Inqilab Logo

রোববার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ভাঙন আতঙ্কে দিশেহারা মানুষ

মেঘনায় তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ জরুরি

এস এম বাবুল (বাবর), লক্ষ্মীপুর থেকে | প্রকাশের সময় : ১৭ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০২ এএম

লক্ষ্মীপুর কমলনগরে মেঘনা নদীর তীর রক্ষা বাঁধের ভাঙন রোধে বর্ষা মৌসুম শুরুর পূর্বেই আরও আট কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ জরুরি। গত দেড় বছরে এক কিলোমিটার তীর রক্ষা বাঁধে ধস নেমেছে অন্তত আট বার। এতে নিঃস্ব হয়েছে কয়েক হাজার পরিবার। এ জনপদের মানুষ এখন নদী ভাঙন আতঙ্কে দিশেহারা। 

কমলনগরের নদী তীর রক্ষা বাঁধের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ হওয়ার কথা থাকলেও তা আজও আলোর মুখ দেখেনি। দ্রæত সময়ের মধ্যে দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু না হলে যেটুকু বাঁধ নির্মাণ হয়েছে তাও নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে মারাত্মক হুমকিতে পড়বে বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে মেঘনার ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন প্রার্থীরা। এখন নতুন সংসদ সদস্য বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নানের কাছে প্রতিশ্রæতির বাস্তবায়ন দেখতে চায় এলাকাবাসী।
২০১৪ সালে কমলনগরে এক কিলোমিটার, রামগতির আলেকজান্ডারে সাড়ে তিন কিলোমিটার ও রামগতিরহাট মাছঘাট এলাকায় এক কিলোমিটার মেঘনা নদীর তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণকরার জন্য ১৯৮ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। ২০১৫ সালের ১ ফেব্রæয়ারি সেনাবাহিনীর তত্ত¡াবধানে ১৯ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন আলেকজান্ডার এলাকায় ভাঙন রোধে বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু করে সাড়ে তিন কিলোমিটার সফলভাবে বাস্তবায়ন করে।
ওই বরাদ্দের ৪৮ কোটি টাকায় কমলনগরে এক কিলোমিটারের কাজ পায় নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড। অর্থ বরাদ্দের দুই বছর পর ২০১৬ সালের শুরুর দিকে প্রতিষ্ঠানটি ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিংকে দিয়ে কাজ শুরু করলেও নি¤œমানের বালু ও জিও ব্যাগ দিয়ে কাজ শুরু করায় স্থানীয়দের চাপের মুখে কাজ বন্ধ করে দেয় প্রতিষ্ঠানটি। ওই সময় কাজের অনিয়মের প্রতিবাদে ও যথাযথভাবে কাজ করার দাবিতে মানববন্ধন করে স্থানীয় এলাকাবাসী। পরবর্তীতে অনিয়মের মধ্য দিয়ে এক কিলোমিটার কাজ করা হলেও দেড় বছরে আট বার ধস নামে বাঁধের ওই অংশে।
সরেজমিনে মাতাব্বরহাট তীর রক্ষা বাঁধ এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, নির্ধারিত এক কিলোমিটার বাঁধ প্রায় বিধ্বস্ত। গত দেড় বছরে ওই বাঁধে আট বার ধস নামে। আগামী বর্ষা মৌসুমে এ বাঁধটিকে নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ সংস্কার ও দুই পাশে আরও বাঁধ নির্মাণ করা না হলে কমলনগরে জন্য মহাবিপদ নেমে আসবে। এমন পরিস্থিতিতে জরুরি ভিত্তিতে তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ প্রয়োজন ।
স্থানীয়রা বলেছেন, গত বর্ষায় এক কিলোমিটার তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণে মাতাব্বরহাট বাজারসহ আশপাশের বেশ কিছু এলাকা রক্ষা পেয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ না হওয়ায় হুমকির মুখেও বাঁধটি। আগামী বর্ষার আগে তীর রক্ষা বাঁধের সংস্কার ও আরও আট কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ জরুরি।
কমলনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত সাইফুদ্দিন আজম বলেন, মূল উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে (ডিপিপি) ২০১৬-১৭ অর্থবছর থেকে কমলনগরে দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রায় সাড়ে আট কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণের দিক নির্দেশনা থাকলেও কর্তৃপক্ষের অবহেলা এবং যথাযথ পদক্ষেপের অভাবে এখনও কাজ শুরু হয়নি। দ্রæত সময়ের মধ্যে বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ না নেয়া হলে নদী গর্বে বিলীন হয়ে যাবে কমলনগর।
কমলনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম নুরুল আমিন মাস্টার বলেন, বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান অতীতেও ব্যক্তিগত উদ্যোগে নদী ভাঙন রোধে কাজ করেছেন। তিনি মহাজোট থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এবার ভাঙন রোধে প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মেঘনা

২৪ জানুয়ারি, ২০২২
৩ নভেম্বর, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ