পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে নজিরবিহীন ভোট ডাকাতি আখ্যা দিয়ে তা বাতিল ও পুনরায় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে ৮টি বাম দলের সমন্বয়ে গঠিত বাম গণতান্ত্রিক জোট। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মুখে কালো কাপড় বেঁধে অবস্থান কর্মসূচি ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এ দাবি জানান জোটের নেতারা। নেতারা বলেন, গোটা দেশকে অবরুদ্ধ করে কোটি কোটি ভোটারের ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে ফ্যাসিবাদী কায়দায়। ভোটের নামে যে জবরদস্তিমূলক প্রহসনের নির্বাচন মঞ্চস্থ করা হলো, বাম গণতান্ত্রিক জোট এই নির্বাচন ও নির্বাচনের ফলাফলকে প্রত্যাখ্যান করছে।
অবস্থান কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির নেতা মোশরেফা মিশু প্রমুখ। কর্মসূচিতে বাম জোটের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সিপিবি নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স। মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, প্রতিদ্ব›িদ্বতামূলক নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ভেঙে দিয়ে গোটা নির্বাচনকে ব্যর্থ করে দেওয়া হয়েছে। আশঙ্কানুযায়ী নির্বাচন সরকারের ছকেই বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ভোর থেকে দেশব্যাপী ভোটকেন্দ্র দখল, প্রকাশ্যে জালিয়াতি, ব্যালট পেপারে প্রকাশ্যে নৌকা মার্কায় সিল মারতে বাধ্য করা ও বিরোধী ভোটারদের জোর করে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়ার মতো নানা ঘটনায় সমগ্র নির্বাচনকে পুরোপুরি অর্থহীন ও হাস্যকর করে তোলা হয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে এ সময় বলা হয়, এই নির্বাচন প্রমাণ করে দলীয় সরকারের অধীনে বাংলাদেশের ন্যুনতম গণতান্ত্রিক পরিবেশে অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের যে কোনো অবকাশই নেই, তা আরেকবার প্রমাণ হলো। তাই এই নির্বাচনের ফলাফল গ্রহণযোগ্য হবে না। নির্বাচনে জনগণের মতামতের কোনো প্রতিফলন ঘটেনি। আরও বলা হয় গত ৩০ ডিসেম্বর অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশবাসীকে প্রতিনিধি নির্বাচনের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। ভুয়া ভোটে যাদের নির্বাচিত বলে ঘোষণা করা হয়েছে, তাদের প্রায় সবাইকে জনগণ ভুয়া প্রতিনিধি হিসেবে বিবেচিত করছে।
অবস্থান কর্মসূচি থেকে জানানো হয়, নির্বাচনের বিভিন্ন অনিয়ম তুলে ধরতে আগামী ১১ জানুয়ারি জাতীয় প্রেসক্লাবে বাম গণতান্ত্রিক জোটের ১৩১ প্রার্থীকে নিয়ে গণশুনানি হবে। এছাছা প্রতিবাদ কর্মসূচিতে খুলনায় সাংবাদিক গ্রেফতার ও নোয়াখালীতে গণধর্ষণসহ নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার প্রতিবাদ জানানো হয়।
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে অভিযোগ করে মুখে কালো কাপড় বেঁধে রাজপথে দাঁড়িয়েছিলেন বামপন্থী বিভিন্ন সংগঠনের চার প্রার্থী। এ সময় তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টিসহ বিভিন্ন বামদলের নেতাকর্মীরাও যোগ দেন। গতকাল (বৃহস্পতিবার) নগরীর জামালখানে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা। কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ‘বাম গণতান্ত্রিক জোট’ এই কর্মসূচি পালন করেছে।
এ সময় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক অশোক সাহা বলেন, বাংলাদেশে নির্বাচনের নামে যা হয়েছে, সেটা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা এবং প্রহসন বলে মনে করি। ভোটের আগের রাতে ব্যালট বাক্স ভর্তি করে রাখা হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে জোর করে কেন্দ্র দখল ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছে।
নির্বাচনের ফলাফল ও অবস্থা দেখেই বোঝা যাচ্ছে দলীয় সরকারের অধীনে কোন নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। অবিলম্বে জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাতিল করে নতুন নির্বাচন দিতে হবে। জোট- মহাজোটের বাইরে এসে বাম বিকল্প শক্তি গড়ে তোলার আহবান জানিয়েছেন অশোক সাহা। অবস্থান কর্মসূচিতে বাম গণতান্ত্রিক জোটের প্রার্থীদের মধ্যে চট্টগ্রাম-১৪ আসনের প্রার্থী আব্দুল নবী, চট্টগ্রাম-৯ আসনের প্রার্থী মৃণাল চৌধুরী, চট্টগ্রাম-৮ আসনের প্রার্থী সেহাব উদ্দিন সাইফু এবং চট্টগ্রাম-১১ আসনের প্রার্থী অপু দাশগুপ্ত উপস্থিত ছিলেন।
বগুড়া ব্যরো জানায়, বাম গণতান্ত্রিক জোট বগুড়া জেলার উদ্যোগে কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে গতকাল বগুড়া প্রেসক্লাবের সামনে নজিরবিহীন ভোট ডাকাতির নির্বাচন বাতিল, পুনঃনির্বাচনের দাবিতে মুখে কালো কাপড় বেঁধে অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়। অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাম গণতান্ত্রিক জোট বগুড়া জেলার সমন্বয়ক, বাসদ বগুড়া জেলার আহŸায়ক অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম পল্টু।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, গোটা দেশকে অবরুদ্ধ করে কোটি কোটি ভোটারদের ভোটাধিকার হরণ করে আরও একবার যে জবরদস্তীমূলক প্রহসনের নির্বাচন মঞ্চস্থ করা হলো বাম গণতান্ত্রিক জোট এই নির্বাচন ও নির্বাচনের ফলাফলকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছে। আগের রাতে ব্যালট বাক্সে ভর্তি করে রাখা নিরাপত্তার নামে নজিরবিহীন ভয়ভীতি ও আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠানের প্রতি নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা ও ন্যাক্কারজনক ভূমিকা, বাম জোটের একাধিক প্রর্থীসহ বিরোধী দলের প্রার্থী ও এজেন্টদের আটক, শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত, কেন্দ্র থেকে জোর করে বের করে দেওয়ায় দেশবাসীও এই নির্বাচনকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। প্রতিদ্ব›িদ্বতামূলক নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ভেঙে দিয়ে গোটা নির্বাচনকে ব্যর্থ করে দেওয়া হয়েছে।
ভোর থেকেই দেশব্যাপী ভোট কেন্দ্র দখল, প্রকাশ্য জালিয়াতি, ব্যালট পেপারে প্রকাশ্যে নৌকা মার্কার সিল মারতে বাধ্য করা, বিরোধী দলীয় ভোটারদের জোর করে ভোট কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া, কোথাও সকাল ১০টা থেকে ১২টার মধ্যে ব্যালট পেপার শেষ হয়ে যাওয়া প্রভৃতি অসংখ্য ঘটনার মধ্যে দিয়ে সমগ্র নির্বাচনকে পুরোপুরি অর্থহীন ও হাস্যকর করে তোলা হয়েছে। এই নির্বাচনে জনগণের মতামতের কোনো প্রতিফলন ঘটেনি। তাই নেতৃবৃন্দ পুনঃনির্বাচনের দাবি জানান।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিপিবি বগুড়া জেলা সভাপতি জিন্নাতুল ইসলাম, গণসংহতি আন্দোলন বগুড়া জেলা সমন্বয়ক আব্দুর রশিদ, বাসদ বগুড়া জেলা সদস্য সচিব সাইফুজ্জামান টুটুল, বাসদ (মার্ক্সবাদী) বগুড়া জেলা নেতা আমিনুল ইসলাম, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি বগুড়া জেলা নেতা শাহাদত হোসেন শান্ত। সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন বাম গণতান্ত্রিক জোট বগুড়া-৬ এর সংসদ সদস্য প্রার্থী আমিনুল ফরিদ এবং বগুড়া-৭ এর সংসদ সদস্য প্রার্থী শহিদুল ইসলাম, সিপিবি বগুড়া-৫ আসনের প্রার্থী সন্তোষ কুমার পাল, বাসদ (মার্ক্সবাদী) বগুড়া-৫ এর প্রার্থী রঞ্জন দে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।