পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এনআরসি নিয়ে চলমান অসন্তোষ আর বিক্ষোভের মধ্যেই আসামের সবচেয়ে বড় ছাত্র সংস্থা আসু আগামীকাল মঙ্গলবার ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। ১১ ঘণ্টার ধর্মঘটে সমর্থন জানিয়েছে উত্তর-পূর্ব ভারতের বাকি ছাত্র সংস্থা ও অন্যান্য ছাত্রসংগঠন। আজ সোমবার যৌথ সংসদিয় কমিটি অনুমোদিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলটি সংসদে পাস হবার কথা রয়েছে। এজন্য, এদিন আসাম জুড়ে পালিত হবে ধিক্কার দিবস।
দু’দিন আগে আসামের শিলচরে সভা করতে এসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলে গিয়েছেন, প্রতিবেশি দেশগুলো থেকে আসা সংখ্যালঘু অমুসলিমদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে আনা নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল, ২০১৬ সংসদে পাস করানো হবে। প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণার পরই আসামের রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। ক্ষুব্ধ উত্তরপূর্ব ভারতের অন্য রাজ্যগুলির ছাত্ররাও। তাদের আশঙ্কা, বিলটি পাস হলে তাদের কৃষ্টি-সংস্কৃতি বিদেশিদের হাতে লুণ্ঠিত হবে। সর্বনাশ হবে অসমিয়া জাতির। আর তাই বহিরাগত হিন্দুদের নাগরিকত্ব দিতে আইন সংশোধনী চেষ্টার প্রতিবাদে। লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি’র আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করতে শুক্রবার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে আসেন মোদি। সেখানে নাগরিকত্ব থেকে বাদ পড়ার ভয়ে যারা আতঙ্কিত, তাদের আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, প্রস্তাবিত আইনটি জাতীয় সংসদে অনুমোদন করানোর জন্য তার সরকার কাজ করছে। বিলটি কারো সুবিধার জন্য নয় বরং অবিচার এবং অতীতের অনেক ভুল কাজের প্রায়শ্চিত্ত।
শনিবার আসামের বিভিন্ন স্থানে নাগরিকত্ব বিলের ওপর বিক্ষোভ শুরু হয়। এমনকি রাজ্যের স্বার্থ রক্ষায় বিলের বিরোধিতা করবেন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোওয়ালের এমন আশ্বাসের পরেও নিম্ন আসাম ও ডিব্রুগড়ায় মোদির কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়।
আসুর উপদেষ্ট সমুজ্জল ভট্টাচার্য্য বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বিজেপি সরকার বাংলাদেশিদের সুরক্ষিত রাখার চেষ্টা করছে। তবে আসাম চুক্তি বিরোধী কোনও পদক্ষেপ আসামবাসী মানবেন না বলে তিনি হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, ১০ বছরের ব্যবধানে আসু ফের বনধ ডাকতে বাধ্য হয়েছে। এর পাশাপাশি আসামের বুদ্ধিজীবীরা ডাক দিয়েছেন ‘আসাম বাঁচাও’ আন্দোলনের। সেই আন্দোলনকে পুরোপুরি সমর্থন জানিয়েছে আসাম প্রদেশ কংগ্রেস।
এদিকে, সনোওয়াল শনিবার জনগণকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন, আমি আসামের মুখ্যমন্ত্রী এবং আমাকে বিশ্বাস করে ব্রহ্মপুত্র ও বারাক দুই পাড়ের জনগণের স্বার্থ রক্ষার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। জনগণকে উচিত নয় সরকারের অভিপ্রায়কে সন্দেহ করা। তিনি বলেন, কারণ রাজ্য সরকার তাদের স্বার্থে ক্ষতি করতে কিছু করবে না। আমাদের স্বার্থে যাতে আঘাত না আসে সেটা নিশ্চিতে আমি সর্বান্তক চেষ্টা করব।
কেএমএসএস নেতা আখিল গগৈই সাংবাদিকদের জানান, শনিবার সকালে রাজধানীতে কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি (কেএমএসএস) এর নেতৃত্বে প্রায় ৭০ টি প্রতিষ্ঠান প্রতিবাদ সমাবেশ করে। তাদের পরিকল্পনা ছিল আসাম গণ পরিষদের (এজিপি) সদর দফতরে যেয়ে বিজেপির সাথে জোট ভেঙ্গে দেয়ার দাবী জানানো, কিন্তু পুলিশ তাদের বাধা দেয় বলে। তিনি বলেন, ‘দিল্লি থেকে একজন নেতা এসে আমাদের অস্তিত্বের প্রতি হুমকি দেবেন, আর মুখ্যমন্ত্রী এবং অন্যান্য বিজেপির নেতারা তাতে হাততালি দেবেন এটা আমরা সহ্য করব না।
উল্লেখ্য, নাগরিকত্ব আইন, ১৯৫৫ সংশোধন করে প্রতিবেশী তিন মুসলিম প্রধান দেশ আফগানিস্তানে, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পারসী ও খ্রিস্টান নাগরিকদের ছয় বছর পর ভারতে বসবাসের পর জাতীয়তা প্রদানের জন্য প্রস্তাব দিয়ে নাগরিকত্ব (সংশোধন) বিল, ২০১৬ আনা হয়। রাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি আদিবাসী সংগঠন এই বিল বিরোধিতা করছে। কারণ তারা বিশ্বাস করে যে, এটি তাদের সাংস্কৃতিক পরিচয় ক্ষতিগ্রস্ত করবে। সূত্র: টিওআই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।