নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ইনিংসের দ্বিতীয় বলটি যখন মিড উইকেটে ঠেলে ১ রান নিলেন মোহাম্মদ নাঈম। গ্যালারী তখন উল্লাসে মেতে ওঠে। যেন সিঙ্গেল নয়, বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন নাঈম। শেষবার গ্যালারীতে এমন গর্জন কবে দেখেছে টাইগাররা? অঙ্কের হিসেবে ৬১৮ দিন আগে। লম্বা সময় পর মাঠে ফিরা দর্শকদের উচ্ছ্বাস একটু বেশিই হবে। হলোও তাই। বিপুল উৎসাহের মধ্য নিয়েই মাঠে ফিরলেন সমর্থকরা। রীতিমতো নেচে-গেয়ে মাঠে ঢুকেছেন। পরেছেন বাংলাদেশের জার্সি। হাতে দেশের পতাকা। শরীরেও আঁকা রয়েছে। কারো গালে, কারো হাতে। কারো হাতে প্ল্যাকার্ড।
গতকাল বাংলাদেশ-পাকিস্তান তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটি শুরু হয় বেলায় ২টায়। কিন্তু সকাল থেকেই মিরপুরের চিত্র ছিল উৎসব মুখর। আগের দিন যারা টিকেট সংগ্রহ করতে পারেননি, তারা চেষ্টা করছেন টিকেট সংগ্রহের। ১১টা থেকেই গেট পূর্ণ হতে থাকে। ১২টা দিকে তো দেখা গেল লম্বা লাইন। দাঁড়িয়ে গেট খোলার অপেক্ষা। অবশেষে গেট খোলা হলো। সময় তখন সাড়ে ১২টার মতো। তখনই ‘বাংলাদেশ বাংলাদেশ’ গর্জনে মাতালেন সমর্থকরা। মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামের প্রতিটি গেটের অবস্থাই তখন এমন।
১ নম্বর গেট দিয়ে শুরুতেই দেখা গেল এক নারী সমর্থককে। এসেছেন তার স্বামীর সঙ্গে। শামিমা নামের সে নারী খেলা দেখার উচ্ছ্বাসের চেয়ে আক্ষেপই করলেন বেশি, ‘মাশরাফি নাই, সাকিব নাই, মুশফিক নাই। কিন্তু বাংলাদেশের খেলা। তাই বসে থাকতে পারলাম না। চলে এলাম।’ জার্সি পরে মাথায় বাংলাদেশের পতাকা ও হাতে বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে একটি পর ঢুকলেন জুনায়েদ নামের এক শিক্ষার্থী। বয়সের কারণেই কি-না, সাম্প্রতিক বাস্তবতা ছাপিয়ে অতিউচ্ছ্বাসই প্রকাশ পেল তার কণ্ঠে, ‘অনেকদিন পর বাংলাদেশের জন্য গলা ফাটাতে পারবো, ভাবতেই খুব ভালো লাগছে। তাই তর সইছিল না। আগেই চলে এসেছিলাম এখানে।’
কিন্তু বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সময়ের পারফরম্যান্স আশা জাগানিয়া নয়। কিন্তু তারপরও কেন মাঠে। দুই আর্মি সদস্য রাব্বি ও রবিউল জানালেন, ‘বাংলাদেশের খেলা অন্যরকম অনুভূতি। আর সবসময় ভালো খেলবে এমন কোনো কথা নেই। এক দিন ভালো খেলেছে এক দিন ভালো খেলবে। আমরা সবসময়ই দেশকে সমর্থন করি।’
শুধু বাংলাদেশি দর্শকই নন, কেউ কেউ এসেছেন পাকিস্তান থেকে। এমনকি কিছু ভারতীয়কেও দেখা গেল। নারায়ণগঞ্জের এক গার্মেন্টসে কাজ ৮ জন পাকিস্তানি আসেন পাকিস্তানের পতাকা নিয়ে। জাভেদ নামের একজন জানালেন, ‘আমরা এখানেই থাকি। নারায়ণগঞ্জে। সেখানে আমরা কাজ করি। বাংলাদেশ-পাকিস্তানের খেলা, তাই খেলা দেখতে এসেছি। আমরা চাই ভালো একটি ম্যাচ হোক। পাকিস্তান জিতলে খুশি হবো। তবে বাংলাদেশ জিতলেও আমরা খুশি। আমরা এসেছি মজা করতে।’ জামির নামের এক ভারতীয় শিক্ষার্থী পড়েন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এসেছেন বাংলাদেশ-পাকিস্তানের ম্যাচ দেখতে। স্টেডিয়ামে ঢোকার অপেক্ষায় থাকা এ শিক্ষার্থীরও প্রত্যাশা একটি ভালো ম্যাচের, ‘আমাদের কোনো সমর্থন নেই। এসেছি উপভোগ করতে।’
বাংলাদেশের ম্যাচ এলেই পতাকা-জার্সি নিয়ে রাস্তায় নামেন অনেক ফেরিওয়ালা। অনেকদিন পর ফিরেছেন তারাও, বেচা-বিক্রিও অনেক ভালো। ইদ্রিস নামের একজন বললেন, ‘এটা আমার মূল কাজ নয়। আমি ছোটখাটো ব্যবসায় করি। তবে খেলা হলেই মাঠে চলে আসি। অনেকদিন পর মাঠে আসতে পেরে ভালো লাগছে। সবাই আগ্রহ নিয়ে কিনছে। বিক্রিও খুবই ভালো।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।