Inqilab Logo

সোমবার, ২৪ জুন ২০২৪, ১০ আষাঢ় ১৪৩১, ১৭ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

পাঁচ ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন: ইসিসচিব

সংরক্ষিত নারী আসনের তফসিল ১৭ ফেব্রুয়ারি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ জানুয়ারি, ২০১৯, ৭:৫৩ পিএম

উপজেলা নির্বাচনে দেশের সব জেলার সদর উপজেলায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোট গ্রহণ হবে। মার্চের প্রথম সপ্তাহে উপজেলা নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এবার পাঁচ ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন করবে ইসি। এ ছাড়া একাদশ জাতীয় সংসদের জন্য সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচনের জন্য আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি তফসিল ঘোষণা করা হবে।
গতকাল সোমবার কমিশন সভা শেষে ইসির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, সংরক্ষিত ৫০ আসনের প্রার্থী মনোনয়নের বিষয়ে সংসদে প্রতিনিাধিত্বকারী দল ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদেরে দল ও জোটগত অবস্থান জানাতে চিঠি দেওয়া হবে। ৩০ জানুয়ারির মধ্যে এ বিষয়ে কমিশনকে অবহিত করতে হবে। ১২ ফেব্রুয়ারি এ নির্বাচনের ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। আইন অনুযায়ী, সংসদের সাধারণ আসনে শপথ গ্রহণকারী ব্যক্তিরাই সংরক্ষিত আসনের নির্বাচনে ভোটার হবেন। ভোটার তালিকা প্রকাশ হয়ে গেলে ১৭ ফেব্রুয়ারি নারী আসনের তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে জানান হেলালুদ্দীন। সংসদ নির্বাচনের ফলাফলের গেজেট প্রকাশের ৯০ দিনের মধ্যে সংরক্ষিত নারী আসনের ভোট করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, বিএনপি ও গণফোরাম এখনও শপথ না নিলেও তাদের অবস্থান জানার পর করণীয় নির্ধারণ করা হবে।
৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর ২৯৮ আসনে নির্বাচিতদের নাম-ঠিকানাসহ গেজেট প্রকাশিত হয়েছে ১ জানুয়ারি। স্থগিত থাকা ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের ফলও এসে গেছে। বিএনপির এক প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে আটকে যাওয়া গাইবান্ধা-৩ আসনের ভোট হবে ২৭ জানুয়ারি। গেজেটের ২৯৮ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ২৫৭টি, জাতীয় পার্টি ২২টি, বিএনপি ৮টি, ওয়ার্কার্স পার্টি ৩টি, জাসদ ২টি, গণফোরাম ১টি, বিকল্পধারা ২টি, তরিকত ফেডারেশন ১টি, জেপি ১টি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৩টি আসনে জিতেছে। বিদ্যমান আইন অনুযায়ী, সরাসরি ভোটে জয়ী দলগুলোর আসন সংখ্যার অনুপাতে নারী আসন বণ্টন করা হয়। আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে এবার আওয়ামী লীগ ৪৩টি, জাতীয় পার্টি ৪টি, বিএনপি ১টি, ওয়ার্কার্স পার্টি ১টি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জোটভুক্ত হয়ে ১টি সংরক্ষিত আসন পেতে পারে। এ নির্বাচনের ভোটের জন্য একটি দিন রাখা হলেও ফল জানা যায় তার আগেই। ৫০টি সংরক্ষিত নারী আসনের বিপরীতে দল ও জোটগতভাবে সমান সংখ্যক প্রার্থী মনোনয়ন দেয়া হবে বলে প্রত্যাহারের সময়সীমা পার হওয়ার দিনই তাদের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হতে পারে।
ইসি সচিব বলেন, একাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে আগামী ৩০ জানুয়ারি। কাজ দ্রুত শেষ হলে এ অধিবেশনেই সংরক্ষিত নারী সাংসদরা যোগ দেওয়ার সুযোগ পেতে পারেন। এছাড়া সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া কিশোরগঞ্জ-১ আসনের তফসিলও শিগগিরই ঘোষণা করা হবে। সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের নামে গেজেটও করা হয়েছে। কিন্তু ৩ জানুয়ারি তিনি মারা যান। সংসদ সচিবালয় এ নিয়ে (তার মৃত্যুর) নোটিফিকেশন করলেই আমরা তফসিল করব।
৫ ধাপে উপজেলা নির্বাচন,মার্চে শুরু
হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন,এবার পাঁচ ধাপে উপজেলা পরিষদ নিবাচন হবে। আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে। তিনি বলেন, এসএসসি, এইচএসসি পরীক্ষা ও রমজান মাসের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে মার্চের প্রথম সপ্তাহ থেকে ধাপে ধাপে ভোট শুরু করা হবে। এ লক্ষ্যে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে তফসিল ঘোষণা করবে ইসি। বাংলাদেশে বর্তমানে ৪৯২টি উপজেলা পরিষদ রয়েছে। সর্বশেষ ২০১৪ সালের মার্চ- মে মাসে ছয় ধাপে এর অধিকাংশগুলোতে ভোট হয়েছিল। আইনে মেয়াদ শেষের পূর্ববর্তী ১৮০ দিনের মধ্যে ভোট করার বাধ্যবাধকতা থাকায় এই নির্বাচন করতে হচ্ছে। ১৯৮৫ সালে উপজেলা পরিষদ চালু হওয়ার পর ১৯৯০ ও ২০০৯ সালে একদিনেই ভোট হয়েছিল। ২০১৪ সালে ছয় ধাপে ভোট করেছিল তৎকালীন ইসি। সেই ধারা বজায় রেখে এবার বিভাগওয়ারি ভোট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। সেক্ষেত্রে আট বিভাগের ভোট হবে চার দিনে,অর্থাৎ এক দিনে দুটি বিভাগে ভোট হবে। বাকি যেগুলো থাকবে, সেগুলোতে ভোট হবে পঞ্চম ধাপে।
ইসি সচিব বলেন, আট বিভাগের উপজেলাগুলোকে চার দিনে চার ধাপে ভোট করা হবে। বাকিগুলোর মেয়াদউত্তীর্ণ কবে হচ্ছে তা বিবেচনায় নিয়ে আরেকটি ধাপে ভোট শেষ করা হবে। সেক্ষেত্রে ৫ ধাপে ভোট করা হচ্ছে। উপজেলা ভোটেও ব্যবহার হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন। ইসি সচিব বলেন, জেলার সদর উপজেলায় পুরোপুরি ইভিএম ব্যবহার করা হবে। আগের উপজেলা নির্বাচন নির্দলীয়ভাবে হলেও আইনটি তার পরে সংশোধন হওয়ায় এবার দলীয় প্রতীকে পূর্ণাঙ্গ নির্বাচন হবে।
তবে এর আগে ২০১৭ সালের মার্চে মেয়াদোত্তীর্ণ তিনটি উপজেলায় দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হয়েছিল। দশম সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিলেও বিএনপি পরে নির্দলীয় উপজেলা ভোটে অংশ নিয়েছিল। ২০১৪ সালের ওই নির্বাচনের প্রথম তিন পর্বে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ীদের মধ্যে সংখ্যায় বিএনপি এগিয়ে ছিল। তবে পরের তিন পর্বে তাদের ছাপিয়ে যায় আওয়ামী লীগ সমর্থিতরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: উপজেলা পরিষদ নির্বাচন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ