ঢাকা ট্রেড সেন্টারে প্রায় ২০০ দোকান অবৈধ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ সংলগ্ন মার্কেটে নকশাবহির্ভূত দোকান সংখ্যা ৯টি, বঙ্গবন্ধু এভিনিউ হকার্স মার্কেটে দোকান ২৫০টি, নর্থসাউথ রোড সাইড মার্কেটে ৪টি, পুরান ঢাকার নওয়াব ইউসুফ মার্কেট, ভবন-১, ২, ৩, ৪, ৫-এ দোকান ৩৬টি, নওয়াব ইউসুফ এক্সটেনশন মার্কেটের অবৈধ দোকান ৭টি।
কাপ্তানবাজার কমপ্লেক্স ১ নম্বর ভবনের অবৈধ দোকান সংখ্যা ৪৫১টি। কাপ্তানবাজার কমপ্লেক্স ২ নম্বর ভবনের অবৈধ দোকান সংখ্যা ৪৪৭টি। আহসান মঞ্জিল সুপার মার্কেটের অবৈধ দোকান সংখ্যা ৩৮টি। অনুমোদন ছাড়া ভবনের ছাদে ৩২টি দোকান নির্মাণসহ মোট ৩৮টি দোকান গড়ে বিক্রি করেছে অসাধু চক্র। ল²ীবাজার মার্কেটের অবৈধ দোকান সংখ্যা ৩৫টি এবং সূত্রাপুর কমিউনিটি সেন্টার মার্কেটের অবৈধ দোকান সংখ্যা ৪৭টি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।