পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কঠিন সুদে ২ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিতে যাচ্ছে চীনের এক্সিম ব্যাংক। ৩ শতাংশের উপরে সুদে ঋণ পরিশোধ করতে হবে বাংলাদেশকে। এর আগে ২ শতাংশ সুদে ঋণ দিয়েছে চীনা ব্যাংকটি। প্রতি ডলার সমান ৮৪ টাকা ধরে বাংলাদেশি মুদ্রায় বর্তমান ঋণের পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে প্রায় ২৪ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা। ঋণের সব প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে, শুধু চীন সরকারের অনুমোদনের অপেক্ষা।
চীন সরকারের অনুমোদনের পরে ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরেরই চীনা এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে ঋণ চুক্তিসই হবে বলে জানিয়েছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) চীনা ডেস্ক। ৫ বছরের গ্রেস প্রিয়ড-সহ ২০ বছরে বাংলাদেশকে ঋণ পরিশোধ করতে হবে। ইআরডি সূত্র জানায়, বিদ্যুৎ খাতের দুটি প্রকল্পের আওতায় এই ঋণ দিচ্ছে চীনা এক্সিম ব্যাংক। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সফরে বাংলাদেশকে ঋণ সহায়তার যে সমঝোতা চুক্তি চীন করেছিল, সেখানে নমনীয় ফ্ল্যাট সুদের হার ২ শতাংশ এবং অন্যান্য চার্জ মিলে সাড়ে ৩ শতাংশে থাকার কথা। কিন্তু চড়া সুদের ঋণে সুদের ফ্ল্যাট রেট ৩ শতাংশ এবং অন্যান্য চার্জ মিলে সাড়ে চার থেকে পাঁচ শতাংশ সুদ গুণতে হবে।
ইআরডি বলছে, চীনা প্রেসিডেন্টের ঢাকা সফরে প্রায় ২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণ সহায়তার সমঝোতা করে চীন। তবে বর্তমানে ২৭ প্রকল্পের বিপরীতে ২০ থেকে ২২ বিলিয়ন ডরাল ঋণ দেবে চীন। ২৭ প্রকল্পের মধ্যে ৮টি প্রকল্পকে অগ্রাধিকার দেয় সরকার। এরমধ্যে বিদ্যুতের দুটি প্রকল্পকে রাখা হয়েছে।
এরমধ্যে ‘এক্সপানশন অ্যান্ড স্ট্রেংদেনিং অব পাওয়ার সিস্টেম নেটওয়ার্ক’ প্রকল্প অন্যতম। প্রকল্পটি ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি) বাস্তবায়ন করবে। এই প্রকল্পে ১ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ঋণ দেবে চীন। প্রকল্পের আওতায় ইতোমধেই সরকারি খাত থেকে এডিপিতে ৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। অন্য প্রকল্প হচ্ছে ‘পাওয়ার গ্রিড নেটওয়ার্ক স্ট্রেংদেনিং’। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (পিজিসিবি)। প্রকল্পে ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ঋণ দেবে চীনা এক্সিম ব্যাংক। প্রকল্পের আওতায় চলতি বছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) ৭১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। প্রকল্প দুটির আওতায় সরকারি খাত থেকে বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
ইআরডি সূত্র জানায়, বর্তমানে মাথাপিছু আয় ১৭৫১ ডলার। এছাড়াও স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বের হয়ে উন্নয়নশীল দেশের দিকে যাত্রা শুরু করছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘের মূল্যায়নেই এটা হবে। তবে নানা আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেতে ২০২৪ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এসব কারণেই মূলত চীনা ঋণে বেড়েছে সুহদার।
ইআরডি’র অতিরিক্ত সচিব (এশিয়া উইং) জাহিদুল হক বলেন, বিদ্যুতে দুটি প্রকল্পের আওতায় প্রায় তিন বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ পেতে যাচ্ছি। সকল প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে, শুধু মাত্র চীন থেকে অনুমোদন পাওয়ার অপেক্ষায়। আশা করছি চীনের অনুমোদন পাওয়া গেলে সর্বোচ্চ এক মাস সময় লাগবে।
ঋণের সুদ প্রসঙ্গে চীনা ডেস্কে দায়িত্বে থাকা ওই কর্মকর্তা বলেন, ঋণের সুদ ৩ শতাংশ। এর আগে দুই শতাংশ হারে চীন ঋণ দিতো। আমি প্রায় দেড় বছর এখানে দায়িত্ব পালন করছি, কখনো দুই শতাংশের উপরে চীন সরকারকে সুদ নিতে দেখিনি।
রাজশাহীর উন্নয়নে চীনা সহযোগিতার আশ্বাস রাষ্ট্রদূতের
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, রাজশাহীর উন্নয়নে সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীন রাষ্ট্রদূত ঝ্যাং জুয়ো। গতকাল দুপুরে নগরভবনে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এ আশ্বাস প্রদান করেন। রাজশাহী পরিদর্শনে এসে গতকাল দুপুরে নগরভবনে মেয়রের আমন্ত্রণে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে আসেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীন রাষ্ট্রদূত ঝ্যাং জুয়ো। এ সময় চীন রাষ্ট্রদূতকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।
পরে মেয়র দপ্তরে মতবিনিময়ে অংশ নেন মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও চীন রাষ্ট্রদূত ঝ্যাং জুয়ো। মতবিনিময়কালে মেয়র রাজশাহীর উন্নয়নে চীন সরকারের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন। জবাবে চীন রাষ্ট্রদূত ঝ্যাং জুয়ো সহযোগিতার আশ^াস প্রদান করেন। মতবিনিময়কালে মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, রাজশাহী কৃষি প্রধান অঞ্চল। এ অঞ্চলে বিপুল পরিমাণ কৃষিপণ্য ও ফল উৎপাদন হয়। সেজন্য কৃষিখাতসহ, গার্মেন্টস ও শিল্পায়নে বিনিয়োগের অনুরোধ জানান। এ ছাড়া মেয়র নগরীর আলোকায়নসহ সার্বিকক্ষেত্রে চীন সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন। রাজশাহীতে পানি শোধনাগার প্রকল্পে চীনের সহযোগিতার জন্য রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জানান।
চীন রাষ্ট্রদূত ঝ্যাং জুয়ো কৃষি ও শিল্পখাতে সহযোগিতা, নগরীর ট্রান্সপোটেন্ট সিস্টেম উন্নয়ন, নগরীর প্রবেশ দ্বারসমূহ চীন-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশীপ গেট স্থাপনের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে ইতোমধ্যে অনেক চীনা প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। রাজশাহীতে তিনটি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। আগামীতেও আরো প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিনিয়োগে উৎসাহিত করা হবে। সেজন্য বাংলাদেশে নিয়োজিত চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতার অনুরোধ জানান।এ সময় চীন রাষ্ট্রদূত ঝ্যাং জুয়ো রাজশাহী মহানগরীর পরিচ্ছন্ন পরিবেশ, স্থানীয় পর্যটন ও ট্রাফিক ব্যবস্থার প্রশংসা করেন।
এরপর রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন থেকে চীন রাষ্ট্রদূতকে শুভেচ্ছা উপহার প্রদান করা হয়। এ সময় চীন রাষ্ট্রদূত রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন ও কাউন্সিলদের শুভেচ্ছা উপহার দেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সেকেন্ড সেক্রেটারি ইয়াং চুজিং, চীন রাষ্ট্রদূতের ব্যক্তিগত সহকারী ঝ্যাং জিয়াং, সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র-১ সরিফুল ইসলাম বাবুসহ সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলরবৃন্দ, সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিব রেজাউল করিম, প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল হক, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা শাহানা আকতার জাহান, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা.এফএএম আঞ্জুমান আরা বেগম, প্রধান পরিছন্ন কর্মকর্তা শেখ মো. মামুনসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।