Inqilab Logo

রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মেঘনায় বরিশালগামী যাত্রীবাহী লঞ্চে আগুন

৯৯৯-এ কল ও ভিডিও ধারণ করায় হামলা

বরিশাল ব্যুরো ও চাঁদপুর থেকে স্টাফ রিপোর্টার : | প্রকাশের সময় : ১০ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০৫ এএম

চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে যাত্রীবাহী ‘এমভি সুরভী-৯’ লঞ্চে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। তবে আগুন লঞ্চে ছড়িয়ে পড়ার আগেই তা নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছেন লঞ্চের কর্মীরা। গত শনিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে মতলব উত্তরের মোহনপুর এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। এমভি সুরভী-৯ নামের লঞ্চটি ঢাকা থেকে বরিশাল যাচ্ছিল। রাত ১২টার দিকে মোহনপুর এলাকা অতিক্রমকালে লঞ্চের ইঞ্জিন রুমে আগুন ধরে যায়। এ সময় লঞ্চে থাকা শত শত যাত্রীর মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। লঞ্চের স্টাফদের প্রচেষ্টায় অল্প সময়ের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ফলে বড় ধরণের ক্ষয়ক্ষতি, প্রাণহানী বা হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

বিআইডব্লিউটিএ’র চাঁদপুরস্থ বন্দর কর্মকর্তা মো. কায়সারুল ইসলাম রাত সাড়ে ১২টায় জানান, লঞ্চের ইঞ্জিনে আগুন ধরার পর কিছু সময়ের মধ্যে তা নিভিয়ে ফেলতে সক্ষম হয় স্টাফরা। ফলে বড় ধরণের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছে লঞ্চটি। লঞ্চটি ওই সময় মোহনপুর এলাকায় নোঙ্গর করে রাখা হয়। পুণরায় দুর্ঘটনার আশঙ্কায় লঞ্চটি বরিশাল যেতে দেওয়া হবে না এমন সিদ্ধান্ত হলেও পরে চাঁদপুর ঘাটে নিয়ে আসা হয়। প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ভোর ৫টায় যাত্রীদের নিয়ে লঞ্চটি বরিশালের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। বন্দর কর্মকর্তা আরো জানান, যাত্রাপথে ইঞ্জিনের সাইলেন্সার থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে কোনো যাত্রী জরুরি সেবা ৯৯৯ নাম্বারে ফোন দেয়। লঞ্চটিতে পাঁচ শতাধিক যাত্রী ছিল। তবে যাত্রীদের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এর আগে গত ২৩ ডিসেম্বর রাতে ঢাকা থেকে বরগুনা যাওয়ার পথে অভিযান-১০ নামের একটি লঞ্চে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। এতে আগুনে পুড়ে ও পানিতে ডুবে প্রায় অর্ধশত যাত্রী প্রাণ হারান।
এদিকে, ৯৯৯-এ কল করা যাত্রীকে চিহ্নিত করে বরিশাল ঘাটে পৌঁছার পর লঞ্চের স্টাফরা তার ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসময় ভিডিওচিত্র ধারণ করতে গেলে দুটি টেলিভিশন চ্যানেলের ক্যামেরাপার্সনদের ওপর হামলা চালিয়ে ক্যামেরা ভাঙচুর করে লঞ্চের কর্মীরা। বিষয়টি তদন্ত করছে বিআইডব্লিউটিএ। সন্ধ্যায় লঞ্চটির ঢাকামুখী যাত্রা বাতিল করে বরিশাল বন্দরে অবস্থানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
যাত্রীদের অভিযোগ, লঞ্চের ইঞ্জিনরুমে আগুন দেখে জরুরি সেবার ৯৯৯ ফোনে কল দেয়া হয়। অনেকে আগুনের ভিডিও ধারণ করেন। নৌপুলিশ চাঁদপুর সংলগ্ন মোহনপুর লঞ্চঘাট এলাকায় লঞ্চটিকে থামিয়ে ফায়ার ব্রিগেডের সহায়তায় তল্লাশি করে কোথাও আগুনের চিহ্ন পাননি। ফলে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পর সকাল সাড়ে ১০টায় সুরভী-৯ লঞ্চটি বরিশাল ঘাটে পৌঁছালে টেলিভিশনের ক্যামেরাম্যানরা ছবি তুলতে যায়। এসময়ে লঞ্চের কর্মচারীরা ৯৯৯-এ কল করা ব্যক্তি, ভিডিও ধারণ করা ব্যক্তিগণ ও টেলিভিশনের ক্যামেরাম্যানদের ওপর হামলা চালায়।
লঞ্চের ইঞ্জিন রুমে দায়িত্বরত গ্রিজারম্যান আনিচুর রহমান জানায়, লঞ্চ পানি দিয়ে পরিস্কার করার সময় কিছুটা পানি অ্যাডজাস্ট পাইপে জমলে ইঞ্জিন গরম হয়ে সেখান থেকে ধোঁয়া নির্গত হয়। পরবর্তীতে তারা লঞ্চ চালিয়ে নির্বিঘ্নে বরিশাল ঘাটে পৌঁছান। এ নিয়ে নদীবন্দর কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, তারা যাত্রীদের মারধরের বিষয়টি নিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করছেন আর ইঞ্জিনে ক্রটির বিষয়টি তাদের টিম দেখভাল করবেন।
এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের ক্যামেরাম্যান দেওয়ান মোহন ও চ্যানেল ২৪ এর ক্যামেরাম্যান রুহুল আমিন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মেঘনায় বরিশালগামী যাত্রীবাহী লঞ্চে আগুন
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ