Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মাছ সঙ্কটে শুঁটকি উৎপাদন ব্যাহত

চাটমোহর (পাবনা) থেকে আফতাব হোসেন | প্রকাশের সময় : ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

চলনবিল অঞ্চলের মাছকে কেন্দ্র করেই গড়ে ওঠা শুঁটকির চাতালগুলো এখন মৎস্যশূন্য। দেশি প্রজাতির মাছের অভাবে শুঁটকি উৎপাদন চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। মৎস্য ভান্ডার খ্যাত চলনবিলের চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুর, তাড়াশ উপজেলার বিস্তীর্ণ বিলের পানি এবার আগেই নেমে গেছে। গুমানী, চিকনাই, বড়াল ও করতোয়া নদীতে যে পরিমাণ পানি রয়েছে, তা আর কদিন পরেই শুকিয়ে যাবে। পানি নামার সাথে সাথে বিলের বিভিন্ন পয়েন্টে জেলেদের জালে ধরা পড়ত দেশীয় প্রজাতির মিঠা পানির মাছ টেংরা, পুটি, খলসে, বাতাসী, চেলা, মলা, টাকি, বাইম, শোল, গুতুম, বোয়াল, গজার, মাগুর, শিং, কৈসহ নানা প্রজাতির সুস্বাদু মাছ।

উত্তরবঙ্গের মধ্যে দেশীয় প্রজাতির মাছের শুটকি তৈরি অসংখ্য চাতাল চলনবিলে মূলত বৃষ্টিহীন আশ্বিন-কার্ত্তিক ও অগ্রহায়ণ মাস পর্যন্ত চালু থাকে। এ সব চাতালে টেংরা, পুটি, খলসে, বাতাসী, চেলা, মলা, ঢ়েলা, টাকি, গুতুম, চিংড়ি, টাকি ইত্যাদি মিঠা পানির সুস্বাদু মাছ শুঁটকি করা হয়। চলনবিলের শুঁটকির কদর রয়েছে দেশের বিভিন্ন স্থানে । এর মধ্যে দেশীয় প্রজাতির শুঁটকি সৈয়দপুর, রংপুর, দিনাজপুর, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ এমনকি বন্দরনগরী চট্টগ্রামেও উচ্চমূল্যে বিক্রি হয়ে থাকে। কিন্তু এবার পরিস্থিতি উল্টো। আশ্বিন মাসেই বিলের বেশির ভাগ পানি শুকিয়ে গেছে। এখন যে পরিমাণ পানি রয়েছে, তাতে মাছের দেখা নেই। দেশি মাছের চরম আকাল পড়েছে। এ মাছ আশ্বিন থেকে কার্ত্তিক মাস পর্যন্ত এত বেশি পাওয়া যেত যে, এ অঞ্চলে কাঁচা মাছের চাহিদা পূরণের পর উদ্বৃত্ত মাছ স্বল্পমূল্যে কিনে শুঁটকি তৈরি করে উচ্চমূল্যে বিক্রি করে অনেক শুঁটকি চাতালের মালিক লাখ লাখ টাকা উপার্জন করতেন।

স¤প্রতি চলনবিল অঞ্চলে যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় সকল ধরনের মাছই দেশের বিভিন্ন জেলায় চলে যাওয়ায় মাছের দাম বেড়ে গেছে। এ ছাড়া চলতি মৌসুমে বিলে সময়মতো পানি না আসায় এবং আগেই বিল পানিশূন্য হওয়ায় শুঁটকির চাতালে মাছের অভাব রয়েছে। এবার মাছের ব্যাপক আকাল। এলাকার শুঁটকির চাতাল ঘুরে দেখা গেছে, শুঁটকি তৈরির ভরা মৌসুমেও চাতালগুলো শুঁটকিশূন্য। তবে কিছু চাতালে টেংরা, পুটি, খলসে, বাতাসী, চেলা, মলা, ঢেলা, টাকি, গুতম, চিংড়ি, টাকিসহ নানা মাছ চাঁটাইয়ে শুকানোর জন্য ছিটিয়ে রাখা রয়েছে। শুঁটকি তৈরি কাজে নিয়োজিত শ্রমিক আরজিনা খাতন জানান, প্রতি তিন কেজি মাছে এক কেজি শুঁটকি হয়ে থাকে। যার বাজার মূল্যে প্রকারভেদে ৪৫০ থেকে ৮৫০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে এবার মাছের আকাল হওয়ায় বেশি দিন কাজ হবে না। শুঁটকি ব্যবসায়ীরা জানান, এবার মাছের ব্যাপক ঘাটতি থাকায় অনেকেই চাতাল স্থাপন করেননি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শুঁটকি

৭ নভেম্বর, ২০২১
১৯ ডিসেম্বর, ২০২০
১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০
২৭ জানুয়ারি, ২০১৮

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ