নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
দর্শকরাই তো মাঠের প্রাণ। প্রতিদ্বন্দ্বিতামুলক যে কোন ম্যাচে গ্যালারিতে যখন দর্শক উপস্থিতি থাকে না, ভক্তরা যখন মাঠ বিমুখ হন, গ্যালারি তখন কাঁদে। মুখ ফিরিয়ে নেয়া দর্শকদের প্রতি উদাত্ত আহবান জানায়-‘তোমরা এসো, আমাতে বস, আর আমাকে পূর্ণ কর!’ বিপিএলের গেল ৮ ম্যাচে ঠিক এভাবেই হয়তো নিরবে কেঁদেছে শের-ই-বাংলার গ্যালারি। কিন্তু গতকাল ভোজবাজির মতো বদলে গেল সেই চিত্র। গেল ৭ দিনের অবিরাম কান্না থামিয়ে আজ হেসেছে হোম অব ক্রিকেট। দর্শকদের সরব উপস্থিতিতে কানায় কানায় পূর্ণ স্টেডিয়ামের ৭টি গ্যালারি।
শুনতে খারাপ শোনালেও এটাই সত্যি যে বিপিএল মাঠে গড়ানোর প্রায় সপ্তাহ খানেক পর এই প্রথম মনে হচ্ছে সত্যিকার অর্থেই বিপিএল হচ্ছে। ঢাকা ডায়নামাইটস ও রংপুর রাইডার্সের মধ্যকার ম্যাচ থাকায় সকাল থেকেই মাঠের বাইরে দু’ দলের সমর্থকদের ঢল নামে। দুপুর ২টায় খেলা শুরু হওয়ার সাথে সাথে পরিপূর্ণ হতে থাকে গ্যালারি। একে তো সাপ্তাহিক ছুটি তার ওপর আবার মাশরাফি-সাকিবের লড়াই। কাজেই সুযোগটি বোধ হয় কেউই মিস করতে চাননি।
একদিকে মাশরাফি, গেইল, রাইলি, রুশো, রবি বোপারা; অন্য দিকে সাকিব আল হাসান, হযরতউল্লাহ জাজাই, সুনীল নারাইন, কাইরন পোলর্ড। সন্দেহাতীতভাবেই সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবারের ম্যাচটি ‘ক্ল্যাশ অব দ্য টাইটান্স’র খ্যাতি পেয়ে গেছে। সেই ম্যাচের উত্তাপ গ্যালারিতে বসে নিতে দেখতে সকাল ৬টা থেকে শের-ই-বাংলার ১ নাম্বার বুথে টিকিটের জন্য দাঁড়িয়েছে ভক্তরা। তাতে লাভের লাভ অবশ্য কিছুই হয়নি। দুপুর ২টায় ম্যাচ শুরু পর্যন্ত টিকিট হাতে গ্যালারিতে ঢুকতে পারেননি কেউই। পুরো স্টেডিয়াম ঘুরে এমন একজন দর্শক পাওয়া গেল না, যিনি বুথ থেকে টিকিট সংগ্রহ করতে পেরেছেন। লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। বুথে গিয়ে চিৎকার করেছেন, বিক্ষোভ করেছেন, এমনকি ‘বিপিএল বন্ধ, বিপিএল বন্ধ! ¯েø্যাগানও দিয়েছেন। তাতে আখেরে টিকিট নামক সোনার হরিণের দেখা মেলেনি। বুথ থেকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে, টিকিটি বিক্রি শেষ।
দর্শক খরায় গেল ৮ ম্যাচে ২ হাজার টাকার টিকিট ৩০০ টাকা দামেও বিক্রি হয়েছে। পক্ষান্তরে গতকালের সেই টিকিটেরই গগন চুম্বি দাম। ২০০ টাকার টিকিট বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার টাকায়। তাতেও সমস্যা নেই। কোন অভিযোগ নেই কারো। দাম যতই হোক না কেন টিকিট চাই। কিন্তু কই? সবই তো শেষ।
আর যারা পেয়েছেন, নিজেদের মহাভাগ্যবান মানছেন। ‘বিগ ম্যাচ’টির উত্তাপ সরাসরি গ্যালারি থেকে নিতে নিজ নিজ দলের জার্সি পরে নানান রঙে সেজে গ্যালারিতে এসেছে। প্রতিটি চার-ছক্কায় আর উইকেট যাওয়ার সময় তাদের চিৎকার আর আনন্দ-উল্লাসে প্রকম্পিত মিরপুরের আকাশ-বাতাস। প্রত্যেক দলের সমর্থকই সাথে করে ঢোল-বাদ্য বাজনা নিয়ে এসেছে। ছোট বড় দলীয় পতাকাতেও ছেয়ে গেছে পুরো গ্যালারি।
এই দর্শকদের ভিড়ে চেনা মুখ সাকিবপতœী উম্মে আহমেদ শিশির। ভক্তদের মতো ব্যাটে বলে সাকিবের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে হাত তালি দিয়ে প্রেরণা যুগিয়ে গেছেন শুরু থেকেই। শুধু সাকিব নয়, ঢাকার যে কোন বোলার-ব্যাটসম্যানের কৃতিত্বই তার মুখে এক চিলতে হাসির উপলক্ষ্য এনে দিয়েছে।
দর্শকরাই মাঠের প্রাণ। দর্শকবিহীন ম্যাচ যে কোন হাইভোল্টেজ একটি ম্যাচকেও নিষ্প্রাণ করে তোলে। সেই দৃশ্য বদলে রংপুর-ঢাকার হাইভোল্টেজ ম্যাচের আমেজ পুরোটাই পাওয়া গেল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।