Inqilab Logo

বুধবার ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

৮৮ বাংলাদেশির ভারতীয় নাগরিকত্বের দরখাস্ত

কূটনৈতিক সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৯ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

ধর্মীয় নিপীড়নের কারণে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে এসে যারা ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেছেন এমন ৮৮ জনের রেকর্ড এখন ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবেচনাধীন রয়েছে। এই হিসাব ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। গত ১৭ই জানুয়ারি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য দেয়া হয়েছে।
সূত্রগুলো ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে নিশ্চিত করেছে যে, ৩৪০০ এর বেশি সংখ্যক আবেদনকারী ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেছে। তারা পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তানের বাসিন্দা। বিভিন্ন রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে তাদের আবেদনগুলো বিবেচনাধীন রয়েছে। এসব আবেদনের মধ্যে ২৬শ’ পাকিস্তান থেকে এবং সাতশ’ এসেছে আফগানিস্তান থেকে। যদিও ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ধর্মভিত্তিক পরিসংখ্যান সংরক্ষণ করে না।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে ২০১৬ সালে ভারত সরকার ভারতের পার্লামেন্টে নাগরিকত্ব সংশোধন বিল উপস্থাপন করে। এই বিলের উদ্দেশ্য হচ্ছে ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলোর ছয়টি নির্যাতিত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে নাগরিকত্ব দেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। এই ছয়টি সংখ্যালঘু সম্প্রদায় হচ্ছে, হিন্দু, জৈন, শিখ, পার্সি, খ্রিষ্টান এবং বৌদ্ধ। পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশ থেকে ২০১৪ সালের আগে যারা ভারতে নাগরিকত্ব পেতে আবেদন করেছেন তাদের বিষয়ে ভারতে বিশেষ করে আসাম এবং উত্তর পূর্ব ভারতের অন্যান্য রাজ্যগুলিতে ব্যাপক প্রতিবাদের জন্ম দিয়েছে। আসামের অল আসাম স্টুডেন্ট ইউনিয়ন এবং নর্থ ইস্ট স্টুডেন্ট অর্গানাইজেশন এই বিষয়ে ধারাবাহিকভাবে প্রতিবাদ দেখিয়ে চলেছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন, আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোতে যে নির্যাতন চলছে এবং সেকারণে তারা যে আশ্রয় নিয়েছে, তাদের বোঝা আসাম অসমানুপাতিক হারে বহন করছে। এই বোঝা শুধু একা আসামের পক্ষে বহন করা উচিত নয়।
ইন্ডিয়ান নাগরিকত্ব বিলে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে ভারতে পৌঁছানো হাজার হাজার অভিবাসীকে নাগরিকত্ব দেয়ার বিষয় আছে। আর এই বিলটি ১৯৮৫ সালের আসাম চুক্তির বিরুদ্ধ।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনলাইনে দেখা যাচ্ছে ২০১৫ সালে ৬০৫ জনকে ২০১৬ সালে ১১৬ জনকে এবং ২০১৭ সালে ৮১৬ জনকে ভারতীয় নাগরিকত্ব দেয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, অনলাইনে নাগরিকত্বের জন্য আবেদনের জমা নেয়া শুরু হয়েছিল ২০১১ সালে। এর আগে এই ধরনের দরখাস্ত নেয়া হতো তবে তা ছিল অফলাইন। ২০১০ সালের আগে যেসব দরখাস্ত অফলাইনে করা হয়েছিল, তার মধ্যে কিছু সংখ্যক এখনো বিভিন্ন রাজ্য সরকার এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন বিবেচনাধীন রয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে আরো বলেছে, ২০১৮ সালে ১০ হাজারের বেশি ব্যক্তিকে লং টার্ম ভিসা বা দীর্ঘমেয়াদি ভিসা (এলটিভি) দেয়া হয়েছে। ১৪ হাজার আবেদনকারীর মধ্যে ১০ হাজারের বেশি জনকেই এলটিভি মঞ্জুর করা হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কর্মকর্তারা আরো বলেছেন, গত চার বছরে পাকিস্তান থেকে নির্যাতিত হয়ে ভারতে আসা ১১ হাজার জনকে এলটিভি দেয়া হয়েছে কিন্তু বাংলাদেশ থেকে কত জনকে এলটিভি দেয়া হয়েছে তার পরিসংখ্যান পত্রিকা রিপোর্টে উল্লেখ নেই। বরং বলা হয়েছে বাংলাদেশ থেকে আসা কতজনকে এলটিভি দেয়া হয়েছে এবং তাদের মধ্যে কতজন আসামে বসবাস করছেন, সেই সংখ্যা এখনো আলাদা করা হয়নি।
ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এর আগে যারা এলটিভি ভিসা পেয়েছেন তাদের জন্য কিছু সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করেছে। যেমন তারা ভারতে সম্পত্তি ক্রয়, ব্যাংক হিসাব খোলা এবং প্যান এবং আধার কার্ড সংগ্রহ করতে পারেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ