পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শিক্ষা-দীক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে নারীর উপস্থিতি ও অগ্রগতি অনেক বেড়েছে। বেড়েছে নারীর ক্ষমতায়ন। একইভাবে বিশ্বের সাথে তালমিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশে নারীরা। ইতোমধ্যে অনেকে বিশ্বের কাছে রোল মডেল হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছেন। অথচ নারীর প্রতি প্রতি সহিংসতা ও নারী নির্যাতনের মাত্রা কমেনি এতটুকুও। রাজধানীসহ সারাদেশে নারী নির্যাতনের ঘটনা দিন দিন বেড়ে চলছে। গত এক বছরে সারাদেশে প্রায় ৪ হাজার নারী নির্যাতন ও সহিংসতার শিকার হয়েছেন। গত ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট দেওয়ায় নোয়াখালীর চরজুবলী ইউনিয়নের বাগ্যা গ্রামে এক গৃহবধূ (৩২) গণধর্ষণের শিকার হয়।
মানবাধিকার সংগঠনগুলোর ভাষ্য, আগের চেয়ে আইনের কড়াকড়ি কিছুটা বাড়ানো হলেও কোনভাবে নারীর প্রতি সহিংসতা ও নির্যাতন থামাতে পারেনি। বরং এ সংখ্যা প্রতি বছর বেড়ে চলেছে। আইনের শিথিলতা, পুরুষতান্ত্রিক মনোভাব, নারীকে মানুষ হিসেবে মূল্যায়িত না করাসহ সমাজের নানা বৈষম্যমূলক নীতি ও আচরণের কারণে নারী নির্যাতন ও নারীর প্রতি সহিংসতা বেড়ে চলছে।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের তথ্য মতে, ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত গত এক বছরে রাজধানীসহ সারাদেশে ৩ হাজার ৯১৮ জন নারী ও কন্যা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এ সংখ্যা গতবছরের তুলনায় অনেক বেড়েছে। পরিসংখ্যান মতে, ২০১৮ সালে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৯৪২টি। এর মধ্যে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১৮২ জন। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ৬৩ জনকে। এছাড়া ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে ১২৮ জনকে। একইসময়ে শ্লীলতাহানীর শিকার হয়েছেন ৭১ জন, যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ১৪৬ জন নারী ও কন্যা।
মহিলা পরিষদের তথ্যমতে, গত ১২ মাসে সারাদেশে এসিড সন্ত্রাসের শিকার হয়েছে ১৯ জন। এতে ৩ জনের মৃত্যু ঘটে। অগ্নিদগ্ধ হয়েছে ৭৩ জন যাতে মৃত্যু ঘটে ১৯ জনের। এ সময়ে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে ১৪৫টি। নারী ও শিশু পাচার হয়েছে ৪১ জন। পাচারের শিকার নারী ও শিশুর মধ্যে ১৫ জনকে বিভিন্ন পতিতালয়ে বিক্রি করা হয়।
পরিসংখ্যান মতে, ২০১৮ সালে ৪৮৮ জন নারী ও শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। এ সময় হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে ৩৯ জনকে। যৌতুকের জন্য নির্যাতনের শিকার হয়েছে ২১২ জন। এর মধ্যে যৌতুকের কারণে হত্যা করা হয়েছে ১০২ জনকে। এ সময়ে গৃহপরিচারিকা নির্যাতনের শিকার হয়েছে ৮৭ জন। এরমধ্যে হত্যা করা হয়েছে ৫৮ জনকে। এছাড়া নির্যাতনের কারণে ৪ গৃহকর্মী আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে। উত্ত্যক্ত করা হয়েছে ১৭১ জনকে। উত্ত্যক্তের কারণে অপমান সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে ১৪ জন। আর ফতোয়ার শিকার হয়েছে ১২ জন।
তথ্যমতে, ২০১৮ সালে বিভিন্ন নির্যাতনের কারণে ৩০৫ জন আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে। এ সময়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন আরও ১৮ জন। এছাড়া একইসমেয় আত্মহত্যায় প্ররোচনার শিকার হয়েছেন ৪৭ জন এবং ৩৭৭ জন নারী ও কন্যার রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে ।
এছাড়া একইসময়ে বাল্য বিয়ের ঘটনা ঘটেছে ১৯৩টি, এরমধ্যে ৫২ কন্যাশিশুর বাল্যবিবাহ সম্পন্ন হয়েছে। জোড়পূর্বক বিয়ের শিকার হয়েছেন ২১ জন। তবে এই সময়ে ১৪১টি বাল্য বিয়ে প্রতিরোধ করা গেছে। পুলিশী নির্যাতনের শিকার হয়েছে ৯ জন। শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ২৮১ জনকে। এছাড়া বিভিন্নভাবে ঘরে বাইরে আরও অনেক নারী ও কন্যা নির্যাতনের শিকার হয়েছে বলে পরিসংখ্যানে উল্লেখ করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।